Advertisement
০১ মে ২০২৪
medicine

Medicine Merchant: ওষুধ, খাবার নিয়ে পাশে রামকিশোর

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামকিশোরকে ফোনে খবর দেওয়া হলেই নানা ভাবে কোভিড-সহ নানা রোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।

সমাজসেবায় ব্যস্ত রয়েছেন নন্ডী গ্রামের রামকিশোর চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

সমাজসেবায় ব্যস্ত রয়েছেন নন্ডী গ্রামের রামকিশোর চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:১৬
Share: Save:

এলাকায় তাঁর পরিচয় প্রতিষ্ঠিত ওষুধ ব্যবসায়ী হিসেবে। কিন্তু ব্যবসার মূল মন্ত্র ‘লেনদেন’-এর পাশাপাশি, তিনি, পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার নন্ডী গ্রামের রামকিশোর চট্টোপাধ্যায় ২০২০-তে কোভিড পরিস্থিতির শুরু থেকেই কোভিড রোগীদের বাড়িতে ওষুধ, খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন। পাশাপাশি, এলাকায় ঘুরে-ঘুরে দরিদ্র, গৃহহীনদের কাছে মাঝেমধ্যেই খাদ্যসামগ্রীও দিয়ে আসছেন। প্রায় সব ক্ষেত্রে বিনামূল্যেই এই কাজ করছেন তিনি।

বছর ৫০-এর রামকিশোর রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক। পড়াশোনা করেছেন, আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন, রাজপুর নন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রায় ১২ বছর আগে জামুড়িয়া বাজারে ওষুধের দোকান খোলেন তিনি। তার আগে বর্ধমান এবং কৃষ্ণনগরে একটি মোটরবাইক সংস্থার ‘ডিস্ট্রবিউটর’-এর কাছে ম্যানেজারের কাজ করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামকিশোরকে ফোনে খবর দেওয়া হলেই নানা ভাবে কোভিড-সহ নানা রোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। কী ভাবে? চলতি বছরে এপ্রিলে অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ছিলেন নন্ডী গ্রামের বাসিন্দা রাজু নায়েক। তিনি বলেন, “ওই সময়ে রামকিশোরকে ফোনে ওষুধ থেকে খাদ্যদ্রব্য, যা বলেছি, সব এনে দিয়েছেন।” স্বচ্ছল পরিবারের রাজু পরে জিনিসপত্রের দাম মিটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে প্রসঙ্গ উঠতেই, রাজুর প্রতিক্রিয়া, “সব ঋণ তো আর দাম দিয়ে মেটানো যায় না।” পাশাপাশি, রঞ্জন নায়েক নামে এক জন জানান, এক সময় চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে কথা পর্যন্ত বলিয়ে দিয়েছিলেন রামকিশোর।

কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের বাপ্পা বাগদি, গৌর বাগদি, সাবিত্রী বাগদিরা। তাঁরা জানান, কিছু দিন আগে তাঁরা কোভিড আক্রান্ত থাকার সময়ে টানা ১৫ দিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাড়িতে এসে খাবার দিয়ে গিয়েছেন রামকিশোর। ওষুধও দিয়ে গিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, টানা চার মাস ধরে সপ্তাহে এক দিন করে খাদ্যসামগ্রী মিলছে রামকিশোরের থেকে, জানান পেশায় ভিক্ষুক মোহন ঘোষ।

কিন্তু কেন এমন উদ্যোগ? রামকিশোর জানান, ছাত্রাবস্থায় রামকৃষ্ণ মিশনে পড়ার সময়েই সমাজসেবাকে আদর্শ হিসেবে মেনে নেন। তিনি বলেন, “সমাজে কারও ন্যূনতম পাশে দাঁড়াতে পারলে, আত্মিক সুখ অনুভব করি। আগামী দিনে এ ভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।” তিনি জানান, এ সব কাজকর্ম করতে গিয়ে, গত এক বছরে এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।

রামকিশোরের বাড়িতে রয়েছেন মা শোভা, স্ত্রী মৌসুমী। একমাত্র ছেলে রাজদীপ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। স্ত্রী মৌসুমী বলেন, “ওঁর এই কাজে আমরাও পাশে থাকি সব সময়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, সব সময় যেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।” ছেলের কাজে খুশি মা শোভাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medicine COVID19 Social Work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE