নির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং ক্ষেত্র ভাগ করে টিকাকরণের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকার।
নির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং ক্ষেত্র ভাগ করে টিকাকরণের কাজ শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। একটা সময় দৈনিক ১০-১৪ লক্ষ টিকা রাজ্যে দেওয়াও হয়েছে। প্রশাসনের অন্দরের খবর, আগে টিকা জোগানে সমস্যা থাকলেও এখন তা পর্যাপ্তই রয়েছে। কিন্তু তার পরেও রাজ্যে দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা নিতে বকেয়া মানুষের সংখ্যা ৪২ লক্ষেরও বেশি। টিকা-পরিকল্পনায় শহুরে ঘিঞ্জি এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল সরকার। অথচ সরকারি তথ্যই বলছে, কলকাতা শহরে বকেয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
কোভিড টিকার দ্বিতীয় ডোজ়ের সময় পেরিয়ে গিয়েছে, অথচ মানুষ তা নিতে চাইছেন না! জেলায় জেলায় এমন জনসংখ্যা দেখে তাজ্জব প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, গোটা রাজ্যে কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন টিকা প্রাপকদের দ্বিতীয় ডোজ়ের চূড়ান্ত সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে, এমন জনসংখ্যা প্রায় ১৮.০৯ লক্ষ। আবার দ্বিতীয় ডোজ়ের জন্য ন্যূনতম এবং সর্বোচ্চ-দু’টি সময়ই পেরিয়ে গিয়েছে, রাজ্যে এমন টিকাপ্রাপকদের মিলিত সংখ্যা ৪২.৪৫ লক্ষ! স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ়ের পরে ১২-১৬ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ় নিতে হয়। ১২ সপ্তাহ হয়ে গেলে তাকে ‘ডিউ’ এবং ১৬ সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়াকে ‘ওভারডিউ’ বলা হয়। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে তা ২৮-৪২ দিন।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে ‘ওভারডিউ’ হয়ে যাওয়া জনসংখ্যা প্রায় ৪.৮০ লক্ষ। এই টিকার ‘ডিউ’ এবং ‘ওভারডিউ’ ধরলে রাজ্যে তা প্রায় ৬.৯৮ লক্ষ। কোভিশিল্ডে দ্বিতীয় ডোজ়ের সর্বোচ্চ সময়সীমা বা ‘ওভারডিউ’ হয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৩.২৯ লক্ষ। এই টিকায় ‘ডিউ’ এবং ‘ওভারডিউ’-র মিলিত সংখ্যা রাজ্যে প্রায় ৩৫.৪৭ লক্ষ। দু’টি টিকার ‘ডিউ’ এবং ‘ওভারডিউ’-র আওতায় রয়েছেন রাজ্যের প্রায় ৪২.৪৫ লক্ষ মানুষ!
১৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যের ২৮টি জেলা এবং স্বাস্থ্য জেলার যে তথ্য রয়েছে, তাতে ছ’টি জেলায় বকেয়ার সংখ্যা ২ লক্ষেরও বেশি (বিস্তারিত সারণীতে)। এর মধ্যে কলকাতা ছাড়াও শহর লাগোয়া উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও রয়েছে। রাজ্যে দৈনিক কোভিড সংক্রমণের যে সংখ্যা, তাতেও কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনা এগিয়ে রয়েছে। বাকি ১৪টা জেলায় বকেয়ার সংখ্যা ২ লক্ষের নীচে থাকলেও তা এক লক্ষের বেশি। ৮টি জেলা এবং স্বাস্থ্য জেলায় বকেয়ার সংখ্যা এক লক্ষের নীচে।
তাই শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী স্বাস্থ্যকর্তা এবং জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে এই বকেয়া থাকার কারণ আশাকর্মীদের মাধ্যমে খুঁজতে বলেছেন। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই ধারণা, প্রথম ডোজ়ের পরে অনেকে ভিন্ রাজ্যে ফিরে যাওয়ায় এই সমস্যা। আবার টিকা নিতে আগ্রহও হারাতে পারেন অনেকে। ফলে প্রকৃত কারণ খুঁজে সেই মতো পদক্ষেপ করবে রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy