Advertisement
১১ মে ২০২৪
Amartya Sen

কথা হয়নি উপাচার্যের সঙ্গে, জানালেন অমর্ত্য

যে-ভাবে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে একের পর এক এলাকা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৩১
Share: Save:

অমর্ত্য সেন সম্পর্কে ভিত্তিহীন মন্তব্য করেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী—এই অভিযোগে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ ই-মেল করেছিল আচার্য, পরিদর্শক, রেক্টর, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং ইউজিসি চেয়ারম্যানকে। অভিযোগপত্রটি অমর্ত্য সেনকেও পাঠিয়েছিলেন ভিবিইউএফএ-র সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। তিনি এ দিন জানান, ওই বিতর্ক সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য ই-মেলে জানিয়েছেন নোবেলজয়ী। ওই ই-মেলের প্রতিলিপিও তিনি সংবাদমাধ্যমকে দেন।

১৩ ডিসেম্বর ভিবিইউএফএ-র তরফে অভিযোগপত্রে জানানো হয়, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের নিয়ে বৈঠকে উপাচার্য দাবি করেছেন, অমর্ত্য সেন এক দিন তাঁকে ফোন করে নিজের পরিচয় দেন ‘ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন’ হিসেবে। একই সঙ্গে তিনি উপাচার্যকে অনুরোধ করেন, তাঁর বাড়ির সামনে থেকে হকারদের উচ্ছেদ না করতে, কারণ, তাঁর মেয়ে ওই হকারদের থেকে জিনিস কেনেন। উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি পাঠিয়ে সুদীপ্ত জানতে চান, অমর্ত্য সেন উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছিলেন কি না।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অমর্ত্য সেনের এক সহকারী ই-মেলে জবাব পাঠিয়েছেন। অমর্ত্য সেনের জবানিতে মেলে লেখা হয়েছে, “আমার জ্ঞানত উপাচার্যের সঙ্গে এমন কোনও কথোপকথন হয়নি। আর আমি নিজেকে কখনও ‘ভারতরত্ন’ বলে পরিচয়ও দিই না। আমার মেয়ে আনাজ কেনে বলে আমার বাড়ির সামনে থেকে হকারদের উচ্ছেদ করতে বারণ করেছি, এমন কথাও কখনও বলিনি। আমার মেয়ে কোথা থেকে আনাজ কেনে, তা-ও জানি না।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, তাঁর বাড়ির সামনে এমনিতেই হকার নেই। তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার মা, যিনি আমাদের ‘প্রতীচী’ বাড়িতেই থাকতেন, হকারদের উচ্ছেদ আটকাতে চেয়েছিলেন। তবে তা আমাদের বাড়ির সামনে থেকে নয়, পিয়ার্সনপল্লি থেকে। কারণ, তখনও আমাদের বাড়ির সামনে কোনও হকার ছিলেন না।’’

যে-ভাবে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে একের পর এক এলাকা, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। ই-মেলে লিখেছেন, “আমি মনে করি, মাঝেমধ্যেই বিশ্বভারতী সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বড্ড বেশি হস্তক্ষেপ করে। যার সম্যক উদাহরণ হল, সাধারণের চলাচলের পথ আটকে পাঁচিল তৈরি।’’ কয়েক বছর আগেও একটি আলোচনাসভায় অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, ‘পাঁচিল ঘেরা শান্তিনিকেতনে থেকে এখন মনে হয়, আমরা প্রেসিডেন্সি জেলে আছি!’ অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের থেকে মেলেনি।

পৌষমেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরাকে কেন্দ্র করে নভেম্বরেই উত্তাল হয় বিশ্বভারতী। মেলার মাঠ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় পাঁচিল তোলা হচ্ছে। তা নিয়ে বার বার সরব হন আশ্রমিকেরা। আশ্রমিক মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের লাগাতার আন্দোলন যে ভুল নয়, তা প্রমাণিত হয়ে গেল। অমর্ত্য সেনের মতো ব্যক্তিত্বের তরফে এমন বক্তব্য, আমাদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন জোগাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Amartya Sen Visva Bharati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE