Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ফের ধোঁয়া, পুনর্বাসন চেয়ে বাধা খনির কাজে

ইসিএলের পরিত্যক্ত ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনি থেকে ধোঁয়া ও আগুন বেরোনোয় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে পুনর্বাসনের দাবিতে নিউকেন্দা খোলামুখ খনির কাজ ঘণ্টা পাঁচেক বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবশ্য আশ্বাস, আতঙ্কের কারণ নেই। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কেন্দায় খনিতে ধোঁয়া। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

কেন্দায় খনিতে ধোঁয়া। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৯
Share: Save:

ইসিএলের পরিত্যক্ত ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনি থেকে ধোঁয়া ও আগুন বেরোনোয় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে পুনর্বাসনের দাবিতে নিউকেন্দা খোলামুখ খনির কাজ ঘণ্টা পাঁচেক বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ইসিএল কর্তৃপক্ষের অবশ্য আশ্বাস, আতঙ্কের কারণ নেই। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জামুড়িয়ার কেন্দা এরিয়ার নিউকেন্দা কোলিয়ারির অধীনে ওয়েস্ট কেন্দা খোলামুখ খনি চালু হয়েছিল ২০১৪ সালে। গত ১ এপ্রিল খনিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পরে এক কিলোমিটার দূরে নিউকেন্দা খোলামুখ খনি চালু করা হয়। চার মাস আগে বন্ধ খনিটি থেকে ধোঁয়া ও আগুন বেরোনোয় সংস্থা মাটি ভরাট করে। সেখানেই শনিবার থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। সোমবার গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে থাকে।

ঘটনাস্থল থেকে প্রায় একশো মিটার দূরে রয়েছে কয়েকটি পাড়া, শ’তিনেক পরিবারের বাস। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ রুইদাস, বিপিন রুইদাসেরা জানান, সোমবার ভোরে দেখা যায়, পরিত্যক্ত খনির নানা জায়গা থেকে বিরাট আকারে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। লাগোয়া তিনটি পাড়ার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ধোঁয়ার গন্ধে শ্বাষকষ্ট হয়। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, ভূগর্ভের আগুনের জেরে পুরো এলাকা ধসে পড়তে পারে।

সকাল ১০টা পর্যন্ত সংস্থা খনি কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি, এই অভিযোগে এলাকার বাসিন্দারা খনির কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান। জামুড়িয়া ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কেন্দা গ্রাম ও লাগোয়া এলাকা ১৯৯৮ সালে ধসপ্রবণ চিহ্ণিত হয়। বারবার ধোঁয়া ও ধসের আশঙ্কার কারণে দু’টি ভূগর্ভস্থ খনি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরে ওয়েস্ট কেন্দা-সহ তিনটি খোলামুখ খনি চালু করা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’টি পরিত্যক্ত খনি বিধি মেনে ভরাট করা হয়নি। যার জেরে খোলামুখ খনিতে পড়ে থাকা কয়লা ক্রমাগত গরম হয়ে আগুন ধরে যাচ্ছে।

খনি কর্তৃপক্ষ দ্রুত দাবিপূরণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। কেন্দা এরিয়ার জিএম নারায়ণ দাস জানান, এ নিয়ে একই দাবিতে ৮ বার কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখানো হল। মহকুমাশাসক সম্প্রতি বাসিন্দাদের জানিয়েছেন, পুনর্বাসন দু’টি ধাপে ভাগ করে দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ে খনির অদূরে ও দ্বিতীয় পর্যায়ে দূরের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে। জিএম বলেন, ‘‘তার পরেও কেন আন্দোলন বুঝতে পারছি না। আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছি। কারণ, এর জেরে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে গিয়েছে সংস্থার।”

ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, নিউ কেন্দা ভূগর্ভস্থ কোলিয়ারির উপরে অবৈধ ভাবে কয়লা কেটে নেওয়ায় মাটির নীচে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন মুক্ত করতেই ২০১৪ সালে ওয়েস্ট কেন্দা ও তার পরে একটি প্যাচ চালু করা হয়েছিল। ওই দু’টি জায়গায় সংস্থার জমি শেষ হয়ে যাওয়ায় কয়লা তোলা বন্ধ রাখা হয়। পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। এক কিলোমিটার দূরে নিউকেন্দা খোলামুখ খনি চালুর পরে আবার জমি অধিগ্রহমের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবার ওই দু’টি বন্ধ খনি সম্প্রসারণ করে কয়লা কাটা শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘‘কয়লা কাটা বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ছিদ্র দিয়ে অক্সিজেন ঢুকে কয়লার সংস্পর্শে আসায় ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তাতে আতঙ্কের কিছু নেই। ভরাট করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rehabilitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE