Advertisement
১৮ মে ২০২৪

কাশেমনগরে `লুঠ মোচ্ছব’

অন্নভোগের পরে ন’টি হাঁড়িতে পায়েস রান্না হয়। তা ওই সমাধি মন্দির থেকেই নিবেদন করা হয় পাশের দীর্ঘসোঁয়া গ্রামের অধিকারী পরিবারের গোপীনাথের উদ্দেশে। কথিত আছে, বৈরাগ্যচাঁদ গোপীনাথের অন্যতম শিষ্য ছিলেন।

রাখা হচ্ছে ভোগ। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

রাখা হচ্ছে ভোগ। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:১৮
Share: Save:

ভোগ রান্নার পরে তা মাটির হাঁড়িতে করে রাখা থাকে চাটাইয়ের উপরে। গোপীনাথের উদ্দেশে তা নিবেদনের পরেই গ্রামবাসীরা লুঠপাট করেন সেই ভোগ। বহু বছর ধরে এই ‘লুঠ মচ্ছব’ চলে আসছে মঙ্গলকোটের কাশেমনগরে। বুধবার বৈষ্ণব সাধক বৈরাগ্যচাঁদের প্রসাদের জন্য হল সেই ‘লড়াই’।

জনশ্রুতি, মাঘ মাসের মাকুরি সপ্তমী তিথিতে বৈরাগ্যচাঁদ নামে ওই সাধক জীবন্ত সমাধি নিয়েছিলেন এখানে। তাঁর উদ্দেশেই অন্নভোগ নিবেদন করা হয় এ দিন। সেবাইত চন্দ্রশেখর দাস জানান, এই মহোৎসবে মন্দির চত্বরেই লম্বা উনুনে অন্ন ও তরকারি রান্না হয়। এক সঙ্গে ন’টি হাঁড়ি বসানো হয়। জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয় বেলকাঠ। সেই অন্নভোগ মন্দিরে তালপাতার চাটাইয়ে রাখা হয়। তরকারি রাখা হয় মাটির মধ্যে সামান্য গর্ত করে শালপাতায়। অন্নভোগের পরে ন’টি হাঁড়িতে পায়েস রান্না হয়। তা ওই সমাধি মন্দির থেকেই নিবেদন করা হয় পাশের দীর্ঘসোঁয়া গ্রামের অধিকারী পরিবারের গোপীনাথের উদ্দেশে। কথিত আছে, বৈরাগ্যচাঁদ গোপীনাথের অন্যতম শিষ্য ছিলেন।

ভোগ নিবেদন করার পরেই চাটাইয়ে রাখা ভোগ ‘লুঠ’ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। আসেন দীর্ঘসোঁয়ার বাসিন্দারাও। এই উৎসবে দীর্ঘদিন ধরে আসা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের দাবি, বিভিন্ন জায়গায় বৈষ্ণবদের মধ্যে এই ধরনের লুঠ মচ্ছব প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাধকের সমাধি মন্দির তৈরি করে দেন কাশেমনগরের জমিদারের কোনও পূর্বপুরুষ। জমিজমাও দান করেছিলেন। প্রথা গ্রামের সংখ্যালঘু মানুষজনও এই সাধককে শ্রদ্ধা করেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলাও বসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Traditional ceremony
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE