প্রতীকী ছবি।
পুরুলিয়া জেলার অযোধ্যা পাহাড়ে রাজ্যের প্রস্তাবিত তুর্গা পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ৫০০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। ১০০০ মেগাওয়াটের এই প্রকল্পের জন্য খুব অল্প সুদে ৩০ বছরের জন্য এই ঋণ পাচ্ছে রাজ্য।
তুর্গার পাশেই অযোধ্যা পাহাড়ের গায়ে বাম আমলে রাজ্য সরকার প্রথম পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলেছিল। ৯০০ মেগাওয়াটের সেই প্রকল্পের জন্যও জাপান ব্যাঙ্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) ঋণ দিয়েছিল। রাজ্যের দ্বিতীয় পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেরও জন্যও সেই জাপানি ঋণই পাচ্ছে রাজ্য।
সূত্রের খবর, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই তুর্গা প্রকল্পের ঋণের জন্য দিল্লিতে জাইকা-র সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি চুক্তিও হতে চলেছে। যেখানে বিদ্যুৎ দফতর-সহ পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার শীর্ষ কর্তাদেরও উপস্থিত থাকার কথা।
বণ্টন সংস্থার এক কর্তা জানান, তুর্গা প্রকল্পে জমির সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। ঋণ-চুক্তি হয়ে যাওয়ার এক মাসের মধ্যেই প্রকল্পের পরামর্শদাতা নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দরপত্র চাওয়া হবে। সংস্থাটি পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মূল নকশা-সহ অন্যান্য দিকগুলি খতিয়ে দেখবে। ওই কর্তার আশা, সবকিছু ঠিকঠাক চললে ২০২২-’২৩ সালের মধ্যে তুর্গায় প্রথম ইউনিটটি চালু হয়ে যাবে।
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর ২০১৬ সালে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে ১০০০ মেগাওয়াটের (২৫০ মেগাওয়াট করে ৪টি ইউনিট) তুর্গা পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি’ (সিইএ)। ২০১৭ সালের প্রথম দিকে রাজ্যের মন্ত্রিসভায় প্রকল্পটি অনুমোদনও পায়। তখনই ঠিক হয় এই প্রকল্পের জন্য জাইকা-র কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে। বণ্টন সংস্থার উদ্যোগে কেন্দ্রের মাধ্যমে এত দিন ধরে সেই চেষ্টাই চলছিল। সম্প্রতি জাপান সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সফরের জের টেনেই মিলল জাইকার ঋণ।
পাম্প স্টোরেজের ক্ষেত্রে পাহাড়ের গায়ে উপর-নীচে দু’টি জলাধার তৈরি করা হয়। রাতের দিকে বিদ্যুতের চাহিদা যখন কম থাকে, তখন নীচের জলাধার থেকে পাম্প করে উপরের জলাধারে জল তোলা হয়। দিনের বেলায় যখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে, তখন উপরের জমা জল নীচের জলাধারে ফেলার সময় টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এতে গ্রীষ্মের চাহিদার সময় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির উপর যেমন চাপ কমে, জলবিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে মাসুলও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আবার কয়লাও লাগে না।
অযোধ্যা পাহাড়ের গায়ে তুর্গা নালার জলকে ব্যবহার করে নতুন আরও একটি পাম্প স্টোরেজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা যে সম্ভব, সিইএ নিজেই তা রাজ্যকে জানিয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই তুর্গা প্রকল্পের পরিকল্পনার পর জাপানি ঋণে এ বার বাস্তবায়িত হওয়ার পথে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy