Advertisement
০৭ মে ২০২৪

জোড়া উড়ানের দেরিতে ক্ষোভ যাত্রীদের

শিয়ালদহ আর হাওড়ায় ট্রেনের দেরিটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের প্রশ্ন, বিমানবন্দরও কি লেটলতিফের সেই খাতায় নাম লেখাতে চলেছে? রবিবার এয়ার ইন্ডিয়া এবং তাদের সহযোগী অ্যালায়েন্স এয়ারের দু’টি উড়ানের ব্যাপক দেরির পরে প্রশ্নটা জোরদার হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ০৩:১৬
Share: Save:

শিয়ালদহ আর হাওড়ায় ট্রেনের দেরিটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের প্রশ্ন, বিমানবন্দরও কি লেটলতিফের সেই খাতায় নাম লেখাতে চলেছে?

রবিবার এয়ার ইন্ডিয়া এবং তাদের সহযোগী অ্যালায়েন্স এয়ারের দু’টি উড়ানের ব্যাপক দেরির পরে প্রশ্নটা জোরদার হয়েছে। অ্যালায়েন্সের শিলংয়ের উড়ানটির ছাড়ার কথা ছিল দুপুর সাড়ে ১২টায়। কিন্তু ১টা বাজে। ২টো বাজে। ৩টে বাজে। ৪টে বাজে। কিন্তু বিমান ওড়ার নামগন্ধ নেই। গালে হাত দিয়ে বসে যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিমান সংস্থার কোনও কর্তাই এসে জানাননি, কেন দেরি হচ্ছে। কোনও ঘোষণাও করা হয়নি।

অ্যালায়েন্স এয়ারের ওই ছোট এটিআর বিমানে যাত্রী ছিলেন ১৯ জন। বিমান সংস্থা সূত্রের খবর, রবিবার সকালে বিমানটি কলকাতা থেকে ডিব্রুগড় গিয়ে ফিরে আসার পরেই খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু বিমান বিগড়ে যাওয়ার কথা বা উড়ানের দেরির কারণ তাঁদের জানানোই হয়নি বলে যাত্রীদের অভিযোগ। আর বিমান সংস্থার দাবি, বিমানটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় অপেক্ষমাণ যাত্রীদের মধ্যে ১১ জনকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়েছে। দেরি হচ্ছে বলে ঘোষণাও করা হয়েছে। সম্ভবত সেই ঘোষণা বাকি আট জন যাত্রী শুনতে পাননি।

প্রশ্ন উঠছে, এ কী রকম ঘোষণা যে, উৎকণ্ঠিত কিছু যাত্রী শুনতে পাবেন না এবং অন্যেরা শুনতে পাবেন? এটাই বা কী রকম ব্যবস্থা যে, অপেক্ষমাণ যাত্রীদের একাংশ খাবার পাবেন, অন্যেরা পাবেন না?

শুধু দেরি বা খাবার না-পাওয়াই নয়। ওই উড়ানের সঙ্গে কারও কারও প্রাণ বাঁচানোর প্রশ্নটিও জুড়ে গিয়েছিল। আজ, সোমবার সকাল সাড়ে ৭টায় শিলংয়ে এক রোগীর জরুরি অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছিলেন ইমামুল হক নামে এক যাত্রী। চিকিৎসার সাজসরঞ্জাম প্রস্তুতকারী এক সংস্থার পদস্থ কর্মী ইমামুলের অভিযোগ, ‘‘সাড়ে ১০টায় বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছিলাম। জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে যাচ্ছি। সোমবার সকালের মধ্যে শিলংয়ে পৌঁছনোর কথা। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরে প্রথমে বলা হয়, বিমানে তেল ভরার জন্য দেরি হচ্ছে। বিমান যে বিগড়ে গিয়েছে, সেটা জানানো হয়নি।’’

বিকেল ৪টের পরে যাত্রীদের জানানো হয়, নির্ধারিত বিমান যাবে না। তাঁদের তখন জেটের বিমানে গুয়াহাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ইমামুল হকের কথায়, ‘‘আমাদের বলা হয়েছে, সন্ধ্যায় গুয়াহাটি পৌঁছনোর পরে সেখান থেকে সড়কপথে শিলংয়ে পৌঁছে দেওয়া হবে।’’ কলকাতা থেকে শিলং গিয়ে ফিরে আসার পরে অ্যালায়েন্সের ওই বিমানের যাওয়ার কথা ছিল অন্ডাল। সংস্থা জানিয়েছে, বিকেলে বিমানটি সারিয়ে অন্ডাল যাতায়াত করেছে।

অ্যালায়েন্সের শিলং উড়ান ছাড়াও এ দিন সমস্যা হয় এয়ার ইন্ডিয়ার বড় এয়ারবাস-৩২০ বিমানে। সকালে কলকাতা থেকে সেটির ডিব্রুগড় যাওয়ার কথা ছিল। মুম্বই থেকে বিমান এসে সেটিই ডিব্রুগড় উড়ে যায়। এ দিন সকালে মুম্বই থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে আসে ওই উড়ান। সেই বিমানের সেবিকা ও পাইলটদের ওড়ার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছিল। নতুন সেবিকা ও পাইলট জোগাড় করতে আরও দেরি হয়ে যায়। ওই উড়ানের জন্য কলকাতায় অপেক্ষা করছিলেন ১৪৪ জন যাত্রী।

অ্যালায়েন্সের উড়ানের যাত্রী ইমামুল জানান, তিনি বিমানবন্দরে পৌঁছে দেখেন, এয়ারবাসের যাত্রীদের অনেকেই চিৎকার করছেন। তাঁদের অনেকে সকাল সাড়ে ৭টায় বিমানবন্দরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, রবিবার সকালে ওই উড়ান যে দেরি করে ছাড়বে, সেটা যাত্রীদের জানানো হয়নি। তবে বিমান সংস্থার বক্তব্য, উড়ান ছাড়তে দেরি হতে পারে বলে শনিবার রাতেই যাত্রীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE