Advertisement
২১ মে ২০২৪

শিশু পাচারে হয়নি জামিন

ঠিক যে-ভাবে শিশু পাচারের তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা, সিআইডি সেই ভাবে কাজ করেনি বলে ফের তোপ দাগল কলকাতা হাইকোর্ট। শিশু পাচারের মামলায় পাঁচ মাসেরও বেশি জেলবন্দি ডাক্তার সন্তোষকুমার সামন্ত বৃহস্পতিবারেও জামিন পাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

ঠিক যে-ভাবে শিশু পাচারের তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা, সিআইডি সেই ভাবে কাজ করেনি বলে ফের তোপ দাগল কলকাতা হাইকোর্ট। শিশু পাচারের মামলায় পাঁচ মাসেরও বেশি জেলবন্দি ডাক্তার সন্তোষকুমার সামন্ত বৃহস্পতিবারেও জামিন পাননি। বিচারপতি অসীম রায় ও বিচারপতি অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

অভিযুক্ত চিকিৎসকের জামিন নামঞ্জুরের পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে সিআইডি-র তদন্তে অজস্র ফাঁকের কথা বলেছে। সিআইডি-র শীর্ষ কর্তাকে ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, অবিলম্বে তদন্তের সব ফাঁকফোকর বন্ধ করতে হবে। যথাযথ ভাবে রূপায়ণ করতে হবে ২০১৫ সালের জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন) আইন। গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার-কর্মীরা ওই আইন ঠিকঠাক জানেন কি না, আগের শুনানিতেই সেই বিষয়ে ঘোর সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতিরা।

সিআইডি-র অভিযোগ, হাওড়া-বাদুড়িয়ার শিশু পাচার চক্রের তদন্তে নেমে কলেজ স্ট্রিটের এক নার্সিংহোমের সন্ধান মেলে। ওই নার্সিংহোমের মালিক দম্পতি এবং সেখানে কর্মরত চিকিৎসক সন্তোষকুমার সামন্ত শিশু পাচারে জড়িত বলে তদন্তে জানা যায়। ওই দম্পতি এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে শিশু পাচারের মামলায় গ্রেফতার করা হয়। ১৬১ দিন জেল হেফাজতে থাকার পরে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন ওই চিকিৎসক।

গত ৩ মে জামিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি রায় তদন্ত নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। সরকার পক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, কলেজ স্ট্রিটের নার্সিংহোম থেকে একটি শিশুকন্যাকে এক মহিলার কাছে বিক্রি করা হয়েছে বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। কিন্তু ওই শিশুর প্রকৃত বাবা-মা কে, সেই ব্যাপারে কোনও তদন্তই করেনি সিআইডি। কেন করেনি? একই সঙ্গে বিচারপতি জানতে চান, শিশুটির ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছে কি না। আদালতের অনুমতি না-নিয়ে এক মহিলা কী ভাবে ওই শিশুকন্যাকে কিনলেন, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।

বিচারপতি রায় তার পরেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যে-মহিলা শিশুটিকে কিনেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তকারী অফিসার আইনি ব্যবস্থা নেননি কেন?’’ সিআইডি-র স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপের ইনস্পেক্টর সৌগত ঘোষের কাছ থেকে ওই সব প্রশ্নের উত্তর না-পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি রায়। তিনি জানতে চান, ওই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে কেন চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়নি।

প্রথমে তদন্তকারীদের অভিযোগ ছিল, কলেজ স্ট্রিটের ওই নার্সিংহোম থেকে একটিই শিশু পাচার হয়েছে। বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, যদি ধরে নেওয়া যায় যে একটি শিশু বিক্রিরই প্রমাণ মিলেছে, তা হলেই কি বলা যায়, ওই চিকিৎসক শিশু পাচারে যুক্ত?
সিআইডি পরে জানায়, চিকিৎসক একাধিক শিশু পাচারে জড়িত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child Trafficking High Court Bail CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE