শীঘ্রই বৈদ্যুতিক চুল্লি কাজ শুরু করবে নাথুপাল শ্মশানে। কিন্তু গঙ্গার ভাঙনে খড়দহের এই শ্মশানের অস্তিত্বই সঙ্কটে পড়তে চলছে। যদিও খড়দহ পুরসভার দাবি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিছু বছর আগে কেএমডব্লিউএসএ রাসখোলা ভাসান ঘাট তৈরি করেছিল। ধীরে ধীরে যার অনেকটাই তলিয়েছে গঙ্গার গর্ভে। কেএমডব্লিউএসএ-র এক আধিকারিক জানান, গঙ্গা দিক পরিবর্তন করে ক্রমশ পাড় ভাঙতে থাকায় তলিয়ে গিয়েছে শ্মশানের পাশের রাসখোলা ভাসানঘাটটি। সেই বিপদসীমায় রয়েছে নাথুপাল শ্মশানটিও।
খড়দহ পুরসভার সূত্রে খবর, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আতঙ্কে উন্নয়ন থমকে থাকতে পারে না। এই শ্মশান আধুনিকীকরণের প্রস্তাব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিল। কেএমডি-এ থেকে বলা হয়েছিল ন্যূনতম পাঁচ কাঠা না হলে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো যাবে না। তাই জায়গার অভাবে আটকে গিয়েছিল কাজ। পরে শ্মশান লাগোয়া জমি কিনে নেয় পুরসভা। ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার এই প্রকল্পের ৮০ শতাংশ দিয়েছে রাজ্য মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতর। বাকি টাকা পুরসভার।
খড়দহ পুরসভার উপ-প্রধান শ্যামলকুমার দেব জানান, খড়দহবাসীর কাছে শ্মশানের আধুনিকীকরণ জরুরি ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় শ্মশানবাড়িটি করতে ৫৫ ফুট গভীর থেকে কংক্রিটের পাইলিং করা হয়েছে। সিভিল ওয়ার্ক প্রায় শেষ। বিদ্যুতের লাইনও এসে গিয়েছে। চুল্লি বসানোর কাজ চলছে। এক-দু’মাসের মধ্যেই শ্মশান সাধারণের ব্যবহারযোগ্য হবে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিশ-বাইশ বছর আগেও দিনে গড়ে পাঁচ-ছয়টি মৃতদেহ আসত। লোকালয়ের মধ্যে থাকায় সমস্যা হত খুব। বিভিন্ন সমস্যায় শবদাহের সংখ্যা ক্রমে তলানিতে ঠেকে। গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যানের শর্ত মেনে গঙ্গাতীরের শ্মশানঘাটগুলিতে বৈদুতিক চুল্লি লাগানোর কথা আগেই। স্থানাভাব এবং লোকসান দেখিয়ে আগের বোর্ড আধুনিকীকরণে পিছিয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে তৈরি হয়ে গিয়েছে দ্বিতল শ্মশানভবন। থাকবে দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লি, প্রতীক্ষালয়, বিশ্রামাগার, স্নানঘর। শ্মশানবাড়ির পাশেই গঙ্গা ঘেঁষে দূষণরোধক যন্ত্র বসিয়ে একটি কাঠের চুল্লি হচ্ছে। সৎকার করতে আসা পরিজনেরা যাতে শ্মশানেই প্রয়োজনীয় জিনিস পেয়ে যান সেই ব্যবস্থাও থাকছে। শবদাহ সংক্রান্ত জিনিস বিক্রির জন্য নীচের তলায় রাস্তার উপরে কয়েকটি দোকানঘর করা হয়েছে।
খড়দহ পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (জল) কাঞ্চনকুমার ঘোষ জানান, শ্মশানকে বাঁচাতে গঙ্গার ভাঙন রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। ঘাটের ধার ধরে সিট পাইলিং করা হবে। নাথুপালকে কেন্দ্র করে ৪০০ মিটার দীর্ঘ হবে এই পাইলিং। এর জন্য কেএমডব্লিউএসএ-কে দিয়ে ভেটিং করিয়ে ১০ কোটি টাকার ডিপিআর (ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট) জমা দেওয়া হয়েছে। ফাইল রাজ্য মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার্স দফতরে রয়েছে। আর্থিক অনুমোদন মিললেই টেন্ডার ডাকা হবে।
ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা কেএমডব্লিউএসএ-র এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ওখানে প্রায় ১৫ মিটার গভীর থেকে লোহার সিট দিয়ে পাইলিং হবে। তার উপরে ঢালাই করে চাতাল বাড়ানো হবে। এ ভাবে কি ভাঙনের হাত থেকে শ্মশানকে বাঁচানো যাবে? উত্তরে তিনি জানান,গঙ্গার ভাঙন রোধে এটা যথেষ্ট কি না এখনই বলা সম্ভব নয়। সেটা সময়েই বোঝা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy