গোপন সূত্রে খবর পেয়ে মাদক ইত্যাদির চক্র ধরতে পুলিশকে ক্রেতা সাজতে হয় মাঝেমধ্যেই। লাইসেন্স না-নিয়েই একটি রেস্তোরাঁয় মদ বিক্রির অভিযোগ পেয়ে খদ্দের সেজে এ বার দু’জনকে গ্রেফতার করলেন আবগারি দফতরের কর্মীরা। ‘ওয়াইল্ড ওয়েস্ট ডাভার্ন’ নামে গড়িয়াহাট মলের ওই রেস্তোরাঁর মালিক নিলয় দত্তকে সোমবার রাজ্যের আবগারি দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
আবগারি দফতরের কলকাতার কালেক্টর সুব্রত বিশ্বাস জানান, শহরের বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁয় ‘লাউঞ্জ বার’ তকমা দিয়ে এমন সব ছোটখাটো পার্টির আয়োজন করা হয়, যেখানে মদ্যপান চলে। তার জন্য যিনি পার্টির আয়োজন করছেন, তাঁকে আবগারি দফতরে আবেদন করতে হয়। সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘এক দিনের জন্য ‘সার্ভিস পারমিশন’ হিসেবে মদ্যপানের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সেখানে মদ বিক্রি করা নিষিদ্ধ।’’
অভিযোগ, ১৮ মার্চ ‘সার্ভিস পারমিশন’ নিয়ে পার্টি চলাকালীন বাইরের চার জন ওই রেস্তোরাঁয় ঢুকে মেনু কার্ড দেখে মদের অর্ডার দেন। সেই মদ তাঁদের পরিবেশন করা হয় এবং মদ্যপানের পরে মদের নাম লেখা বিলও দেওয়া হয়। ওই চার জনই আবগারিকর্মী। তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন অফিসারেরা। বেআইনি ভাবে রেস্তোরাঁয় মদ বিক্রির অভিযোগে দুই কর্মী প্রসেনজিৎ মাইতি ও মানস দেবশর্মাকে গ্রেফতার করে আবগারি দফতর।
আরও পড়ুন: কাজে এল না কৌশল, মদ নিষেধে অনড় কোর্ট
সুব্রতবাবু জানান, জেরায় ওই দুই কর্মী তাঁদের মালিক নিলয় দত্তের নাম বলেন। নিলয়বাবু শুক্রবার বলেন, ‘‘প্রসেনজিৎ যে এ ভাবে বার খুলে মদ বিক্রি করেছে, তা আমাদের জানা ছিল না। পরে তা জেনে প্রসেনজিৎকে বরখাস্ত করেছি। সে-কথা থানাকেও জানিয়েছি।’’ তাঁর দাবি, মাঝেমধ্যে তাঁরা এক দিনের জন্য ‘টেম্পোরারি বার লাইসেন্স’ নিতেন এবং তাই ওখানে বার আর মেনু কার্ডও ছিল।
কিন্তু সুব্রতবাবু জানান, ওই রেস্তোরাঁ কোনও দিনই টেম্পোরারি বার লাইসেন্স নেয়নি। মার্চের গোড়ায় রেস্তোরাঁ-কর্তৃপক্ষ পাকাপাকি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু লাইসেন্স পাওয়ার আগেই মদ বিক্রির অভিযোগ ওঠায় লাইসেন্স পাওয়াটাই অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। ওই রেস্তোরাঁর জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন্স) বিনোদ মেনন জানান, এক বছর আগে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হলেও বিভিন্ন কারণে তাঁরা তা পাননি। তাই মার্চে নতুন করে আবার আবেদন করেছেন।
ক্যামাক স্ট্রিটেও একটি লাউঞ্জ বারে হানা দিয়ে ৬০ লিটার বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত করে আবগারি দফতর। গ্রেফতার হন দুই কর্মী। ‘আফ্রা-টাফ্রি’ নামে ওই রেস্তোরাঁরও লাইসেন্স নেই। ৮০০ মিটারের মধ্যে স্কুল থাকায় লাইসেন্স পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। রেস্তোরাঁ-মালিক রাজীব নাথানিকেও তলব করেছে আবগারি দফতর। রাজীব এ দিন ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও জবাব দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy