কোথাও মাঠ জুড়ে ‘হংসরাজে’র রাজপাট, কোথাও বা খড়, কাঁসা আর মাটির পুতুলে ফুটে উঠছে মহাভারতের কাহিনি। এক দিকে দীর্ঘদিনের ডাকের সাজের প্রতিমা ছেড়ে নতুনত্বে চমকের চেষ্টা, তো অন্য দিকে পুরুলিয়ার ছৌ-র আদলে প্রতিমা তৈরি করে দর্শকদের তাক লাগানোর পরিকল্পনা। এ ভাবেই পুজোয় মেতে উঠেছে বিধাননগরের ক্লাব স্যান্টোস ও দুর্গাপুরের ডিপিএল টাউনশিপের বি-জোন আদিবেদী দুর্গাপুজো কমিটি।
প্রায় ছ’দশক আগে ডিপিএল কর্মী ও তাঁদের পরিবারের থাকার জন্য গড়ে ওঠে ডিপিএল টাউনশিপ। পরে কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় টাউনশিপের বাসিন্দারা নিজেদের দুর্গাপুজো শুরু করেন। এত বছর পরেও সেই উৎসাহে ভাটা পড়েনি। প্রতি বছর থিমে নতুনত্ব এনে শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় পুজো হয়ে উঠেছে ডিপিএল টাউনশিপের বি-জোন আদিবেদী দুর্গাপুজো। পুজো কমিটির সম্পাদক উমাপদ দাস জানান, এ বার থিম হিসেবে পুরুলিয়ার ছৌ বেছে নেওয়া হয়েছে। ছৌ-র বিভিন্ন রূপ, পোশাক, মুখোশ দিয়ে দেবীমূর্তি তৈরি করছেন শিল্পী অরুণ পাল। খড়, কাঁসা, মাটির পুতুল দিয়ে নবদ্বীপের শিল্পী কুন্তল হাজরা ও তাঁর সহকারীরা মণ্ডপ জুড়ে ফুটিয়ে তুলছেন মহাভারতের দৃশ্যাবলী। পুজোর দিনগুলিতে নানা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে জানান পুজো কমিটির সভাপতি প্রদীপকুমার সামন্ত।
বিধাননগরের ক্লাব স্যান্টোসের পুজোর এ বার ৪৬তম বর্ষ। তাদের পুজোর থিম ‘হংসরাজ’। মাস দুয়েক আগে থেকে বড় মাঠের এক দিকে রূপনারায়ণপুরের শিল্পী তাপস হাজরা ও তাঁর দলবল লোহার কাঠামোর উপরে থার্মোকল, প্লাইউড, মশারির জাল, ফোম প্রভৃতি মণ্ডপ তৈরি করছেন। পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, মণ্ডপ জুড়ে থাকবে একটি বড় হাঁস। আশপাশে থাকছে আরও ১৪টি হাঁস। দীর্ঘদিনের ডাকের সাজের প্রতিমার বদলে এ বার থিমের সঙ্গে মানানসই প্রতিমা থাকবে মণ্ডপে। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় এলাকার মহিলাদের নিজেদের হাতে তৈরি খাবারের পসরা ‘আনন্দমেলা’। তাই স্থানীয় মহিলারা সবাই ব্যস্ত সেই পরিকল্পনায়। পুজো দেখতে আসা দর্শনার্থীদের হরেকরকম খাবারের স্বাদ দিতেই এই আয়োজন, জানিয়েছেন পুজোর উদ্যোক্তা হৃদয় সাঁই, সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। সঙ্গে রয়েছে পুজোর দিনগুলিতে মাঠে বসে পাড়ার সবাই মিলে আড্ডা। বাকী এই কয়েক দিনে প্রস্তুতি শেষ করতে তাই তুমুল ব্যস্ততা দুই মণ্ডপেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy