এ বার বিতর্কে উঠে এল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি বা ইউআইটি। সেখানকার কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদাধিকারীদের ই-মেল করে ইউআইটির আর্থিক দুর্নীতি-সহ সাত দফা অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই সব অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন। ইউআইটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অপূর্বকুমার ঘোষ অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওই ই-মেলে কর্মীদের একটা অংশ অভিযোগ করেছেন, ইউআইটি-র কর্মসংস্কৃতি হারাতে বসেছে। বেশ কিছু কর্মী কলেজে এসে হাজিরা খাতায় সই করেই ‘ভোঁ-কাট্টা’ হয়ে যান। ব্যক্তিগত কাজ সেরে দুপুরের পরে কলেজে আসেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। শুধু কর্মচারীদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নয়, ইউআইটি-র ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন ওই সব কর্মীরা। নাম-হীন ওই ই-মেলে অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্ধকারে রেখে প্রথম বর্ষের সরাসরি ভর্তির ক্ষেত্রে টাকা লেনদেন করা হচ্ছে। এ সবের সঠিক তদন্ত হলেই সমস্ত বিষয় প্রকাশ্যে আসবে বলে তাঁদের আশা। ওই অভিযোগ উড়িয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি, “অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি ভর্তি করা হয়। ভর্তি কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদাধিকারীরা থাকেন। কাজেই অসচ্ছ্বতার কোনও ব্যাপার নেই।”
ই-মেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, কলেজের প্লেসমেন্ট অফিসারকে নিয়ে অপূর্ববাবু বিভিন্ন নিয়োগকারী-সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে দেখা করার নাম করে হায়দরাবাদ, কাশ্মীর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। ইউআইটি-র অডিট রিপোর্টেও পড়ুয়াদের প্লেসমেন্ট করানোর নামে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ঘুরে বেড়িয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাঁর ঘনিষ্ঠদের প্রতিদিন ২৫০০ টাকার ভাতা দিয়ে ইনভিজিলেটর নিয়োগ করে থাকেন। সাধারণ পরীক্ষা নয়, ওই সব অযোগ্য ইনভিজিলেটরদের ‘গেট’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাতেও নিয়োগ করা হয়। একই সঙ্গে অভিযোগ করা হয়েছে, স্নাতক বা স্নাতকোত্তরস্তরের বিভিন্ন পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সপ্তাহে নির্দিষ্ট ক্লাস নিতে আগ্রহী থাকে না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের মানোন্নয়নের বদলে ইউআইটি-র পদকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে কোনও অভিযোগই মানতে চাননি অপূর্ববাবু।
অপূর্ববাবুর কথায়, “ইউআইটিতে নিয়োগের হার ভাল নয়। কলেজ পড়ুয়ারা যাতে ভাল সংস্থায় নিয়োগ হন, তার জন্যই যোগাযোগ রাখা হয়। ওই সব সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা কী ভাবে ইন্টারভিউ নেবেন—সে সব চূড়ান্ত করা হয়। পড়ুয়াদের স্বার্থরক্ষা করতেই এ সব করা হয়।” আর গেট পরীক্ষায় ইনভিজিলেটরের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি, “সব কিছুই নিয়ম মেনে করা হয়। কারও ব্যক্তিগত স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলে অপপ্রচার করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy