Advertisement
E-Paper

কমছে সহকারী, খরচের বহরেও বিপাকে শিল্পীরা

জিনিসপত্রের দাম বড়ে যাওয়ায় বেড়েছে তৈরির খরচ। কিন্তু দাম বাড়ালে ক্রেতার মুখ ভার। ও দিকে আবার সহকারীর টানাটানিতে সময়ে কাজ শেষ করাই মুশকিল। পুজোর প্রতিমা তৈরি করতে তাই নানা বিষয় নিয়েই নাজেহাল শিল্পীরা। এত পরিশ্রম করেও লক্ষ্মীলাভ হবে কি না, সে চিন্তা রেখেই দিনরাত এক করে চালিয়ে যেতে হচ্ছে কাজ।

অর্পিতা মজুমদার ও বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩০

জিনিসপত্রের দাম বড়ে যাওয়ায় বেড়েছে তৈরির খরচ। কিন্তু দাম বাড়ালে ক্রেতার মুখ ভার। ও দিকে আবার সহকারীর টানাটানিতে সময়ে কাজ শেষ করাই মুশকিল। পুজোর প্রতিমা তৈরি করতে তাই নানা বিষয় নিয়েই নাজেহাল শিল্পীরা। এত পরিশ্রম করেও লক্ষ্মীলাভ হবে কি না, সে চিন্তা রেখেই দিনরাত এক করে চালিয়ে যেতে হচ্ছে কাজ।

শিল্পীরা জানান, বাঁশ, খড়, সুতো, পেরেক থেকে রঙ, বার্নিশ, জরি, চুমকি— প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাই প্রতিমা তৈরির খরচ বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। মৃৎশিল্পীদের দাবি, মণ্ডপের জন্য কয়েক লক্ষ টাকা ঢাললেও প্রতিমার জন্য বেশি খরচ করতে রাজি হন না বেশির ভাগ পুজো উদ্যোক্তা। বেশি দাম চাইলে প্রতিমার খোঁজে অন্যত্র চলে যান। আবার রোজগার কমে যাওয়ায় সহকারীদের চাহিদা মতো বেতন দিতে পারছেন না শিল্পীরা। তাতে সহকারী পেতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে বলেও জানান তাঁরা।

দীর্ঘদিন ধরেই আড়রা কালীবাড়ির মোড়ের কাছে প্রতিমা তৈরি করেন রাজেশ সাহা। বছরে তিন মাস তাঁর কাছে মোট ১৪ জন কাজ করেন। রাজেশবাবুর দাবি, খরচের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিমার দাম না বাড়ায় বিক্রির পরে লাভের মুখ প্রায় দেখতেই পান না। আগের বার পাঁচটি মূর্তি বিক্রি হয়নি। এ বার তাই যতগুলি মূর্তির বরাত পেয়েছেন, সে ক’টিই গ়ড়ছেন। মূর্তি তৈরির চেয়ে অন্যত্র ঠিকা শ্রমিকের কাজ করলে এখন রোজগারের নিশ্চয়তা বেশি বলে আক্ষেপ করেন তিনি।

খুঁজেও সহকারী না মেলায় বাধ্য হয়ে এ বার নিজের গ্রামে কাজের বরাত না নিয়ে অন্যত্র কাজ করছেন কাঁকসার বনকাটি গ্রামের মৃৎশিল্পী সহদেব সূত্রধর। তিনি জানান, মূর্তি তৈরির কাজ করে এখন আর তেমন আয় হয় না। কাজও মেলে বছরে মাস তিনেক। তাই সারা বছর কাজ মেলায় এখন গ্রামের অধিকাংশ যুবক অন্য নানা পেশায় চলে যাচ্ছেন। রোজগার কমায় নতুনরা তেমন কেউ মূর্তি তৈরিতে সহকারী হিসেবে বা নতুন করে মৃৎশিল্পীর পেশায় আসতে চাইছে না। একই মত দুর্গাপুরের এসবি মোড় এলাকার ভুবন দে, গ্যারাজ মোড় এলাকার দীপক দাস, কৃষ্ণ পালের মতো মৃৎশিল্পীদের।

দুর্গাপুর জেকে পাল লেনের তপন পাল এ বার ৩৬টি প্রতিমা তৈরির বরাত নিয়েছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত সহকারী না পাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ তাঁর কপালেও। তপনবাবু জানান, সহকারী হিসেবে ২৫ জন কাজ করছেন। তাঁদের অধিকাংশই পুরনো। নতুনদের এই কাজের প্রতি অনীহা কিছুটা দুশ্চিতায় ফেলেছে বলে জানান তিনি। শহরের মৃৎশিল্পীদের মতে, বছর কয়েক কাজ করলেই প্রতিমা সাজিয়ে তোলা, বিভিন্ন মডেল তৈরি, রঙের কাজ পাওয়া যায়। কিন্তু এই কাজ করতে গেলে যে ধৈর্য লাগে, তা সবার নেই। কম রোজগারের পাশাপাশি সেটিও এই পেশায় আসার ক্ষেত্রে বাধা হচ্ছে বলে মত তাঁদের।

idol makers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy