Advertisement
০৩ অক্টোবর ২০২৪
Anubrata Mondal

অনুব্রত-সহগলের আবার ১৪ দিনের জেল হেফাজত! কেষ্টকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতিও দিল আদালত

আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর নির্দেশ, সিবিআই আধিকারিকরা চাইলে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।

দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সঙ্গে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত।

দেহরক্ষী সহগল হোসেনের সঙ্গে বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত। ফাইল চিত্র ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৪২
Share: Save:

গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর দেহরক্ষী সহগল হোসেনকে আবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলকে সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবেন সিবিআই আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার শুনানি চলাকালীন সিবিআইকে অনুমতি দিলেন আসানসোলের বিশেষ আদালত। আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীর নির্দেশ, সিবিআই আধিকারিকরা চাইলে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সিবিআইয়ের তরফে সংশোধনাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে এই অনুমতি দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, এই মামলায় চার্জশিট দেওয়ার পর আরও ৪৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সাক্ষী হিসাবে তাঁদেরও নাম রাখা হয়েছে বলেও আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানিয়েছেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৯ জানুয়ারি।

গরু পাচারকাণ্ডে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের করা মামলায় অনুব্রতকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়েছিল বৃহস্পতিবার। আসানসোল সংশোধনাগার থেকে সকাল ১১টা নাগাদ আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় অনুব্রতকে।

প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় এর আগে অনুব্রতকে আদালতে পেশ করা হলে আদালত চত্বরে অনুব্রত-অনুগামীদের দেখা মিলত। কিন্তু বৃহস্পতিবার দেখা গেল এর বিপরীত ছবি। অনেকটাই খালি ছিল আদালত চত্বর।

গত বছরের ১১ আগস্ট অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি) গরু পাচারকাণ্ডে তদন্ত করছে। তদন্তের স্বার্থে অনুব্রতকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে ইডি। সেই অনুমতিও ইডি পেয়েছিল। কিন্তু দিল্লি যাওয়ার আগে বিভিন্ন আইনি জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় অনুব্রতের দিল্লি যাওয়া আটকে যায়। অনুব্রতকে ইডি নিজেদের হেফাজতে নিলেও খুনের চেষ্টার মামলায় রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল নেতা। পরে জামিন পেয়ে রামপুরহাট জেল থেকে আবার আসানসোল জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। যদিও ইডির দাবি, অনুব্রতের দিল্লি যাওয়া আটকাতে ইচ্ছা করে এই আইনি জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ইডি সেই সমস্ত তথ্য জোগাড় করেছে বলেও দাবি করেছে।

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রতের করা জামিনের মামলাও খারিজ হয়ে গিয়েছে। সিবিআই উচ্চ আদালতে অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা অনুব্রতের জামিনের বিরোধিতা করে আবার প্রভাবশালী তত্ত্ব টেনে আনে। জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই এ-ও জানায়, বগটুইকাণ্ডে অনুব্রতের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার কেষ্টর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালত। বুধবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘তদন্ত যে পর্যায়ে রয়েছে, তা বিবেচনা করে এখনই ওঁর জামিন মঞ্জুর করা হচ্ছে না।’’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে অনুব্রতকে ‘রাজনৈতিক দৈত্য’ (পলিটিক্যাল জায়ান্ট) বলেও মন্তব্য করা হয়। সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, জামিন পেলে সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন অনুব্রত। এর পর মঙ্গলবার রায়দান স্থগিত রাখে উচ্চ আদালত। অবশেষে বুধবার তাঁর আবেদন খারিজ করে কলকাতা হাই কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE