Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Coal Smuggling Scam

জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় আরও খনি-কর্তা, পুলিশ, ১৫ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা

কয়লা চুরি মামলায় প্রথম ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর যাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়, তাঁদের মধ্যে ইসিএলের আধিকারিক অমিত ধর ও জয়েশচন্দ্র রাইকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই।

বিকাশ মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

বিকাশ মিশ্র। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৪৬
Share: Save:

কয়লা চুরি মামলার তদন্তে ইসিএলের আরও কয়েক জন বর্তমান ও প্রাক্তন আধিকারিক, সিআইএসএফ কর্মী ও শিল্পাঞ্চলের পুলিশ আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে সিবিআই। মঙ্গলবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এ কথা জানান মামলার তদন্তকারী অফিসারেরা। কত জন জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় রয়েছেন, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু স্পষ্ট করেননি তাঁরা। এই মামলায় ধৃত ইসিএলের বর্তমান ও প্রাক্তন আট কর্মী-আধিকারিককে এ দিন ফের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী। কয়লা চুরিতে অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্রকেও এ দিন আদালতে তোলা হলে, তাঁরও জামিন নামঞ্জুর করে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিনই কয়লা চুরির মামলায় চার্জশিটে নাম থাকা অনুপ মাজির যে ১৫ জন ‘সহযোগী’ এখনও গ্রেফতার হননি, তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিশেষ সিবিআই আদালত।

ইসিএলের বর্তমান ও প্রাক্তন আট কর্মী-আধিকারিককে এ দিন আদালতে তোলা হলে, সিবিআইয়ের তরফে ধৃতদের জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করা হয়। তবে অভিযুক্তদের আইনজীবী আশিস মুখোপাধ্যায়, আশিস কুমার, অমিতাভ মুখোপাধ্যায় ও অঙ্কিতা সেনগুপ্তেরা দাবি করেন, তাঁদের মক্কেলরা প্রায় ৬২ দিন জেল হেফাজতে থাকলেও, নতুন কোনও তথ্য তাঁদের কাছে পায়নি সিবিআই। অথচ, মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালা সুপ্রিম কোর্টের ‘রক্ষাকবজ’ নিয়ে সিবিআইয়ের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন। ওই আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, কয়লা চুরি মামলায় যাঁদের নামে প্রথম এফআইআর করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে দুই ইসিএল আধিকারিককে এখনও জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়নি। ১৯ জুলাই জমা দেওয়া চার্জশিটে আরও যাঁদের নাম উল্লেখ রয়েছে, তাঁদেরও গ্রেফতার বা সমন পাঠানো হয়নি। কিন্তু এই আট জনকে এখনও জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁরা গৃহবন্দি থাকা-সহ যে কোনও শর্তে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার পাল্টা দাবি করেন, তদন্তে বেশ কিছু তথ্য তুলে এনেছেন তদন্তকারীরা। আদালতে তা জমা দেওয়া হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। তাই তাঁরা জামিন পেলে তদন্ত ব্যহত হবে। সিবিআইয়ের তরফে আরও দাবি করা হয়, ইসিএলের আরও কয়েক জন বর্তমান ও প্রাক্তন আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নামের তালিকা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া, ২০১৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ইসিএলের নানা এরিয়ায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েক জন সিআইএসএফ কর্মী-আধিকারিকও জিজ্ঞাবাদের তালিকায় রয়েছেন। সে সময়ে খনি অঞ্চলের বিভিন্ন থানায় কর্মরত কিছু পুলিশ অফিসারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

কয়লা চুরি মামলায় প্রথম ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর যাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়, তাঁদের মধ্যে ইসিএলের আধিকারিক অমিত ধর ও জয়েশচন্দ্র রাইকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি সিবিআই। তদন্তকারীদের দাবি, ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

বিকাশ মিশ্রকে এর আগে ৬ মে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। সে দিন তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। এর পরে আসানসোল সংশোধানাগারে তিনি অসুস্থ বোধ করায়, কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তার পর থেকে কোনও শুনানিতে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়নি বিকাশকে। প্রতি বারই প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ বিকাশ অসুস্থ বলে জানান। সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্ট এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এবং প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের কাছে বিকাশের শারিরীক অবস্থা জানতে চায়। মঙ্গলবার বিকাশকে আদালতে হাজির করানো হলে, বিচারক তদন্তকারীদের কাছে তাঁর শারীরিক অবস্থা জানতে চান। সিবিআইয়ের তরফে চিকিৎসকের শংসাপত্র জমা দিয়ে জানানো হয়, বিকাশ সুস্থ আছেন। বিকাশকে ফের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে কোথায় রাখা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal Smuggling Scam ecl CBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE