Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বাংলায় বিনিয়োগে উৎসাহ হারায়নি আমেরিকা

পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ ও ব্যবসা নিয়ে সদর্থক বার্তা দিল আমেরিকা। তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছেন ভারতে আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ক্যাথলিন স্টিফেনস। বুধবার মার্কিন কনসাল জেনারেলের বাড়িতে কয়েক জন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি জানান, বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এখনও আশা ছাড়েনি আমেরিকা।

খুদেদের সঙ্গে ভারতে আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ক্যাথলিন স্টিফেনস। বুধবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে।—নিজস্ব চিত্র।

খুদেদের সঙ্গে ভারতে আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ক্যাথলিন স্টিফেনস। বুধবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৯
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ ও ব্যবসা নিয়ে সদর্থক বার্তা দিল আমেরিকা।

তিন দিনের সফরে মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছেন ভারতে আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ক্যাথলিন স্টিফেনস। বুধবার মার্কিন কনসাল জেনারেলের বাড়িতে কয়েক জন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি জানান, বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে এখনও আশা ছাড়েনি আমেরিকা। তাঁর কথায়, “আমাদের কাছে পশ্চিমবঙ্গ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আমরা উৎসাহ হারাইনি।”

তবে এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করেন অস্থায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সেই চ্যালেঞ্জগুলি কী, সেই ব্যাপারে অবশ্য তিনি মুখ খোলেননি। যেমন কিছু খোলসা করেননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না, তা নিয়ে। ক্যাথলিন শুধু জানিয়েছেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে শুনেছেন।

জুন মাসে ভারতে আমেরিকার অন্তর্বর্তিকালীন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ক্যাথলিন। তার পরে প্রথম বার পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে তিনি মমতার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন কি না এবং চাইলে কী রকম সাড়া পেয়েছেন, সেই প্রশ্নের উত্তর ক্যাথলিন এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “আরও এক দিন এখানে আছি। ঠাসা সফরসূচি। কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা।”

ভারতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে গত মার্চে ইস্তফা দেন ন্যান্সি পাওয়েল। তার আগে ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় এসে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি। এই নিয়ে সেই সময়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, ক্যাথলিনের সঙ্গে মমতা দেখা করবেন কি না?

২০১২-র মে মাসে মহাকরণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করে গিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন। ওই বৈঠকের চার মাসের মাথায় খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করে কেন্দ্রের ইউপিএ-২ ছেড়ে বেরিয়ে আসে তৃণমূল। শুধু তা-ই নয়, মমতা-হিলারি বৈঠকের পরে সওয়া দু’বছর কেটে গেলেও পশ্চিমবঙ্গে মার্কিন লগ্নি ছিটেফোঁটা আসারও আভাস মেলেনি।

এত কিছুর পরেও আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মনে করেন, বাণিজ্য ও পর্যটনের মতো ক্ষেত্রে লগ্নি টানতে কলকাতাকে বহির্বিশ্বের কাছে ‘ঐতিহাসিক দুয়ার’ হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর আছে বলেও মন্তব্য করেছেন ক্যাথলিন।

ক্যাথলিন ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ছিলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। ঘটনাচক্রে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু মমতা এখনও সেই আমন্ত্রণে সাড়া দেননি।

সুযোগ পেলে হার্ভার্ড-এর প্রাক্তনী ক্যাথলিন কি মমতাকে ওই একই আমন্ত্রণ জানাবেন? “হার্ভার্ড-এর পক্ষ থেকে তো আমি ওই আমন্ত্রণ জানাতে পারি না। তবে মনে করি, ভারতের রাজ্যস্তরের নেতানেত্রীদের বেশি করে আমেরিকায় যাওয়া উচিত”উত্তর ক্যাথলিনের। তাঁর বক্তব্য, এই সুযোগে কলকাতার ‘ব্র্যান্ডিং’-এর সুযোগ রয়েছে। তাকে বিপণনের মোড়কে বিশ্বের দরবারে হাজির করা যেতে পারে, বিশেষ করে কলকাতার ঐতিহাসিক গুরুত্ব যখন অপরিসীম, যখন এখানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।

ক্যাথলিন আরও জানান, নরেন্দ্র মোদী বিপুল জনাদেশ নিয়ে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁর সরকারের প্রধান কাজই হল, ভারতের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলা। মোদী ও তাঁর সরকারকে আমেরিকা সহায়তা দেবে বলেও জানিয়েছেন ক্যাথলিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

america lost interest investing westbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE