একেবারে বাঘের ডেরায় হানা দিয়েছেন হরিয়ানার বাসিন্দা সন্দীপ রমন! ফোনে যে মহিলাকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে, তিনি খোদ এক জন বিচারক!
ফোনে মহিলাদের অশ্লীল ভাষায় উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ভুরি ভুরি। অনেক ক্ষেত্রে ফাঁদ পেতে পুলিশ এমন যুবকদের ধরেও আনে। আইন মোতাবেক মাস দে়ড়েক জেল খেটে জামিনও পান তাঁরা। কিন্তু সন্দীপের কপাল মন্দ। কলকাতার এক মহিলা বিচারককে ফোনে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। জামিন মঞ্জুর দূরে থাক, তাঁকে হাজতে রেখেই শুরু হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া (কাস্টডি ট্রায়াল)।
বিচারক যেখানে নিজেই অভিযোগকারী, সেখানে তাঁর হয়ে কোনও আইনজীবী জামিনের আবেদন করতে রাজি হননি। আইন মেনে এক জন আইনজীবী সন্দীপকে সাহায্য করছেন। মহিলাদের উত্ত্যক্ত করায় অভিযুক্তের এ ভাবে কাস্টডি ট্রায়ালকে দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করছে আইনজীবী মহল।
২৮ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটে। ওই মহিলা বিচারক তখন আলিপুর আদালতে নিজের ঘরে বসে। ল্যান্ড ফোন বেজে ওঠে। ফোন তুলতেই এক পুরুষ কণ্ঠ হিন্দিতে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি দিতে থাকেন। বিরক্ত বিচারক ফোন রেখে দেন। মিনিট খানেক পরে ফের ফোন। বিচারকের নির্দেশে এ বার ফোন ধরেন শ্রীমন্ত কুমার নামে এক নিরাপত্তারক্ষী। তাঁর গলা শুনে উল্টো দিক থেকে ফোন রেখে দেওয়া হয়। ল্যান্ডলাইনে লাগানো সিএলআই (কলার্স লাইন আইডেন্টিফিকেশন) থেকে মেলে হরিয়ানার একটি নম্বর।
এর পরেই ওই বিচারক আলিপুরের মুখ্য বিচারকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। দায়ের করেন এফআইআরও। পুলিশ ২৬ সেপ্টেম্বর মধুবন থানা এলাকা থেকে সন্দীপকে গ্রেফতার করে। আলিপুর আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এফআইআরের ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে দু’টি জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। কিন্তু কলকাতায় আদালতে হাজির করার পরে কোনও আইনজীবী সন্দীপের পক্ষে সওয়াল না করায় তাঁর জামিন মেলেনি। মাস দুয়েক জেলে থাকার পরে পুলিশ চার্জশিট দেওয়ার পরে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চার্জশিটে অবশ্য দু’টি জামিন-অযোগ্য ধারাও যোগ করা হয়েছে।
আলিপুর আদালত সূত্রে খবর, আইনানুযায়ী অভিযুক্তের পক্ষে আইনজীবী উপস্থিত থাকার পরেই বিচার শুরু করা সম্ভব। তাই আলিপুর আদালতের এক আইনজীবী পঞ্চানন প্রামাণিককে অভিযুক্তের পক্ষে নিয়োগ করা হয়। পঞ্চাননবাবু জানান, আলিপুরের মু্খ্য বিচারকের এজলাসে বিচার শুরু হয়েছে। আইনজীবীদের একাংশের কথায়, ‘‘বিচারের সময়ে দরজা-জানলা বন্ধ থাকছে। ক্যামেরার সামনে বিচার প্রক্রিয়া চলছে।’’
সন্দীপের কাকা দুর্গাপুরের বাসিন্দা দলবীর রমন অবশ্য ভাইপোর কোনও দোষ দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘সন্দীপ বিভিন্ন সংস্থায় রক্ষীর কাজ করত। ওর মতো ছেলে মহিলাদের উত্ত্যক্ত করতেই পারে না। ওর স্ত্রী-সন্তানও রয়েছে।’’ দলবীরের অভিযোগ, সন্দীপের ফোন থেকে অন্য কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy