Advertisement
০২ মে ২০২৪
coal

লালা-যোগ ২০১৬-য়, দাবি সিআইডি সূত্রে

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, খনি এলাকায় থাকার সুবাদেই অত্যন্ত অল্প বয়স থেকেই রণধীরের সঙ্গে বেআইনি কয়লা কারবারিদের একাংশের যোগাযোগ তৈরি হয়ে যায়।

দুর্গাপুর আদালতে তোলা হচ্ছে রণধীর সিংহকে। নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুর আদালতে তোলা হচ্ছে রণধীর সিংহকে। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী এবং সুব্রত সীট
অণ্ডাল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১ ০৫:২৫
Share: Save:

বেআইনি কয়লার কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগে অণ্ডালের নবকাজোড়ায় বাড়ি থেকে ব্যবসায়ী রণধীর সিংহকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এর পরেই জেলায় চর্চা শুরু হয়েছে কে এই রণধীর, কী ভাবে তাঁর উত্থান, কখন কয়লা মামলার মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজির (লালা) সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়, এ সব নিয়ে।

সিআইডি সূত্রে জানা যায়, নবকাজোড়ায় ইসিএলের পাঁচিল ঘেরা একটি পরিত্যক্ত কর্মী আবাসনে রণধীর থাকতেন। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রণধীরের বাবা প্রয়াত খনিকর্মী কেদার সিংহ আইএনটিইউসি নেতা ছিলেন। তাঁদের আদি বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায়। কাজোড়াতেই স্কুলজীবন কাটে রণধীরের। তবে মাধ্যমিকের পরে পড়াশোনায় ইতি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, খনি এলাকায় থাকার সুবাদেই অত্যন্ত অল্প বয়স থেকেই রণধীরের সঙ্গে বেআইনি কয়লা কারবারিদের একাংশের যোগাযোগ তৈরি হয়ে যায়। শুরুতে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কয়লা তোলা-নামানোর কাজ দেখাশোনা করতেন রণধীর। এর পরে ২০০০ সালে স্থানীয় দুই কয়লা ‘কারবারি’দের হাত ধরে কারবারে দ্রুত জড়িয়ে পড়তে থাকেন রণধীর। অভিযোগ, ২০০৪-০৫ সালে কাজোড়া ও কেন্দা এরিয়া থেকে কয়লা নিয়ে বেরনো ডাম্পার থেকে কয়লা সরিয়ে নেওয়ার কাজেও জড়িত ছিলেন রণধীর। বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ওই কয়লা সরবরাহ করা হত মঙ্গলপুরের কয়েকটি কারখানায়। এ ছাড়া খনিকর্মীদের জন্য বরাদ্দ ‘ডোমেস্টিক কোল’ নিয়েও বেআইনি কারবার চালানোর অভিযোগ ওঠে রণধীরের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়লার কারবারের সঙ্গে সঙ্গে জমি কেনা-বেচা, আবাসন নির্মাণে পুঁজি ঢালতেও দেখা যায় রণধীরকে। এ দিকে, বছর পাঁচেক ধরে ইসিএলের কাছ থেকে ‘ড??? (???????? িও’ (ডেলিভারি অর্ডার)-র বরাত নিয়ে খাসকাজোড়া ও লাগোয়া বেশ কয়েকটি খনি থেকে বৈধ কয়লা সংগ্রহ করে ব্যবসা চালাতেন রণধীর, দাবি এমনই।

কী ভাবে চলত রণধীরের ‘কারবার’?

অবৈধ কয়লা কারবারে যুক্ত কয়েকজনের দাবি, ডিও-র বৈধ কাগজ দেখিয়ে অবৈধ কয়লা ‘পাচার’ করতেন রণধীর। কাজোড়া এরিয়ায় অবৈধ কুয়ো ও বৈধ খোলামুখ খনির কয়লা পাচারের সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। এই সূত্রেই ২০১৬-য় ‘কয়লা সিন্ডিকেটে’র ‘মাথা’ নিতুড়িয়ার অনুপ মাজির (লালা) ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন রণধীর, দাবি সিআইডি সূত্রে।

রণধীরকে শুক্রবার রাতে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়, এ দিন অবশ্য সেই আবাসনে গিয়ে কারও দেখা মেলেনি। এই গ্রেফতারি নিয়ে এলাকায় কথাবার্তা হলেও, প্রকাশ্যে অবশ্য কেউ কিছু বলতে চাননি।

এ দিকে, দুর্গাপুরের সপ্তর্ষি পার্কের একটি বহুতলে জয়দেব খাঁ নামে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক ব্যবসায়ীর দু’টি ফ্ল্যাটে শনিবার হানা দিয়েছিল সিআইডি। দু’টি ফ্ল্যাটই তালাবন্ধ ছিল। শেষমেশ রক্ষীকে সিআইডি নোটিস ধরায়। তাতে আগামী ১৫ মার্চ ভবানী ভবনে জয়দেবকে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০-র ১ অক্টোবর রানিগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার ভিত্তিতে খোঁজা হচ্ছে জয়দেবকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest coal Smuggling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE