Advertisement
১৭ মে ২০২৪
TMC

ঘরের দুর্নীতি কি ডোবাবে, চর্চা দলে

আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিধায়কদের ফের ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচির আগে বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছে।

নিয়োগ দুর্নীতি বা সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে চিন্তা কম বলেই মনে করে তৃণমূল।

নিয়োগ দুর্নীতি বা সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে চিন্তা কম বলেই মনে করে তৃণমূল। প্রতীকী ছবি।

রবিশঙ্কর দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৩৭
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের মুখে আবাস প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে শুরু শোরগোলে ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে তৃণমূল কংগ্রেসের একটা বড় অংশ। এক দিকে দলের একাংশের ‘চাপ’, অন্য দিকে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশাসনিক কড়াকড়ি, এই দুইয়ের মধ্যে পড়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিষয়টি ‘ঝুলিয়ে’ রাখারই পক্ষে গ্রামীণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত দলীয় বিধায়কদের বড় অংশ। একাধিক জেলায় দলীয় স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।

নিয়োগ দুর্নীতি বা সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে চিন্তা কম বলেই মনে করে তৃণমূল। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবাস প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ যে দিকে মোড় নিচ্ছে তা দুশ্চিন্তায় রেখেছে দলের একাংশকে। আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বিধায়কদের ফের ‘গ্রামে চলো’ কর্মসূচির আগে বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছে। দক্ষিণবঙ্গের এক সাংগঠনিক জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘জেলার বিধায়কদের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের মত জানিয়েছেন ঠিকই। তবে আবাস প্রকল্পে স্বচ্ছতা নিয়ে রাজ্য সরকার যে অনড় মনোভাব নিয়েছে তার সঙ্গে কোনও ভাবেই আপস করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে অনিয়মটুকু বাদ দিতেই হবে।’’

জেলায় জেলায় এই অনিয়ম দূর করতে গিয়ে দলীয় বাধা সরাতে প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে। আবার জেলার বিধায়কদের কাছেও প্রায় নিয়ম করে সমীক্ষার কাজে যুক্ত সরকারি কর্মীদের বাধা ও হুমকি দেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ আসছে। কয়েকটি জায়গায় অভিযোগ এসেছে দলের প্রধান ও উপপ্রধানদের বিরুদ্ধেই। দলীয় সূত্রে খবর, তালিকা ঝাড়াই-বাছাই নিয়ে বিধায়কেরা যাতে সরকারি সমীক্ষক দলের কাজে হস্তক্ষেপ না করেন, মৌখিক ভাবে সেই পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিধায়কদের অনেকেই দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, সমীক্ষক দলকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন বহু জেলাশাসক বা বিডিও। একই সঙ্গে সমীক্ষার নামে ‘অন্যায়’ হচ্ছে বলে প্রধান বা উপপ্রধানের তরফেও অভিযোগ আসছে তাঁদের কাছেই। ফলে দ্বিমুখী চাপের মধ্যে রয়েছেন বিধায়কেরা।

পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ফের ‘গ্রাম চলো’ কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। এই দু’মাসে মোট ২০ দিন বিধায়কদের নির্বাচনী এলাকার বাছাই করা এলাকায় জনসংযোগে ‘রাত কাটানো’র কথা রয়েছে।। তার আগে এই বিষয়টি তাঁদের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে নিজের নির্বাচনী এলাকায় সমীক্ষকদলকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছেন, সম্পূর্ণ গ্রামীণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত এমন এক বিধায়কের কথায়, ‘‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের সমর্থনকে প্রশ্নহীন জায়গা পৌঁছে দিয়েছিল। কিন্তু আবাস প্রকল্প নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে ওঠা অভিযোগে তার অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’’ সেক্ষেত্রে এই দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ও অসন্তোষের আশঙ্কায় রয়েছেন এই বিধায়কেরা।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও স্বচ্ছ তালিকা তৈরির প্রক্রিয়াকে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ বলে মেনে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এত বিস্তৃত ব্যবস্থায় কিছু অনিয়ম হতে পারে। বাম জমানায় বিপিএল-এর প্রথম তালিকা তৈরির সময়ও এটা হয়েছিল। সরকার তা দূর করতে যে পদক্ষেপ করছে, সাধারণ মানুষ তা দেখছেন। দলের কর্মীদের কাছেও এটা উৎসাহব্যঞ্জক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC PMAY Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE