Advertisement
০২ মে ২০২৪

ঝাড়গ্রামের উন্নয়নে বৈঠক, বিক্ষোভও

পাশাপাশি কর্মাধ্যক্ষদের কাছে উন্নয়নের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ২৪ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব প্রতিনিধিকে নিয়ে ফের আলোচনায় বসা হবে।

জমায়েত: নয়াগ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

জমায়েত: নয়াগ্রামে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

টনক নড়ল মুখ্যমন্ত্রীর ধমকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঝাড়গ্রামের উন্নয়নে হল প্রশাসনিক বৈঠক।

নতুন জেলা গঠনের পরে প্রথম ঝাড়গ্রাম সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টই বলেছেন, উন্নয়নের কাজে তিনি সন্তুষ্ঠ নন। পরিস্থিতি পাল্টাতে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুনের মাথায় তিনি বসিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির পদ থেকেও মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে সরিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই মতোই বৃহস্পতিবারের বৈঠকে দুই জেলার জেলাশাসক, সভাধিপতিরা হাজির ছিলেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে জানানো হয় এখনও উন্নয়নের টাকা সরাসরি ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ পাচ্ছে না। কর্মী সঙ্কটেও সমস্যা হচ্ছে। আপাতত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ১১জন কর্মীকে ঝাড়গ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি কর্মাধ্যক্ষদের কাছে উন্নয়নের রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ২৪ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব প্রতিনিধিকে নিয়ে ফের আলোচনায় বসা হবে।

এই অবস্থায় বিরোধীদের প্রশ্ন, যদি পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলারাই ঝাড়গ্রাম চালাবেন, তাহলে নতুন জেলা করে লাভটা কী হল! বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, “নতুন জেলা হলে কেন্দ্র থেকে অনেক অর্থ আসে। তাই পরিকাঠামো না গড়েই ঝাড়গ্রামকে নতুন জেলা করা হয়েছে।” একই মত বামেদেরও। যদিও তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “জঙ্গলমহলের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী অনেক কাজ করেছেন। আরও হবে।’’

শাসকদল প্রচুর কাজের দাবি করলেও আদিবাসীদের ক্ষোভ কিন্তু চাপা থাকছে না। মুখ্যমন্ত্রী ‘আদিবাসীদের পাশে বন্ধু হয়ে থাকা’র আশ্বাস দিয়ে যাওয়ার পরদিনই খড়িকামাথানিতে বিক্ষোভ জমায়েত করেছে আদিবাসীদের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর নয়াগ্রাম ব্লক কমিটি। এ দিন আদিবাসী নেতারা প্রকাশ্য সভায় অভিযোগ করেন, রাজ্যে আদিবাসীদের জন্য কিছুই হয়নি। তাঁদের মূল অভিযোগ নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মুর বিরুদ্ধে। দুলালবাবু পশ্চিমবঙ্গ সাঁওতালি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিধানসভা এলাকায় সাঁওতালি মাধ্যম প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলিতে পাঠ্যবই মিলছে না, সাঁওতালি মাধ্যমে স্থায়ী শিক্ষক নেই বলেও অভিযোগ। অথচ, ২০১৮ সালে বহু পড়ুয়া সাঁওতালিতে মাধ্যমিক দেবে। এক আদিবাসী নেতার কটাক্ষ, “আমাদের ভাষাটা সাঁওতালি, আর অলচিকি হল লিপি। এরা তো সেই ফারাকটাই জানেন না।” দুলালবাবু যদিও বলেন, ‘‘ সবাই সব দেখছেন। ফলে, কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE