Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মান্ডিতে বাজারের প্রস্তাব, ব্যবসায়ীদের সরে যেতে নির্দেশে ক্ষোভ

বর্ধমান শহরের ভিতর থেকে পাইকারি বাজার কিসানমান্ডিতে তুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ২০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:৩০
Share: Save:

রাত হলেই জিটি রোড জুড়ে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রাক। জিনিস নিয়ে হাজির হয় ছোট গাড়িও। ফলে, রাস্তায় চলাচলের জায়গা কমে যায়। বাড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও। এই সমস্যা মেটাতে বর্ধমান শহরের ভিতর থেকে পাইকারি বাজার কিসানমান্ডিতে তুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ২০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের একাংশ।

এর ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। বাজার কিসানমান্ডিতে তুলে নিয়ে গেলে যেমন রাতের রাস্তায় ট্রাক, ম্যাটাডর, গাড়ির ভিড়ও কমে যাবে অনেকটা, তেমনই কিসানমান্ডিও জমজমাট হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০ নভেম্বরের মধ্যে ব্যবসায়ীদের উঠে যেতে বলা হয়েছে। বর্ধমানের মহকুমাশাসক (উত্তর) পুষ্পেন সরকার জানান, জেলাশাসকের নির্দেশে এই ঘোষণা করা হচ্ছে। শহরের ভিতরে রেলের ওভারব্রিজ হচ্ছে। পাইকারি বাজারগুলি সরকারি নিয়ম মেনেও গড়ে ওঠেনি। সে কারণেই ব্যবসায়ীদের সরে যেতে বলা হচ্ছে।

আনাজ, মাছ, ফলের ছোট গাড়ি এসে দাঁড়ানোয় রাতে বিসি রোড, জিটি রোডের দু’দিক ভরে যায়। শহর নিরাপদ রাখতে রাতে রাস্তায় গাড়ির ভিড় কমানোই লক্ষ্য পুলিশ-প্রশাসনের। পুজোর আগে জেলা প্রশাসন ও পুরসভা যৌথ ভাবে পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও করেন। কিলোমিটার তিনেক দূরে বর্ধমান-কালনা রোডে কৃষি খামারের কাছে মান্ডিতে সরে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

পুরসভা ও প্রশাসনের দাবি, শহরের তেঁতুলতলা বাজার, রানিগঞ্জ বাজার, বিসি রোড এলাকায় ফল, আনাজ, আদা-রসুন-পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ীদের আস্তানা। তাঁদের গাড়িগুলি দাঁড়ায় জিটি রোডের কার্জন গেটের সামনে থেকে প্রায় স্টেশন পর্যন্ত। ফলে, রাতে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে ওঠে। গড়ে দেড়শোটি বড় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে বলে পুলিশের দাবি। ফলে, বাজার উঠে গেলে রাস্তা অনেকটাই সাফসুতরো হয়ে উঠবে। বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী ফাল্গুনী দাসরজকের বক্তব্য, ‘‘ব্যবসায়ীদের চাহিদা মাথায় রেখে কিসানমান্ডিতে আরও ঘর বাড়ানোর ভাবনা রয়েছে।’’

তবে এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতি। তার সভাপতি মহেন্দ্র সিংহ সালুজার বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের ঘোষণা মানে তো আমাদের উপরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া। ফের আলোচনা করার কথা হয়েছিল। তা হল কোথায়?’’ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেউ-কেউ দ্বিধায় ভুগলেও মান্ডিতে ব্যবসা করতে যেতে গররাজি নন অনেকেই। তাঁদের দাবি, খুচরো ব্যবসায়ীরা মান্ডিতে গিয়ে জিনিস কিনবেন, এমন নিশ্চয়তা পেলে কোনও অসুবিধা নেই। মাছ ব্যবসায়ী রতন দাসের কথায়, ‘‘রাস্তা ছেড়ে নিজস্ব ঠিকানা পাব। অহেতুক ঝামেলাও পোহাতে হবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE