Advertisement
E-Paper

ঠান্ডা বাড়তেই কার্যত ঘরবন্দি প্রবীণেরা

জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুদিন ধরেই ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। দুর্গাপুর শহরে রয়েছেন বহু প্রবীণ দম্পতি।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫০
শীতের ভোরে প্রাতর্ভ্রমণ। দুর্গাপুরের বীরভানপুর এলাকায়। ছবি: বিকাশ মশান

শীতের ভোরে প্রাতর্ভ্রমণ। দুর্গাপুরের বীরভানপুর এলাকায়। ছবি: বিকাশ মশান

গত কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা ভালই পড়েছে। শীতের আমেজ উপভোগ করছেন অনেকেই। তবে প্রবীণদের কাছে এই কনকনে ঠান্ডা মোটেই উপভোগ্য নয়। তাঁদের সাহায্য করার মতো কেউ না থাকলে, কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুদিন ধরেই ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। দুর্গাপুর শহরে রয়েছেন বহু প্রবীণ দম্পতি। কর্মসূত্রে তাঁরা এসেছিলেন এই শহরে। অবসরের পরে পাকাপাকি ভাবে থেকে গিয়েছেন এখানে। তবে তাঁদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা শেষে চাকরি পেয়ে পাড়ি দিয়েছেন অন্যত্র। বাড়িতে মাত্র দু’জন। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ঠান্ডায় অধিকাংশ প্রবীণের নড়াচড়া কমে যায়। বেড়ে যায় ব্যথা-বেদনাও। চিকিৎসকেরা জানান, এই সময় মূলত ‘অস্টিও আর্থ্রাইটিস’, ‘রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস’ ইত্যাদির ব্যথা বেশ কিছুটা বাড়ে। আবার খুব শীতে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়াকে ‘হাইপোথার্মিয়া’ বলে। তাঁদের পরামর্শ, দ্রুত শরীর গরম করার ব্যবস্থা না নিলে বিপদ বাড়তে পারে।

বিধাননগর এলাকার একটি আবাসনে সস্ত্রীক থাকেন অবসরপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার কর্মী রামকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি জানান, শীতের জন্য বাইরে বেরোতে পারছেন না। ঘরের ভিতরে থেকে থেকে হাড়ের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন। সিটি সেন্টার এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা সন্তোষ রায় জানান, পাড়ার এক যুবক নিয়মিত খোঁজখবর নেন। তিনিই বাজার করে এনে দেন। আমেরিকা প্রবাসী হিরন্ময় রায় জানান, তাঁর বাবা-মা দুর্গাপুরে থাকেন। সম্প্রতি ঠান্ডায় বাবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। উপায় না পেয়ে তিনি সমাজমাধ্যমে সাহায্য চেয়ে বার্তা দেন। আধ ঘণ্টার মধ্যে কয়েকজন বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবাকে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। সিটি সেন্টার এলাকায় এ ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে থাকে ‘সিনিয়র সিটিজ়েন ওয়েলফেয়ার ফোরাম’। সংগঠনের সম্পাদক পীযূষ মজুমদার জানান, অনেকে ওষুধ এনে দেওয়ার অনুরোধ করেন। খবর পাওয়া মাত্রই ব্যবস্থা করা হয়।

প্রবীণ নাগরিকদের পাশে থাকার জন্য আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের পুলিশের তরফে ‘নমন’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সাধ্যমতো প্রবীণদের পাশে থাকার চেষ্টা করা হয় এই প্রকল্পে। ফোন নম্বর ছাড়াও, একটি মোবাইল ‘অ্যাপ্লিকেশন’ও রয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, লাগাতার প্রচার চালানোর পরেও, এই প্রকল্প সম্পর্কে জানেন না প্রবীণদের অনেকেই। ফলে তাঁরা বঞ্চিত রয়ে যাচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সাবধানতা নিজেদেরই নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাড়ির ভিতরে মোজা পরে থাকতে হবে। ঠান্ডা মেঝের সঙ্গে সরাসরি পায়ের যোগ না থাকাই ভাল। প্রতিদিন নিয়ম করে দরকার হলে সামান্য গরম জলে স্নান করতে হবে। তা না হলে ত্বক রুক্ষ্ম হয়ে যাবে। পর্যাপ্ত খেতে হবে। এই সময়ে খুব ভোরে বা রাতের দিকে বাইরে বেরনো যাবে না। যদি বেরোতেই হয়, তা হলে সারা শরীর ভাল করে ঢেকে নিতে হবে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল বলেন, “শীতে বয়স্কদের জন্য বিশেষ যত্নের প্রয়োজন রয়েছে। সাহায্য করার কেউ না থাকলে, নিজেদেরই বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে।” (শেষ)

Durgapur Severe cold
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy