Advertisement
E-Paper

উড়ে গেল বাড়ির ছাদ, সতর্কতা প্রশাসনে

সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। সেই সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টিও। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে শুরু করে দুর্গাপুর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৯ ০০:৫৭
জামুড়িয়ার শ্রীপুরে। নিজস্ব চিত্র

জামুড়িয়ার শ্রীপুরে। নিজস্ব চিত্র

ফণী আসছে। এই আতঙ্কে সকাল থেকেই ঘর ছেড়ে বের হননি অধিকাংশ মানুষ। দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতাদের দেখা নেই। যে কটি দোকান খোলা ছিল, ঝাঁপ বন্ধ করে চলে যান মালিক-কর্মীরা। অন্য দিনের মতো সরকারি ও বেসরকারি বাস একটু কম নেমেছে রাস্তায়। কিন্তু যাত্রী নেই বললেই চলে। কিছু কিছু স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও, তা হাফ টাইমের পরে ছুটি হয়ে যায়। শুক্রবার এই চিত্র দেখা গিয়েছে গোটা জেলা জুড়ে।

সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। সেই সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টিও। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে শুরু করে দুর্গাপুর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া-সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফণীর প্রভাব সে ভাবে দেখা যায়নি দুর্গাপুর মহকুমা জুড়ে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ফণীর প্রভাব না পড়লেও বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ হালকা ঝড়-বৃষ্টিতে জামুড়িয়ার এবিপিট কোলিয়ারি সর্বজনীন দুর্গামন্দির ভেঙে পড়ে। মন্দির কমিটির সদস্যেরা জানান, ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এটি কোলিয়ারির বাতিঘর ছিল। ওই বছর কোলিয়ারি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে সেটিকে দুর্গামন্দিরে রূপান্তরিত করা হয়। সেখানে প্রতিদিন সকালে একটি বেসরকারি স্কুলও চলত। ঝড়ে তা ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া, জামুড়িয়ার শ্রীপুর বাবলাডাঙায় ২৯টি বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে। আসানসোল পুরসভার মেয়রপারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় দু’টি এলাকাতেই গিয়েছিলেন। তিনি জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাঁদের বাড়ির ছাদ উড়ে গিয়েছে তাঁদের আপাতত স্থানীয় কমিউনিটি হলে থাকা ও থাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ দিকে, দুর্গাপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয় (০৩৪৩-২৫৪৫১৪১/২৫৪৫৪৮৮)। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা নজরদারি চালাচ্ছেন। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্লক থেকে পঞ্চায়েত স্তর সব জায়গাতেই কর্মীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় বিশেষ করে মাটির বাড়িতে বসবাসকারীদের উপর নজর দেওয়া হচ্ছে। কোনও ভগ্ন বাড়ি থাকলে সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে ফেলাও হচ্ছে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর-সহ বিভিন্ন দফতর পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে। মহকুমার বিভিন্ন ব্লক কার্যালয়ে সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) অনির্বাণ কোলে বলেন, ‘‘সব রকমের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি আছি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে।’’

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ত্রাণ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন দুর্গাপুর পূর্বের সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়। তিনি জানান, তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে বহু গ্রাম। সেই সব গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য ত্রিপল, শুকনো খাবার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে। বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্ত পঞ্চায়েত প্রধানদের নিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠক করা হয়েছে। শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র রাখা হয়েছে। মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

ফণী নিয়ে নাগরিকদের সচেতন করতে সকালে জামুড়িয়া ২ ব্লক তৃণমূলের তরফে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হয়। জামুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রতিটি এলাকায় অঙ্গনওয়াড়ি, শিশুশিক্ষাকেন্দ্র, প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয় খুলে রাখা হয়েছে। যাঁরা আশ্রয় নিতে চান, পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

আসানসোলের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান জানান, তাঁর দফতর ছাড়াও জেলাশাসক, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পূর্ত, জেলাস্বাস্থ্য, প্রতিটি ব্লকের বিডিও এব‌ং আসানসোল পুরসভা কার্যালয়ে পৃথক ‘কন্টোল রুম’ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া, বিদ্যুৎ, দমকল দফতর-সহ সমস্ত বিভাগ সতর্ক রয়েছে। মাইকের মাধ্যমে মহকুমা জুড়ে সচেতনতা প্রচার চালানো হচ্ছে।

Cyclone Fani ফণী Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy