এ ভাবেই শেষকৃত্য। নিজস্ব চিত্র।
অজয়ের পাড়ে, খোলা আকাশের নীচেই চলে দাহকাজ। বৃষ্টি হলে ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও মতে দাহকাজ শেষ করতে হয় শবযাত্রীদের। এমনই পরিস্থিতি কাঁকসা ব্লকের বিদবিহার পঞ্চায়েতের অন্তত কুড়িটি গ্রামের বাসিন্দাদের। এ দিকে, প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে কাঁকসায় নতুন শ্মশান তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু সে টাকায় এখনও কাজ শুরু হয়নি। অজয়ের পাড়ে গার্ডওয়াল দেওয়ার কাজ এখনও পঞ্চায়েত না করায় শ্মশান তৈরি করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদবিহার পঞ্চায়েতের ওই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের দাহকাজের জন্য অজয় পেরিয়ে বীরভূমের জয়দেবের কদমখণ্ডী শ্মশানে যেতে হয়। কিন্তু অজয়ে জল বাড়লে, ওই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের পক্ষে দেহ নিয়ে জয়দেব যাওয়া সম্ভব হয় না অনেক সময়েই। এই পরিস্থিতিতে কাঁকসায় একটি শ্মশানের দাবি দীর্ঘদিনের।
সেই জন্য পূর্ত দফতর (সোশ্যাল সেক্টর) শিবপুরে একটি শ্মশান তৈরির তোড়জোড় করে। মাস ছ’য়েক আগে রাজ্যের ‘বৈতরণী’ প্রকল্পে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা এই শ্মশানের জন্য বরাদ্দও করা হয়। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ঠিকা সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, বিদবিহারে অজয়ের পাড়ে শ্মশান তৈরির জন্য একটি এলাকা চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু সমীক্ষার পরে দেখা যায়, ওই এলাকার মাটি ধসপ্রবণ। ফলে, যে কোনও সময়ে অজয়ের জলে মাটি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল পরিচালিত বিদবিহার পঞ্চায়েতকে ওই এলাকায় গার্ডওয়াল দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রস্তাব দেওয়ার ছ’মাস পরেও সেই গার্ডওয়াল দেওয়া না হওয়ায় কাজ শুরু করা যায়নি, এমনই দাবি দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তার।
এই পরিস্থিতিতে সব থেকে সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। শিবকুমার মণ্ডল নামে এক জন বলেন, ‘‘বীরভূমে যাওয়া যাচ্ছে না এখন। ফলে, ত্রিপল টাঙিয়ে অজয়ের পাড়ে দাহকাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু তাতে ঝড়-জলে চরম সমস্যা হচ্ছে। কাঠ-কয়লা জোগাড় করতেও সমস্যা হচ্ছে।’’ কিন্তু ছ’মাস পরেও গার্ডওয়াল বসানো হল না কেন? বিদবিহার পঞ্চায়েতের প্রধান বুলু সৌ বলেন, ‘‘শ্মশানের জন্য এলাকায় গার্ডওয়াল অবশ্যই বসাতে হবে। কিন্তু ভোট এবং করোনা পরিস্থিতির জন্য সে কাজ এখনও করা যায়নি। দ্রুত সে কাজ শেষ করা হবে।’’ বিষয়টি নিয়ে কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ (পূর্ত) প্রবোধ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত মিলে দ্রুত এই সমস্যার
সমাধান করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy