বুধবার কাঁকসায় হোটেলে ভাঙচুর। —ফাইল চিত্র।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে কোথাও ব্লক অফিসের সামনে জমায়েত। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের ওই জমায়েতের জেরেই তাঁদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। কোথাও অবশ্য দেখা গিয়েছে, নির্বিঘ্নেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিরোধীরা। শুক্রবার বিরোধীদের জন্য এমনই ‘মিশ্র’ পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে। শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস চালানোরও অভিযোগ উঠেছে।
সালানপুর ও বারাবনি ব্লকে সিপিএম, কংগ্রেস বা বিজেপি, কেউই মনোনয়নপত্র জমা করতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে। কেন এমনটা? সিপিএম নেতা প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘সকাল ন’টা থেকেই শাসক দলের কয়েক হাজার সদস্য, সমর্থক ব্লক অফিসগুলির ঢোকার রাস্তায় দল বেঁধে মজুত থাকছেন। আমাদের প্রার্থীরা অফিসমুখো হলেই কটূক্তি ও গোলমাল করা হচ্ছে।’’ বংশগোপালবাবু জানান, সালানপুর ও বারাবনিতে বৃহস্পতিবার তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, এ দিনও দেখা গিয়েছে সকাল থেকে ব্লক অফিসের সামনে মারমুখী মেজাজে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শাসক দলের লোকজন। একই অভিযোগ বিজেপির-ও।
সিপিএমের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে নতুনডিহি গ্রামে দলের বারাবনি এরিয়া কমিটির সম্পাদক তপন দাসের বাড়িতে হামলা চালায় প্রায় তিরিশ জন দুষ্কৃতী। অভিযোগ গালিগালাজ, বাড়ির জানলা লক্ষ করে ইটও ছোড়া হয়। তপনবাবুর অভিযোগ, ‘‘জানলা ভেঙে গিয়েছে। বাড়ির অদূরে গুলিও ছোড়া হয়।’’ বৃহস্পতিবারই সালানপুর ব্লক অফিসে গেলে তাঁকেও শাসক দল হেনস্থা করে বলে অভিযোগ সিপিএমের সালানপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাউকে বাধা, হুমকি দেওয়া হচ্ছে না। বিরোধীরাই প্রার্থী পাচ্ছে না।’’ এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার তাঁদের প্রার্থীরা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা করবেন বলে জানিয়েছেন বংশগোপালবাবু। সেখানেও পুলিশি নিরাপত্তার আর্জি জানিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। মহকুমাশাসক (আসানসোল) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত পুলিশি পাহারা রয়েছে।’’ বিডিও অফিস ঘিরে রেখেছে শাসক দল, এই অভিযোগে রানিগঞ্জের আমরাসোঁতা ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। অবরোধ হয় রানিগঞ্জের নেতাজি সুভাষ রোডের রাজবাড়ি মোড়েও। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তবে দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে এ দিনই প্রথম বিরোধীদের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। তবে বিরোধী মানে সিপিএম, কংগ্রেস বা বিজেপি নয়। এ দিন তাঁরা তিনটি পঞ্চায়েত ও একটি পঞ্চায়েত সমিতিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানান এসইউসিআই নেতা প্রভাতী গোস্বামী। এই ব্লকে শুক্রবার পর্যন্ত তৃণমূলের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতের ৪৪টি আসনের জন্য ৪৭টি আসনে ও পঞ্চায়েত সমিতির ছ’টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে তৃণমূল। সিপিএমের অবশ্য অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে শাসক দলের বাধায় ফিরতে হয়েছে।
তবে এসইউসিআইয়ের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ব্লকের তৃণমূল নেতা সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিরোধীরা যে মিথ্যা অভিযোগ করছেন, তা প্রমাণ হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy