E-Paper

আবাসে মেলেনি ঘর, শৌচালয়ে ঠাঁই বৃদ্ধার

বছর ছেষট্টির মিথিলা জানান, দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ার পর থেকে একা থাকেন। স্বামী মারা গিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি কাজ করে পেট চালান। চলতি মাস থেকে চালু হয়েছে বার্ধক্য ভাতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫২
এ ভাবে দিন গুজরান মিথিলা মাহাতোর।

এ ভাবে দিন গুজরান মিথিলা মাহাতোর। ছবি: সুজিত মাহাতো।

গত বছরের আশ্বিনে ঝড়-জলে ভেঙে পড়ে তাঁর মাটির বাড়ি। মাথা গোঁজার ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েতে। জুটেছে কেবল আশ্বাস আর একটি ত্রিপল। সেই থেকে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে তৈরি করে দেওয়া শৌচাগারই ঠাঁই পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুঁড়কু পঞ্চায়েতের সুন্দ্রাডি গ্রামের বৃদ্ধা মিথিলা মাহাতোর। ঘটনা ঘিরে ভোটের মুখে তরজায় জড়িয়েছে শাসক-বিরোধী।

রবিবার প্রচারের ফাঁকে ওই বৃদ্ধার খোঁজ নিতে গ্রামে যান পুরুলিয়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। তাঁর কটাক্ষ, “প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমানে শাসকদলের প্রার্থী এই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়েছিলেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতির রাজনৈতিক ক্ষেত্র হওয়া সত্ত্বেও ওই বৃদ্ধাকে অসহায় ভাবে দিন কাটাতে হচ্ছে।” প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় গরিবদের জন্য বাড়ি তৈরির যে টাকা দিয়েছেন, তা কোথায় গেল, প্রশ্ন তাঁর।

স্থানীয় পঞ্চায়েত সূত্রে তবে জানা যায়, ওই বৃদ্ধার নাম আবাস যোজনার তালিকাতেই নেই। কেন নেই, সদুত্তর মেলেনি। এমনকি ওই মহিলার দুর্দশার কথা তাঁর জানা নেই বলে দাবি তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান চাঁদমণি কড়া মুদির। স্থানীয় সিপিএম নেতা ধনঞ্জয় মাহাতোর যদিও অভিযোগ, ওই বৃদ্ধার বাড়ি যে এলাকায়, সেই বুথে দীর্ঘদিন ধরে সিপিএম জিতে আসছে। সেই ‘অপরাধে’ হয়তো আবাস যোজনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত
ওই বৃদ্ধা।

বছর ছেষট্টির মিথিলা জানান, দুই মেয়ের বিয়ে হওয়ার পর থেকে একা থাকেন। স্বামী মারা গিয়েছেন। বাড়ি বাড়ি কাজ করে পেট চালান। চলতি মাস থেকে চালু হয়েছে বার্ধক্য ভাতা। তবে নেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড। তাঁর কথায়, “ভোটের সময়ে রাজনৈতিক নেতারা আসেন। গাড়ি করে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যান। কিন্তু তার পরে আর কেউ খোঁজ নেন না। কত মাস হয়ে গেল। ত্রিপলের ছাউনির নীচে রান্না করি আর শৌচালয়ে কোনও মতে মাথা গুঁজে পড়ে থাকি। কষ্ট হলেই বা কী করব?”

আবাস যোজনার তালিকায় বৃদ্ধার নাম না থাকা নিয়ে পঞ্চায়েতের গাফিলতি মানছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতোও। তিনি বলেন, “ঘটনাটি কিছুটা জানি। ওই বৃদ্ধাকে একটি ত্রিপল দিতে বলেছিলাম পঞ্চায়েতকে। সেটা মনে হয় দেওয়া হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “তালিকায় নাম না থাকলে তো বাড়ি করে দেওয়ার উপায় নেই। আর আবাস যোজনার টাকা তো কেন্দ্রই আটকে রেখেছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

purulia PMAY woman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy