বেআইনি হুকিং-সহ নানা কারণে গত আর্থিক (২০১৭-’১৮) বছরে পূর্ব বর্ধমানে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ২৭৩ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা। বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে গিয়ে গড়ে রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে ৫৩.৮৬ শতাংশ। অর্থাৎ, ১০০ টাকার বিদ্যুৎ বিক্রি করে পূর্ব বর্ধমান থেকে বণ্টন সংস্থা পাচ্ছে ৪৬ টাকা! সোমবার রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার সঙ্গে জেলা প্রশাসনের একটি বৈঠকে ওই তথ্য উঠে এসেছে।
বণ্টন সংস্থার কর্তারা মানছেন, চোরাগোপ্তা বিদ্যুৎ নেওয়ার প্রবণতা জেলা জুড়েই রয়েছে, তা জানা ছিল। কিন্তু, সেই প্রবণতার ফলে সরকারি কোষাগারের লোকসান তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মূলত চাষের মরসুমে হুকিং করে সাবমার্সিবল পাম্প চালানোর প্রবণতাই রাজস্বের বেশি ক্ষতি করেছে। বিদ্যুৎ-কর্তাদের দাবি, জেলার ১৯টি সহকারী ইঞ্জিনিয়ারের দফতর থেকে ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে বিদ্যুৎ চুরি সংক্রান্ত ৮৩৬টি এফআইআর করা হয়েছিল। একটি ঘটনাতেও পুলিশ গ্রেফতার কাউকে করেনি। ফলে, পরিষেবার বিনিময়ে ৩৪০ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকার জায়গায় আদায় হয়েছে মাত্র ১১৩ কোটি।
এ দিন জেলা প্রশাসন ও জেলা বিদ্যুৎ দফতরের সঙ্গে প্রায় দু’ঘণ্টা আলোচনা করেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ পান্ডে এবং সংস্থার নিরাপত্তা-বিষয়ক উপদেষ্টা সি ভি মুরলীধরণ। তাঁদের হাতে একটি রিপোর্ট তুলে দেন বণ্টন সংস্থার বর্ধমানের রিজিওনাল ম্যানেজার দিলীপ কুমার বাছাড়। ওই রিপোর্টে দেখা যায়, জেলার ২৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টিতে রাজস্ব লোকসান ৫০ শতাংশেরও বেশি। রাজস্ব-ক্ষতির তালিকায় রয়েছে, ভাতার, নতুনহাট, মন্তেশ্বর, গুসকরা, রায়না, সাতগেছিয়া, জামালপুর, কাটোয়া, কেতুগ্রাম, সমুদ্রগড় ও পূর্বস্থলী। ওই ১১টিতেই রাজস্ব ক্ষতি ছাড়িয়ে গিয়েছে ১৯২ কোটি টাকারও বেশি। ক্ষতির পরিমাণে জেলায় এগিয়ে রয়েছে ভাতার (২৮.২৬ কোটি), নতুনহাট (২২.৮৮ কোটি) ও কেতুগ্রাম (২০.৬৯ কোটি)। মন্তেশ্বরও ওই তালিকার উপরের দিকে থাকা নাম।