Advertisement
০৫ মে ২০২৪

নর্দমায় রক্ত, গাফিলতির অভিযোগ

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছে, ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকেই ওই রক্ত বেরিয়েছে। তবে রক্ত নষ্ট হওয়ার কথা মানতে নারাজ তাঁরা।

নর্দমায় পড়ে রক্ত। নিজস্ব চিত্র

নর্দমায় পড়ে রক্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০২:০১
Share: Save:

দু’ইউনিট রক্ত চাইলে মেলে এক ইউনিট। তাও আবার কোনও কোনও সময় রক্তের বদলে প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত পান রোগীর পরিজনেরা। অথচ শুক্রবার সকালে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্ক লাগোয়া নর্দমায় রক্ত ভাসতে দেখা যায়। এমনকী, হাসপাতালে আসা বিভিন্ন মানুষজনের অভিযোগ জল বেরনোর পাইপ দিয়ে রক্ত পড়তেও দেখেছেন তাঁরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে নিয়েছে, ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকেই ওই রক্ত বেরিয়েছে। তবে রক্ত নষ্ট হওয়ার কথা মানতে নারাজ তাঁরা। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “রক্তদান শিবিরে রক্ত প্যাকেট বন্দি করার সময় ঠিকমতো সিল হয়নি। সেই রক্ত প্যাকেট থেকে পড়ে যায়। ধুয়ে দেওয়ার ফলে নর্দমায় পড়েছে।”

রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ পুরো ঘটনার কথা জানতে চাইলেও আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্ক ঘটনার কথা চেপে গিয়েছেন। রক্ত ফেলে দেওয়া হয়েছে না কি অসাবধানে পড়ে গিয়েছে তার বিভিন্ন কারণ দেখাচ্ছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরাও।

হাসপাতালের একাংশ কর্মী জানান, অধিকাংশ রক্তদান শিবির হয় অবৈজ্ঞানিক ভাবে। নির্দিষ্ট ওজনের রক্ত (৩৫০ মিলিলিটার) প্যাকেটবন্দি করার কথা থাকলেও বেশির ভাগ জায়গায় তা মানা হয় না। ফলে কখনও একটা প্যাকেটে ৪০০, কখনও তারও বেশি রক্ত নেওয়া হয়। শিবির থেকে আনার পরে ব্লাড ব্যাঙ্কেও সেই রক্ত ওজন করা হয় না বলে অভিযোগ। ফলে রোগীর শরীরেও কখনও নানা ধরনের প্যাকেট থেকে রক্ত যায়। তবে যখন কোনও কর্তার পরিদর্শনে আসার কথা থাকে তখন সব খুঁটিয়ে দেখে ঠিক করে নেওয়া হয় বলেও জানাচ্ছেন কর্মীরা। এ দিনও তেমনটাই ঘটেছে বলে জানা যায়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আগামী সোমবার ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিকাঠামো দেখতে বর্ধমান আসছে কেন্দ্র ও রাজ্যের রক্ত সঞ্চালন পর্ষদ। তাতেই টনক নড়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্তাদের। বিভিন্ন শিবির থেকে পাওয়া হাজারের উপর রক্তের প্যাকেট ওজন করতে থাকেন কর্মীরা। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক কর্তা বলেন, “রক্তের প্যাকেট ওজন করার সময় ৩৫০ মিলিলিটারের বেশি রক্ত বেশ কিছু প্যাকেটে ছিল। বাড়তি রক্ত নর্দমায় ফেলা হয়েছে।” আবার একটি সূত্রের খবর, রাধারানি ওয়ার্ডে দু’জন রোগীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ রক্ত দেওয়া হয়েছিল। বাড়তি রক্তের সঙ্গে ওই প্যাকেট দুটির রক্তও ফেলে দেওয়া হয়।

দীর্ঘদিন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনের অভিযোগ, ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদের গাফিলতিতেই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনা তদন্ত করে দেখা উচিত কর্তৃপক্ষের। অমিতাভবাবু বলেন, “রক্তের প্যাকেট ‘সিল’ করার জন্য যন্ত্র কেনার কথা ব্লাড ব্যাঙ্ককে বলা হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE