Advertisement
E-Paper

ফাইলের দিন শেষ, জমানা ই-অফিসের

প্রশাসনের নির্দেশ, ২০১৮-র প্রথম দিন থেকেই কোনও নতুন ফাইল তৈরি হবে না। তার জায়গা নেবে ই-অফিস। কর্মীদের টেবিলে থাকবে কম্পিউটার।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

টেবিলের উপর সার দিয়ে রাখা ফাইল। তার জেরে ও পারে বসে থাকা কর্মীর মুখ দেখা যাচ্ছে না! সরকারি অফিসের এই চেনা ছবিটা এ বার দ্রুত বদলে ফেলতে চাইছে নবান্ন।

প্রশাসনের নির্দেশ, ২০১৮-র প্রথম দিন থেকেই কোনও নতুন ফাইল তৈরি হবে না। তার জায়গা নেবে ই-অফিস। কর্মীদের টেবিলে থাকবে কম্পিউটার। সেখানেই তৈরি হবে ফাইল। মাউসের এক ক্লিকেই কম্পিউটারে ভেসে উঠবে ফাইলের একের পর এক পাতা। ১ জানুয়ারি থেকে সব দফতরে ‘ই-অফিস’ চালু করার নির্দেশে দিয়েছে রাজ্যের কর্মীবর্গ ও প্রশাসনিক দফতর। তবে এখনই ডাইরেক্টরেট, জেলাশাসক ও জেলা সভাধিপতিদের কার্যালয়ে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে না।

সরকারের এই উদ্যোগ অবশ্য নতুন নয়। বাম আমলের শেষ দিকে সরকারি কাজে ই-গর্ভনেন্স চালুর চেষ্টা হলেও তা দানা বাঁধেনি। নতুন সরকার গোড়া থেকেই উদ্যোগী হয়। ফলে টেন্ডার দেওয়া, কর ব্যবস্থার হিসেব, এমনকী ফাইল ট্র্যাকিংয়ের মতো বহু কাজ এখন ই-অফিসের মাধ্যমে হচ্ছে। নবান্নের এক কর্তা জানান, সরকার চায়, ‘পেপার লেস’ অফিস। তাই নতুন ফাইল তৈরি, চিঠিপত্র— সবই ই-অফিসের মাধ্যমে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু সরকারি দফতরে জমে থাকা লক্ষ লক্ষ পুরনো ফাইলের কী হবে? নবান্নের এক কর্তা জানান, সরকারি আইন ও মামলা সংক্রান্ত ফাইল, কোনও তদন্তের ফাইল, সরকারের নীতি সংক্রান্ত ফাইল, বেশি দামে কেনাকাটার কোনও ফাইল— দৈনন্দিন প্রয়োজনে লাগা এই গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলি অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকবে। তবে এই ধরনের ফাইলের স্ক্যান করা প্রতিলিপি রাখা থাকবে ই-অফিসে। পরের ধাপে এর বাইরে থাকা ফাইলগুলি শুধু স্ক্যান করে ই-অফিসে রেখে দেওয়া হবে। এখন বিভিন্ন দফতর তাদের ফাইলের তালিকা তৈরি করছে।

সরকারি কর্তাদের মতে, ‘‘যে কাজ করতে দু’মাস লাগতো, ই-অফিসে সেটাই হতে পারে কয়েক দিনে।’’ সাধারণত রাজ্যের প্রতিটি দফতরে এখনও সিংহভাগ কাজ হয় কাগজ-কলমে। মন্ত্রী থেকে নিচু তলার কর্মী— সকলের কাছেই প্রতিদিন পিওনরা পৌঁছে দেন গাদাগাদা ফাইল। এক ঘর থেকে আর এক ঘরে সেই ফাইল পৌঁছতে মাস গড়িয়ে যায়। হাত বদলে ফাইলগুলি জরাজীর্ণ চেহারা নেয়, হারানোর সম্ভবনাও থাকে। এ-ও দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে লাল ফিতের ফাঁসে ঝুলে রয়েছে পেনশনের মতো ফাইল।

আমলাদের দাবি, ই-অফিস থেকে ফাইল হারানো বা লোপাটের সম্ভাবনা নেই। নিয়ম মেনে কাজ করলে ফাইল খুঁজে বের করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। আবার, ফাইলের রেকর্ড একবার সার্ভারে চলে গেলে তা নষ্ট করা কঠিন। কম্পিউটারে ফাইলের তথ্য-ভাণ্ডার থাকলে দফতরের মন্ত্রী-সচিবরা সহজেই কাজের অগ্রগতি দেখে নিতে পারবেন। প্রতিটি দফতরের সব তথ্য মজুত থাকবে রাজ্য সরকারের কেন্দ্রীয় সার্ভারে।

নতুন বছর শুরু হতে মাত্র মাস দেড়েক বাকি। এই অল্প সময়ে এত বড় মাপের কাজ শেষ করা যাবে তো —সংশয় প্রশাসনের অন্দরেই।

E-Office State Government ই-অফিস
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy