Advertisement
E-Paper

রাস্তা খারাপ, দেগঙ্গার পঞ্চায়েতে ভাঙচুর-হামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল

পঞ্চায়েতের মধ্যে ঢুকে প্রধানকে হেনস্থা, সদস্যের স্বামীকে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় নাম জড়াল তৃণমূলের। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেগঙ্গার চাঁপাতলা এবং কলসুর পঞ্চায়েতে এই ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় থানার ওসি বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে দেগঙ্গার বিডিও মানসকুমার মণ্ডল সর্বদল বৈঠক ডেকে ঘটনার মীমাংসার চেষ্টা করেন। তৃণমূলের দাবি, উন্নয়ন না হওয়ায় একটি পঞ্চায়েতে স্কুলের ছাত্রেরা এবং অন্যটিতে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪৪
ভাঙচুরের পরে চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের দশা। —নিজস্ব চিত্র।

ভাঙচুরের পরে চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের দশা। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েতের মধ্যে ঢুকে প্রধানকে হেনস্থা, সদস্যের স্বামীকে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনায় নাম জড়াল তৃণমূলের।

সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেগঙ্গার চাঁপাতলা এবং কলসুর পঞ্চায়েতে এই ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় থানার ওসি বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে দেগঙ্গার বিডিও মানসকুমার মণ্ডল সর্বদল বৈঠক ডেকে ঘটনার মীমাংসার চেষ্টা করেন। তৃণমূলের দাবি, উন্নয়ন না হওয়ায় একটি পঞ্চায়েতে স্কুলের ছাত্রেরা এবং অন্যটিতে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখান। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। অন্য দিকে সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের লোকজন বহিরাগতদের সঙ্গে এনে প্রধানকে হেনস্থা করেছে। মারধর করেছে। ভাঙচুর চালিয়েছে। পুলিশ জানায়, উভয়পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দেগঙ্গার গোঁসাইপুর থেকে পারুলিয়া হয়ে গাংনিয়ার পূর্বপাড়া চার কিলোমিটার, জুয়ারিয়া হয়ে গাংনিয়ার পশ্চিমপাড়া তিন কিলোমিটার এবং টেয়াডাঙা হয়ে হামাদামা বাজার পাঁচ কিলোমিটার এই তিনটি রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ওই রাস্তাগুলি। রাস্তা সারাইয়ের জন্য বার বার বলা হলেও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ উদাসীন। এ সবেরই প্রতিবাদ জানাতে সম্প্রতি দেগঙ্গার চাঁপাতলা পঞ্চায়েত ভবনের দরজার সাটার বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক এবং শিক্ষকেরা। একই দাবিতে তৃণমূলের পক্ষে কংগ্রেস-সিপিএম পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতে আরও একবার দরজায় তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। সে সময়ে পঞ্চায়েত প্রধান এক মাসের মধ্যে রাস্তা সারাইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও রাস্তার কাজ শুরু না হওয়ায় এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ জনতা পঞ্চায়েত ভবনে ঢুকে বিক্ষোভ দেখায়, ভাঙচুরও করে। পুলিশ জানায়, সে সময়ে চাঁপাতলা পঞ্চায়েত থেকে ছাত্রছাত্রীদের শংসাপত্র দেওয়ার কাজ চলছিল। সে সময়ে হামলা চলে।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত লোকজন তৃণমূল-আশ্রিত বলে দাবি করে সিপিএম নেতা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, “তৃণমূল চেয়েছিল, হুমকি দিয়ে আমাদের সদস্যদের ভাঙাতে। তা না পারায় পঞ্চায়েত ভবনে ঢুকে ভাঙচুর করেছে।” অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা হুমায়ুন রেজা চৌধুরী বলেন, “সিপিএম-কংগ্রেস যৌথ ভাবে বোর্ড চালানোয় নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধিয়েছে। তাতে এলাকার উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ। রাস্তাঘাটের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ছাত্রছাত্রীরা পর্যন্ত পঞ্চায়েতে তালা ঝোলাতে বাধ্য হচ্ছে। এ দিন রাস্তার দাবিতে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ দেখায়। সে সময়ে নিজেদের মধ্যে গণ্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে সিপিএমের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোকজন ভাঙচুর চালিয়েছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।”

রাস্তাগুলির অবস্থা যে বেহাল, সে কথা কার্যত স্বীকার করেছেন চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের প্রধান নমিতা দাস। তিনি বলেন, “মেরামতির জন্য টেন্ডারের কাজ হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়ে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন ঠিকাদারেরা কাজ শুরু করতে দেরি করছে, বুঝতে পারছি না। দ্রুত যাতে কাজ শুরু হয়, তা দেখা হচ্ছে। তবে যে ভাবে ভাঙচুর চালানো হল, তা অত্যন্ত অন্যায়। আমরা এই ঘটনার তিব্র প্রতিবাদ করছি।”

পুলিশ জানায়, বেলা ২টো নাগাদ চাঁপাতলায় জনতা মোটামুটি শান্ত হওয়ার পরে বেলা ৩টে নাগাদ এলাকার উন্নয়নের দাবিতে সিপিএম পরিচালিত কলসুর পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। বিক্ষোভ চলাকালীন কয়েক জন উত্তেজিত হয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। শুরু হয় গালিগালাজ, ধ্বস্তাধস্তি। বিক্ষোভ চলে প্রায় ৫টা পর্যন্ত। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতির সামাল দেয়। কলসুর পঞ্চায়েতে সিপিএম প্রধান সবিতা চৌধুরী বলেন, “তৃণমূলের লোকজন বিক্ষোভের নামে ভিতরে ঢুকে গালিগালাজ শুরু করে। প্রতিবাদ করলে আমাকে হেনস্থা করা হয়। আমাদের এক সদস্যার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে। ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে।”

এ বিষয়ে তৃণমূল নেতা দ্রুতিরঞ্জন গাইন বলেন, “সিপিএম ক্ষমতায় আসার পর থেকে এলাকার উন্নয়ন স্তব্ধ। যেটুকু হচ্ছে, তা আমাদের সদস্যদের না জানিয়েই করা হচ্ছে। সে জন্য এলাকার মানুষের কাছে কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে। বারে বারে প্রতিবাদ করে কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়েই অবরোধ-বিক্ষোভে সামিল হতে হয়েছে।” মারধর, হেনস্থার ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ জড়িত নন বলেই দাবি তৃণমূল নেতার।

এ দিনই দুপুরে সন্দেশখালি পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সন্দেশখালি ২ ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদ এবং তৃণমূল। অভিযোগ অসত্য বলে দাবি করেছেন প্রধান।

damaged road deganga panchayat pradhan attacked tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy