Advertisement
০২ মে ২০২৪
investigation

গুচ্ছ নালিশ, রাজ কলেজে তদন্তে দল

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ছাত্র-শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী’ নাম দিয়ে গত ২২ অক্টোবর সাত পাতার ওই অভিযোগ করা হয়।

বর্ধমান রাজ কলেজ।

বর্ধমান রাজ কলেজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৪৭
Share: Save:

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে মাস তিনেক আগে উচ্চ শিক্ষা দফতর ও রাজ্য সরকারের ‘ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ (ডিপিআই)-এ অভিযোগ জমা পড়েছিল। ‘দিদিকে বলো’য় ফোন করে কলেজ পরিচালনা থেকে টিউশন ফি নিয়েও অভিযোগ জানান অনেকে। শুক্রবার এই সবেরই তদন্তে ডিপিআই দফতরের যুগ্ম সচিব ও অডিটর-সহ চার সদস্যের একটি দল ঘুরে গেলেন বর্ধমান রাজ কলেজে।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ছাত্র-শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী’ নাম দিয়ে গত ২২ অক্টোবর সাত পাতার ওই অভিযোগ করা হয়। ১৫টি অনুচ্ছেদ জুড়ে নানা অভিযোগ করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে কিছু নথিও। প্রথম অনুচ্ছেদেই রয়েছে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। সেখানে বলা হয়েছে, কলেজের কোনও প্রস্তাবিত কাজের ব্যয় বরাদ্দ করা বা প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হয় না। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া, লক্ষাধিক টাকার দ্রব্য কেনা হয়। অভিযোগকারীদের দাবি, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই পাথর কেনে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ট্রাক-সহ সেই পাথরের দু’বার ওজন করা হয়েছে ১৪ ও ১৫ জুলাই। নথি অনুযায়ী, ওই দিন ৫৩ হাজার টাকারও বেশি পাথর কেনা হয়। অথচ, পুরোটাই বিজ্ঞপ্তি ছাড়া। ‘কোটেশন’ ও দরপত্র ডাকা নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, রাজ্য সরকার কলেজের দু’টি হস্টেলের দোতলা ভবন তৈরির জন্যে ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা নির্দিষ্ট খাতে খরচ করা হয়নি। অথচ, ‘ইউটিলাইজেশন’ শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, বেআইনি ভাবে নিয়োগ, অস্বাভাবিক হারে পড়ুয়াদের কাছে ‘টিউশন ফি’ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ‘অতিথি অধ্যাপক’ নিয়োগ নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তোলা হয়েছে। নির্দিষ্ট দু’জন ‘অতিথি অধ্যাপকে’র নিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। ‘দিদিকে বলো’য় অভিযোগ করা হয়েছে, দুই বর্ধমানের মধ্যে রাজ কলেজের ‘টিউশন ফি’ অত্যাধিক বেশি। ২০১৯ সালেই ৩৪ শতাংশ থেকে ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত ‘ফি’ বৃদ্ধি করেছিল কর্তৃপক্ষ।

এ দিন ওই সব অভিযোগের সারবত্তা খুঁজতে যুগ্ম সচিব অপর্ণা চক্রবর্তী, আশিস ঘোষ, অডিটর সুবোধ চরণ তরফদার ও চন্দ্রজিৎ মণ্ডলেরা বেলা ১টা নাগাদ রাজ কলেজে আসেন। সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে অধ্যক্ষের ঘরে বসেই একের পরে এক নথি দেখেন তাঁরা। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে তাঁরা জানান।

রাজ কলেজের অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডল বলেন, “এটা রুটিন তদন্ত। সব কিছুই ঠিক আছে।’’ তবে কলেজ পরিচালন সমিতির সদস্য শ্রীধর বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একাধিক জনের দাবি, ‘সাসপেন্ড’ শিক্ষক তারকেশ্বর মণ্ডলই এই সব মিথ্যা অভিযোগ করে কলেজকে অহেতুক বিব্রত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারকেশ্বরবাবু বলেন, “এ রকম অভিযোগ কেউ করেছে কি না জানি না। তদন্ত শুরু হয়েছে, সেটাও জানা নেই। তদন্তে কিছু বার হলে যেন শাস্তি হয়, এটাই চাইব।’’

ডিপিআই জয়শ্রী ঘোষ চৌধুরী কলকাতা থেকে ফোনে শুধু বলেন, “একটি দল বর্ধমানের রাজ কলেজে তদন্ত করতে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan Raj College Burdwan College Corruptions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE