Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সমস্যা নিয়েই ৫০-এ পা স্কুলের

প্রতিদিন কয়েক’শো ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে সেখানে। শিক্ষিক, শিক্ষিকারাও মাঠের প্রান্তের স্টাফ রুম থেকে রাস্তা পেরিয়ে ক্লাসে আসেন। প্রাণ হাতে নিয়েই ভাঙা ছাদ, প্লাস্টার ওঠা, ইট বেরনো দেওয়ালের ঘরে চলে লেখাপড়া। আজ, মঙ্গলবার এমন অবস্থা নিয়েই হাফ সেঞ্চুরি করবে বর্ধমান রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ।

এ ভাবেই চলছে বর্ধমানের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই চলছে বর্ধমানের রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫৩
Share: Save:

মাঠ বরাবর গিয়েছে পিচের রাস্তা। এক প্রান্তে রয়েছে কয়েকটি ভাঙাচোরা ঘর। সেখানেই ৫০ বছর ধরে চলছে স্কুল।

প্রতিদিন কয়েক’শো ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে সেখানে। শিক্ষিক, শিক্ষিকারাও মাঠের প্রান্তের স্টাফ রুম থেকে রাস্তা পেরিয়ে ক্লাসে আসেন। প্রাণ হাতে নিয়েই ভাঙা ছাদ, প্লাস্টার ওঠা, ইট বেরনো দেওয়ালের ঘরে চলে লেখাপড়া। আজ, মঙ্গলবার এমন অবস্থা নিয়েই হাফ সেঞ্চুরি করবে বর্ধমান রেলওয়ে বিদ্যাপীঠ।

১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই স্কুলটি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ দ্বারা স্বীকৃত। প্রথমে রেলের কিছু পরিত্যক্ত ঘরে মূলত রেলের কর্মীদের ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুলটি চালু হয়। পরে অবশ্য বর্ধমান শহরের ছ’নম্বর ওয়ার্ডের অন্যতম স্কুল হয়ে ওঠে এটি। তবে পরিকাঠামোর হাল ফেরেনি। স্কুলের টিচার ইনচার্জ অরূপকুমার সাহা বলেন, ‘‘প্রায় তিন বিঘে জায়গা নিয়ে স্কুল। পুরোটাই রেলের জমি। ফলে স্কুলের কোনও নথিপত্র নেই। সেই কারণে কোনও নির্মাণকাজও করা যায় না।’’ তাঁর দাবি, স্কুলের কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। ফলে দিনভরই বহিরাগতদের আনাগোনা, গরু-ছাগল চরে বেড়ায় স্কুলে। আবার স্কুলের মাঝখান দিয়ে রেল কলোনিতে যাওয়ার রাস্তায় সারাদিন লেগে থাকে বাইক, সাইকল, রিকশার যাতায়াত। ফলে যেমন পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তেমনি বিঘ্ন ঘরে মনসংযোগে।

গিয়ে দেখা যায় ঘরগুলির অবস্থাও তথৈবচ। রাস্তার এক প্রান্তে কয়েকটি পুরনো ঘর এবং মাঠের অন্যদিকে দুটি ঘর মিলে স্কুল। তার মধ্যেই দুটি ঘরে প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকেরা বসেন। সব ঘরের চাল অ্যাসবেসটসের। তাও ভাঙা। ফলে গরমে গলদ্ঘর্ম অবস্থায় পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় শ’পাঁচেক পড়ুয়া পড়াশোনা করে। এক শিক্ষক অনিন্দ্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সমস্যা সমাধানের ইচ্ছে থাকলেও করা যায় না। কারণ রেল তার জায়গায় কিছু করার অনুমতি দেয় না। আবার কোনও নথি না থাকায় সাংসদ, বিধায়কদের থেকেও সাহায্য মেলে না।’’ টিচার ইনচার্জের দাবি, ‘‘জমি ছাড়াও স্কুলের বিদ্যুৎ ও জল দেয় রেল। সেখানেও সমস্যা হয়।’’ আগামী দিনে রেল জমি ফেরত নিলে স্কুলই উঠে যাবে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। তিনি জানান, রেলমন্ত্রী, জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরে যাওয়া হয়েছে। লাভ হয়নি।

এই সব সমস্যার মধ্যেই স্কুলের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। শিক্ষিকা স্বরূপা দাসের দাবি, তিন দিনের অনুষ্ঠানের জন্য তাঁরা কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। ছাত্রছাত্রীদের কাছে নেওয়া সামান্য অর্থ ও নিজেদের উদ্যোগেই অনুষ্ঠান হচ্ছে।

জেলা স্কুল পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রয়োজনে রেল বা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Education School Burdwan Railway Vidyapith School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE