Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সিঙ্গুর দেখতে ভিড়, ব্যাঘাত কাজে

সংখ্যাটা কখনও ৬০-৭০। কখনও আরও বেশি! শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের অধিগৃহীত জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা ইস্তক রোজ বহিরাগতদের ভিড় লেগে রয়েছে।

সিঙ্গুরের সানাপাড়ায় জাতীয় সড়কের বর্ধমানমুখী লেনের উপর তৈরি হচ্ছে সিঙ্গুর উৎসবের মঞ্চ। শনিবার দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।

সিঙ্গুরের সানাপাড়ায় জাতীয় সড়কের বর্ধমানমুখী লেনের উপর তৈরি হচ্ছে সিঙ্গুর উৎসবের মঞ্চ। শনিবার দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৫৮
Share: Save:

সংখ্যাটা কখনও ৬০-৭০। কখনও আরও বেশি!

শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের অধিগৃহীত জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা ইস্তক রোজ বহিরাগতদের ভিড় লেগে রয়েছে। তার জেরে শীর্ষ আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কাজ আদৌ শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে কর্মীরা তো বটেই, সংশয়ে রয়েছেন হুগলি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একটা বড় অংশই। তাঁদের অভিযোগ, এর ফলে, কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কানেও পৌঁছেছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মোতাবেক প্রতিদিনই কোনও না কোনও মন্ত্রী সিঙ্গুরে আসছেন কাজ তদারক করতে। সঙ্গে বেশ কিছু গাড়ি, লোকলস্কর। এ পর্যন্ত প্রত্যেক মন্ত্রীই কাজের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শনিবারও সিঙ্গুরে আসেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু মন্ত্রীরা এলেই ভিড় যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে! তা ছাড়া, সিঙ্গুরে যাতায়াতের পথে অনেক বহিরাগতও ঢুকে পড়ছেন টাটাদের প্রকল্প এলাকায়। জঞ্জাল সাফাই বা জমি মাপজোকের কাজ চলছে যেখানে, সেখানে তাঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন অবাধে।

শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, পুলিশকে কড়া হতে বলা হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই বাইরের লোকজনকে প্রকল্প এলাকার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। তবে, জেলা পুলিশেরই এক কর্তার খেদ, ‘‘নেতা-মন্ত্রীরা তো বলেই খালাস। ওঁদের সঙ্গেই তো লোকজন আসছেন। আমরা কাকে ছেড়ে কাকে আটকাব?’’ অবাঞ্ছিত লোকজনের ভিড়ে কাজ যে ব্যাহত হচ্ছে, তা মানছেন জেলার এক বিধায়কও।

জমি সাফাই বা মাপজোকের কাজ শ্লথ হলেও চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অবশ্য তৎপরতা বেড়েছে। ব্লক অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র তোলা বা জমা দেওয়ার জন্য গ্রামবাসীরা প্রতিদিনই হাজির হচ্ছেন। সেই কাজ আরও ত্বরাণ্বিত করতে প্রশাসনের তরফে বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। যাতে আবেদনকারীরা দ্রুত ব্লক অফিসে পৌঁছতে পারেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, এ পর্যন্ত ৫৬২ জন চাষি ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

এ দিকে, আগামী বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য শনিবার থেকেই সিঙ্গুরের সানাপাড়া অংশে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের বর্ধমানমুখী ‘লেন’ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হল। কারণ, জাতীয় সড়ক লাগোয়া সানাপাড়াতেই মমতার সভার জন্য মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে জোরকদমে। আপাতত জাতীয় সড়কের ওই অংশে কলকাতামুখী ‘লেন’ দিয়েই দু’দিকের গাড়ি চালানো হচ্ছে। তবে, সভার দিন ভিড়ের জেরে পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

compensate Singur work interrupting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE