Advertisement
E-Paper

পিস্তল নিয়ে বিক্ষোভ বামেদের, গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

কান্দির পিস্তল-কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার বাধল বিধানসভায়! পিস্তল হাতে তৃণমূলের মিছিলের প্রতিবাদ জানাতে বিধানসভায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখালেন বাম বিধায়কেরা। তার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তিরস্কারের প্রস্তাব গ্রহণ করল শাসক পক্ষ। এমনকী, বাম বিধায়কদের গ্রেফতার করা উচিত্ বলে হুঁশিয়ারি দিলেন সংবয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১২:১৩
বিধানসভা চত্বরে নকল পিস্তল হাতে বাম বিধায়ক সুশান্ত বেরা এবং বিজয় বাগদি। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভা চত্বরে নকল পিস্তল হাতে বাম বিধায়ক সুশান্ত বেরা এবং বিজয় বাগদি। —নিজস্ব চিত্র।

কান্দির পিস্তল-কাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার ধুন্ধুমার বাধল বিধানসভায়!

পিস্তল হাতে তৃণমূলের মিছিলের প্রতিবাদ জানাতে বিধানসভায় খেলনা পিস্তল নিয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখালেন বাম বিধায়কেরা। তার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে তিরস্কারের প্রস্তাব গ্রহণ করল শাসক পক্ষ। এমনকী, বাম বিধায়কদের গ্রেফতার করা উচিত্ বলে হুঁশিয়ারি দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।

মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশন বসতেই বাম বিধায়কেরা আচমকাই নকল পিস্তল নিয়ে হইচই জুড়ে দেন। গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়, ইনসার আলি বিশ্বাস, আমজাদ হোসেন, রামেশ্বর দলুই-সহ বাম বিধায়কেরা নকল পিস্তল উপরে তুলে ধরে বলতে থাকেন, ‘‘এ রাজ্যে আইনের শাসন বলে কিছুই নেই। প্রকাশ্য রাস্তায় পিস্তল নিয়ে মিছিল করেও পার পাওয়া যায়।’’ নকল পিস্তল থেকে এই সময় ফট ফট করে ‘গুলি’র শব্দ শোনা যাচ্ছিল। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় আর্তনাদ করে ওঠেন, ‘‘এ সব কী হচ্ছে! এগুলো আসল না নকল? কিছুই বোঝা যাচ্ছে না! দয়া করে এগুলো সরান।’’ বাম বিধায়কেরা অবশ্য সেই অনুরোধে কান না দিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকেন। এর পরই মার্শালকে ডেকে বিধায়কদের ওই খেলনা পিস্তলগুলোকে বাজেয়াপ্ত করে নেন স্পিকার বিমানবাবু। এর পরেই শুরু হয়ে যায় প্রশ্নোত্তর পর্ব।

সেই পর্বের শেষে কান্দিতে সোমবারের ঘটনা নিয়ে বিবৃতি দিতে ওঠেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘‘কান্দির ওই ঘটনায় যে দলের যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গেই পার্থবাবু যোগ করেন, যারা পকেটে ইট নিয়ে মিছিল করে পুলিশের উপর আক্রমণ করে, তারাও ছাড় পাবে না। পরিষদীয়মন্ত্রীর ইঙ্গিত ছিল স্পষ্টতই বামেদের নবান্ন অভিযানের দিকে। এতে ফুঁসে ওঠেন বাম বিধায়কেরা। তাঁরা প্রশ্ন করতে থাকেন, কান্দির সঙ্গে নবান্ন অভিযানকে টানা হচ্ছে কেন? চিত্কার করতে করতেই প্রথমে ওয়াকআউট করেন কংগ্রেস বিধায়কেরা। বেশ কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ, পার্থবাবুদের সঙ্গে বচসা, হইহট্টগোলের পর সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান বামেরাও।

বাম এবং কংগ্রেস বেরিয়ে যাওয়ার পর মুখ্য সরকারি সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধানসভার নিয়মাবলীর ধারা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘সংসদ বা কোনও রাজ্যের বিধানসভায় একটা সূচ নিয়ে ঢোকার অধিকার নেই যেখানে, অস্ত্র নিয়ে বিক্ষোভ সেখানে পুরোপুরি বেআইনি।’’ সঙ্গে সঙ্গে পার্থবাবু প্রস্তাব এনে বিরোধী শূন্য বিধানসভায় বামেদের তিরস্কার করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। প্রত্যাশিত বাবেই শাসক দলের সমর্থনে পাশ হয়ে যায় সেই প্রস্তাব।

কিন্তু তখনও নাটকরে আরও বাকি ছিল। এমন সময় হঠাত্ই সভায় প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শশব্যস্ত হয়ে পড়েন শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা। জিরো আওয়ারের পরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘‘ভাগ্যিস এমন একটা বিক্ষোভের সময় আমি সভায় ছিলাম না। এটা অসৌজন্য, অশোভনীয়ই শুধু নয়, গণতন্ত্রের কলঙ্কজনক দিন। এ ভাবে অস্ত্ নিয়ে যারা বিক্ষোভ করেছে, তাদের গ্রেফতার করা উচিত।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বর্তমান সরকারের আমলে অন্যায় করলে শাসক দলের নেতারাও ছাড় পান না। শম্ভুনাথ কাউ, আরাবুল ইসলাম এবং সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া দীপক হালদারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল বিধায়কেরা তত ক্ষণে বামদের ‘গ্রেফতার চাই’ বলে শোরগোল শুরু করেন। সম্ভবত লঘু পাপে গুরুতর প্রতিক্রিয়ার দিকে বিষয়টি এগোচ্ছে বুঝেই মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেন, ‘‘আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারি যাঁরা এ কাজ (বিধানসভায় বিক্ষোভ) করেছেন, তাঁদের তিনি ক্ষমা করে দিন।’’

কান্দি-কাণ্ডের খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন
পিস্তল ছুড়ে তৃণমূলে যোগ

CPM MLA Assembly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy