দিন তিনেক আগেকার ঘটনা। সন্ধ্যা নাগাদ বর্ধমান শহরের বীরহাটা মোড়ের কাছে এক কিশোরীকে কাঁদতে দেখেন জেলা আইনি পরিষেবা সংস্থার এক স্বেচ্ছাসেবক। কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদের পরে ওই নাবালিকাকে বর্ধমান থানায় নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর দাবি, নানা ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে মেয়েটির উপর। কিন্তু পুলিশের দাবি, অভিযোগ জানাতে রাজি হয়নি ওই কিশোরী। ওই স্বেচ্ছাসেবকও অভিযোগ অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যান। ফলে পুরো ঘটনার শোনার পরে ওই কিশোরীকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। চাইল্ডলাইন আবার জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির কাছে নিয়ে যায়। বর্তমানে ওই নাবালিকা শহরের ঢলদিঘির কাছে একটি সরকারি হোমে আছে।
মঙ্গলবার জেলা শিশুকল্যাণ কমিটির সভাপতি দেবাশিস নাগ বলেন, “আমরা ওই নাবালিকার কাউন্সেলিং করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। জেলা আইনি পরিষেবা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সংস্থার সম্পাদক কলকাতায় থাকায় নির্দেশ কার্যকর হয়নি।” তাঁর আশা, আজ, বৃহস্পতিবার আইনি পরিষেবা সংস্থার জেলা সম্পাদক পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবেন।
জানা গিয়েছে, বীরভূমের কেঁদুলির কাছে একটি গ্রামে ওই নাবালিকার বাড়ি। বছর ছয়েক আগে বর্ধমান শহরের এক চিকিৎসকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে শুরু করে সে। ওই নাবালিকার বাবা-মাও বর্ধমান শহরে থাকেন। অথচ গত কয়েক বছর ধরে মা-মেয়ের মুখ দেখাদেখি হয়নি। আইনি পরিষেবা সংস্থার ওই স্বেচ্ছাসেবক নির্মলেন্দু জুঁই বুধবার বলেন, “সোমবার রাতে মেয়েটি বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। তার কাছ থেকে নির্যাতনের ঘটনা শুনে থানায় নিয়ে যাই। সেখানে আরও ভয়ঙ্কর সব ঘটনার কথা জানায় সে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ জানাতে রাজি হয়নি।” তাঁর দাবি, “আমি তখন পুলিশের কাছে অভিযোগ করব বলি। এফআইআর না নিয়ে পুলিশ আমাকে পরামর্শ দেয়, নাবালিকার সুরক্ষার জন্য চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হোক। চাইল্ডলাইন কাউন্সেলিং করে সে রকম বুঝলে অভিযোগ করবে। ওই রাতেই নাবালিকাকে চাইল্ডলাইনের হাতেই তুলে দেওয়া হয়।” পুলিশ অভিযোগ নিল না কেন? বর্ধমান থানার দাবি, নাবালিকার নামটা ঠিকমতো লেখা নেই দেখে ওই স্বেচ্ছাসেবককে সঠিক ভাবে নাম লিখতে বলা হয়। তিনি খোঁজ নিয়ে আসছি বলে বেপাত্তা হয়ে যান। বুধবার বিকেলে জেলাশাসকের কাছ থেকে ওই অভিযোগ শুনে জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল আইসি শান্তনু মিত্রকে ডেকে পাঠান। পুলিশ সুপারকে আইসি জানিয়েছেন, অসম্পূর্ণ অভিযোগটি তাঁদের কাছে রয়েছে। ওই স্বেচ্ছাসেবক চলে যাওয়ার জন্যই চাইল্ড লাইনকে ডেকে পুলিশ দিয়ে নাবালিকার সুরক্ষার জন্য হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy