Advertisement
E-Paper

ছাত্রীর অপমৃত্যুতে অশান্তি দুর্গাপুরে

হস্টেলের বন্ধ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত সহপাঠী ছটফট করছেন, জানলা দিয়ে এ দৃশ্য দেখেই কলেজের নানা কর্তাকে ফোন করেছিলেন ছাত্রীরা। অভিযোগ, ফোন ধরেননি কেউ। দরজা ভেঙে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও দেবপ্রিয়া পালকে (২০) বাঁচাতে না পারার ক্ষোভ চেহারা নিল আক্রোশের। দুর্গাপুরের বেসরকারি প্যারামেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৮
দুর্গাপুরের প্যারামেডিক্যাল কলেজে ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: বিকাশ মশান।

দুর্গাপুরের প্যারামেডিক্যাল কলেজে ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: বিকাশ মশান।

হস্টেলের বন্ধ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত সহপাঠী ছটফট করছেন, জানলা দিয়ে এ দৃশ্য দেখেই কলেজের নানা কর্তাকে ফোন করেছিলেন ছাত্রীরা। অভিযোগ, ফোন ধরেননি কেউ। দরজা ভেঙে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও দেবপ্রিয়া পালকে (২০) বাঁচাতে না পারার ক্ষোভ চেহারা নিল আক্রোশের। দুর্গাপুরের বেসরকারি প্যারামেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই আবাসিক ছাত্রীদের ফোন কেউ, কেন ধরলেন না, সে ব্যাপারে মুখে কুলুপ কলেজ কর্তৃপক্ষের। অধ্যক্ষ সুদীপ্ত ঘোষাল শুধু জানান, ঘটনার তদন্তে কমিটি গড়া হয়েছে।

দুর্গাপুরের বিধাননগরে এই কলেজটি চালু হয় ২০০২ সালে। হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট, নিউট্রিশন-সহ নানা বিষয়ে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা হয়। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা হস্টেল রয়েছে কলেজ চত্বরে। আবাসিক ছাত্রীরা জানান, নিউট্রিশন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী, বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা দেবপ্রিয়া বৃহস্পতিবার রাতে ঘরে একা ছিলেন। মাঝরাতে গোঙানির শব্দ শুনে ছাত্রীরা ছুটে গিয়ে জানালা দিয়ে দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে ওড়নার ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায় ছটফট করছেন দেবপ্রিয়া। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।

আবাসিক ছাত্রীরা জানান, অসুস্থতার জন্য ওয়ার্ডেন রাতে হস্টেলে ছিলেন না। তাই তাঁরা কলেজের নানা আধিকারিককে ফোন করতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, কেউ ফোন ধরেননি। শেষে নিরাপত্তারক্ষীর সাহায্যে দরজা ভেঙে সহপাঠীরা দেবপ্রিয়াকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে ডাক্তারেরা ছাত্রীটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এর পরেই কলেজে ফিরে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রীরা। যোগ দেন ছাত্রেরাও। সেই সময়ে পড়ুয়াদের একাংশ কলেজের কিছু ঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। ভাঙা হয় কলেজ চত্বরে রাখা চারটি গাড়ি। খবর পেয়ে পুলিশ যায়। শুক্রবার সকালেও কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখান ছাত্রছাত্রীরা। তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের অভিযোগ, “একে তো ঘরের তালা ভেঙে দেবপ্রিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে, তার উপরে ছাত্রীদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে হস্টেলের গেটও খুলে দেয়নি কেউ। কে বলতে পারে সেটুকু সহযোগিতা পেলে মেয়েটা বেঁচে যেত না?”

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন কলেজে যান দেবপ্রিয়ার বাবা দিলীপকুমার পাল। তিনি বলেন, “রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ফোন করে মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিল মেয়ে। তখনও স্বাভাবিক ছিল। কেন এমন ঘটল, বুঝতে পারছি না।” তাঁর ক্ষোভ, এ দিন কলেজে পৌঁছে কর্তৃপক্ষের কারও দেখা পাননি। মেলেনি কোনও সহযোগিতাও।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার তদন্তে ডেপুটি ডিরেক্টর এবং বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের নিয়ে একটি কমিটি গড়া হচ্ছে। অধ্যক্ষ সুদীপ্তবাবুর দাবি, ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে হস্টেলে বেশ কিছু বিধিনিষেধ রাখা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা তাঁদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, “ছাত্রীটির মৃত্যু খুবই দুঃখজনক খবর। কিন্তু তার পরে কিছু পড়ুয়ার রোষ যে ভাবে কলেজের সম্পত্তির উপরে গিয়ে পড়েছে, তা-ও একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়।”

unnatural death police Burdwan Security agitation Durgapur paramedical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy