স্কোরকার্ডে ইতিমধ্যেই ছয় হাঁকিয়েছে শাসক দল। কিন্তু বারাবনি ব্লকে ‘চোনা’ বলতে বাকি দু’টি পঞ্চায়েত, এমনটাই মনে করছেন এলাকায় শাসক দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। পঞ্চায়েত দু’টি নুনি ও ইটাপাড়া। দু’টিতেই বিরোধীদের চ্যালেঞ্জের মুখে শাসক দল। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাসের মুখে প্রার্থী টিকিয়ে রাখাটাই সংশয়ের। এই পরিস্থিতিতে আদালত ভোট-প্রক্রিয়া নিয়ে কী রায় দেয়, সে দিকেও তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ থেকেই পঞ্চায়েত ভোট থেকেই বারাবনি ব্লকে শক্তি বাড়িয়েছে তৃণমূল। আদালতের রায়ের আগে এ পর্যন্ত যা পরিস্থিতি পঞ্চায়েত সমিতির ২১টি আসনের মধ্যে ১২টিতেই আসন পাকা করে ফেলেছে তৃণমূল। ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টিতেও বিরোধীদের প্রায় কোনও লড়াই নেই।
কিন্তু নুনি ও ইটাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে দৃশ্যটা অন্যরকম। এ পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে নুনির ১০টি আসনের মধ্যে সাতটিতে লড়াই হচ্ছে। বিজেপি ও সিপিএম যথাক্রমে সাতটি ও তিনটি সংসদে প্রার্থী দিয়েছে। এই পঞ্চায়েতকে কেন্দ্র করে বেশ আশায় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি-র ব্লক সভাপতি অরিজিৎ রায় বলেন, ‘‘আমরা এখানে তৃণমূলকে লড়াইয়ের মুখে ফেলছি।’’
ইটাপাড়া পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের মধ্যে নটি আসনের সাতটিতে প্রার্থী রয়েছে সিপিএম, বিজেপি-র। দু’টিতে রয়েছেন অন্যান্যরা। এই পঞ্চায়েতটি জেতার বিষয়ে আশায় রয়েছে বামেরা। যদিও সিপিএম এই পঞ্চায়েতটি শেষ জিতেছিল ২০০৩-এ। পরের দু’বার তৃণমূল জিতলেও এই এলাকায় সিপিএম যে যথেষ্ট বেগ দিচ্ছে, তা ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।
কিন্তু গোটা ব্লকে যেখানে শক্তি নেই, এই দুই এলাকায় কী ভাবে বিরোধীরা প্রার্থী দাঁড় করানোর মতো শক্তি-সঞ্চয় করল? নুনির তৃণমূল নেতাদের একাংশ জানান, এই এলাকায় বিজেপি নেতা অমল রায় একসময়ে যথেষ্ট দাপুটে তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪-য় তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। এর পরেই তাঁর অনুগামীরা বিজেপি-তে চলে আসেন। এর জেরেই এই পঞ্চায়েতে বিজেপি শাসক দলকে টক্কর দেওয়ার মতো শক্তি সঞ্চয় করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। উল্টো দিকে, সিপিএম ২০০৩-র পরে ইটাপাড়া পঞ্চায়েত দখলে না আনতে পারলেও এই এলাকায় তাদের সংগঠন এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী বলেই জানা গিয়েছে। তার জোরেই এ পর্যন্ত লড়াই চলছে।
তবে এই দুই পঞ্চায়েতেই শেষমেশ প্রার্থীদের ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে বিরোধীরা। অরিজিৎবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূল লাগামছাড়া সন্ত্রাস চলাচ্ছে।’’ বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, কোনও রাখঢাক না রেখেই দলের প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। জেলার সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীও বলেন, ‘‘শাসক দলের সন্ত্রাসের জেরে প্রার্থীদের মনোবল টিকিয়ে রাখাটাই বড় দায়।’’
যদিও সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করে দলের তরফে এই এলাকার ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘এলাকার ভোটাররা আমাদেরই বেছে নেবেন বলে বিশ্বাস করি।’’ তবে আপাতত, সব পক্ষেরই নজর, আদালত ভোট-প্রক্রিয়া নিয়ে আগামীতে কী নির্দেশ দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy