Advertisement
০২ মে ২০২৪

দার্জিলিঙে এখনও গুরুঙ্গের ছায়া, বন্ধ দোকানপাট

একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গুরুঙ্গ অনুগামীরা এখনও এসে হুমকি পোস্টার লাগিয়ে যায়। দার্জিলিঙের অনেকেরই ধারণা, গুরুঙ্গ যা চাইছেন, সেটাই লেখা থাকে পোস্টারে। রোজই যে পোস্টার লাগানো হয়, তা-ও নয়। লাগানো হলেও পুলিশ সেই পোস্টার ছিড়ে ফেলে।

বিকিকিনি: বন্ধ দোকানের সামনেই চলছে আনাজ কেনা। সোমবার দার্জিলিঙে ম্যালের কাছে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বিকিকিনি: বন্ধ দোকানের সামনেই চলছে আনাজ কেনা। সোমবার দার্জিলিঙে ম্যালের কাছে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সৌমিত্র কুণ্ডু
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

চকবাজারে এলেই জানা যায়, বিমল গুরুঙ্গ কী চাইছেন!

একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গুরুঙ্গ অনুগামীরা এখনও এসে হুমকি পোস্টার লাগিয়ে যায়। দার্জিলিঙের অনেকেরই ধারণা, গুরুঙ্গ যা চাইছেন, সেটাই লেখা থাকে পোস্টারে। রোজই যে পোস্টার লাগানো হয়, তা-ও নয়। লাগানো হলেও পুলিশ সেই পোস্টার ছিড়ে ফেলে। তবু, কৌতূহলী লোকজন রোজই এক চক্কর ঘুরে যায় চকবাজারের সেই নির্দিষ্ট জায়গায়।

দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মোর্চা সভাপতি। তবু তাঁর খাসতালুকে এখনও এমনই প্রাসঙ্গিক তিনি।

আরও পড়ুন: বন্ধে নাকাল পাহাড়ে ভরসা এটিএম দাজুরা

একটু একটু করে দোকানিরা ফিরে আসছেন ফুটপাথে। আনাজপাতি বিক্রি হচ্ছে প্রায় রোজই। জিটিএ, জেলাশাসকের দফতরে হাজিরা এখন যথেষ্ট। সমতলের সঙ্গে বাস চলাচল শুরু হতেই তাতে ভিড়। যার সঙ্গে কথা বলা যায়, তিনিই বলেন, এই বন্‌ধ এ বার উঠে যাওয়া উচিত।

উঠছে না, তার কারণ গুরুঙ্গপন্থীদের হাঙ্গামার ভয়।

বিনয় তামাঙ্গকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা। সোমবার নবান্নে। ছবি: প্রদীপ আদক

ম্যালে এখন শুধুই স্থানীয় মানুষের ভিড়। বেশির ভাগেরই এক কথা— বন্‌ধটা এ বার উঠে গেলে ভাল। হাতে কাজ নেই। অনেকেরই পকেট ফাঁকা। নেট নেই বলে শিলিগুড়ির এটিএম থেকে একদল টাকা তোলানোর ব্যবস্থা করেছেন। আর এক দল বলছেন, টাকাই তো নেই, তুলব কী! বন্‌ধ উঠে ব্যবসা শুরু না হলে পকেট ভরবে না, তা-ও বলছেন তাঁরা। কিন্তু সে কবে হবে? অধিকাংশ হোটেল মালিক ঝাঁপ ফেলে পাহাড় ছেড়ে নেমে গিয়েছেন। ‘‘পৃথিবীতে কোথাও এত দিন ধরে বন্‌ধ চলেছে! দার্জিলিঙের বদনাম হয়ে গেল,’’ গজগজ করছিলেন প্রৌঢ়া চুনচুন ভুটিয়া।

প্রশাসন অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছে। দার্জিলিঙের দায়িত্বে থাকা আইপিএস জাভেদ শামিম বলেন, ‘‘দোকানপাট অনেকেই খুলতে চাইছেন। খুলছেনও। ব্যবসায়ী, বাসিন্দারা এগিয়ে এলেই স্বাভাবিক হবে। আমরা চাই পর্যটকও আসুক।’’

এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পাহাড় পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন বিনয় তামাঙ্গ ও অনীত থাপা। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, ‘‘পাহাড় আগের থেকে অনেকটাই স্বাভাবিক। সেখানে কলেজের ভর্তি নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তার সমাধানে ভর্তি প্রক্রিয়া যত বেশি অনলাইনে করা যায়, তা-ও দেখতে বলেছি।’’

কিন্তু গুরুঙ্গের ছায়া কাটিয়ে দোকানপাটের ঝাঁপ কবে উঠবে, তা এখনও হলফ করে বলতে পারছেন না দার্জিলিঙের মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE