Advertisement
২১ মে ২০২৪

বারবার বিজ্ঞপ্তি, তবু শহর আছে শহরেই

এক বার দু’বার নয়, সৌন্দর্যায়ন নিয়ে আট মাসে তিন বার বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু সে সবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হকার-রাজ হোক বা যেখানে–সেখানে আবর্জনা ফেলা— রূপবদল হয়নি বর্ধমানের।

জিটি রোডে রাস্তা দখল করে রয়েছে দোকানের জিনিস। —নিজস্ব চিত্র।

জিটি রোডে রাস্তা দখল করে রয়েছে দোকানের জিনিস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share: Save:

এক বার দু’বার নয়, সৌন্দর্যায়ন নিয়ে আট মাসে তিন বার বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু সে সবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে হকার-রাজ হোক বা যেখানে–সেখানে আবর্জনা ফেলা— রূপবদল হয়নি বর্ধমানের। অভিযোগ, বিজ্ঞপ্তি দিলেও তা কার্যকর করতে পদক্ষেপ করতে পারছে না পুরসভা।

পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছর ৩ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি করে বর্ধমান শহরের ভিতরে দিয়ে যাওয়া জিটি রোড লাগোয়া বীরহাটা থেকে স্টেশন পর্যন্ত এলাকার সৌন্দর্যায়নের জন্য বেশ কয়েকটি বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ঠিক হয়, ২৬ জানুয়ারি থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পথে নামবেন পুরকর্মীরা। কিন্তু পুরকর্তাদের দাবি, তখন বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে ওই সব নিয়মনীতির বিরোধিতা করেন তৎকালীন মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটের পরে ফের দু’বার বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুরসভা। এ বছরের ৭ জুন জেলাশাসকের উপস্থিতিতে পুরকর্তাদের বৈঠকও হয়। সপ্তাহ খানেক আগে নাগরিক সভাতেও শহরের সৌন্দর্যায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে কী কী নির্দেশিকা জারি করা হয়? বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজয় তোরণ বা কার্জন গেট লাগোয়া এলাকায় হকার বসা যাবে না। শহরের জিটি রোডের দু’ধারে কোনও রকম স্থায়ী বা অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করা যাবে না। হকারদের জন্য ভ্রাম্যমান গাড়ি তৈরিরও বরাত দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কিন্তু বাস্তবে পুরসভার যাবতীয় নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রীতিমতো গুমটি করে পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকারেরা। জিটি রোড লাগোয়া এলাকায় মাংস খোলা বা টাঙিয়ে রাখায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। না মানা হলে শাস্তির কথাও বলা হয়। তৃতীয়ত, জিটি রোডের উপরে বীরহাটা থেকে বর্ধমান স্টেশন পর্যন্ত এলাকায় যেখানে-সেখানে আবর্জনা ফেলা, প্রকাশ্যে প্রস্রাব, থুতু ফেলাও নিষিদ্ধ করে পুরসভা। চতুর্থত,বলা হয়, জিটি রোড লাগোয়া এলাকার দোকানগুলির ন্যূনতম ৫ ফুট জায়গা ছাড়তে হবে। সেখানে দোকানের কোনও জিনিসপত্র রাখা যাবে না। পুরপ্রধান জানান, নিয়মনীতি না মানা হলে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে।

কিন্তু এতকিছুর পরেও শহর ঘুরে দেখা যায়, বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক কাজ হয়নি। পুরকর্তাদের গড়িমসির কারণে শহরের রূপবদলের কাজ আটকে রয়েছে বলে ক্ষোভ শাসক দলেরই কয়েক জন কাউন্সিলরের। কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলরের ক্ষোভ, ‘‘আমাদের দেওয়া বিজ্ঞপ্তি, আমরাই কার্যকর করতে পারছি না— এটা পুরপ্রশাসনের ব্যর্থতা। আমাদের লজ্জা।” প্রশাসনের এক কর্তার কথাতেও, “আমরা বড়জোর সাহায্য করতে পারি। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি কার্যকর পুরসভাকেই করতে হবে।’’

পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের অবশ্য দাবি, ‘‘মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। জিটি রোড সৌন্দর্যায়ন নিয়ে পূর্ত দফতর কাজ করবে বলে জানিয়েছে।’’ পুরসভার পোশাকে ৩০ জন কর্মী পথে নামবেন বলেও পুরপ্রধানের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan beautification project
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE