গাফিলতির জেরে প্রাণ যায় কর্মীদের, কিন্তু কর্তৃপক্ষ নির্বিকার— বিদ্যুতের লাইন সারাইয়ের কাজ করার সময়ে তড়িদাহত হয়ে এক খনিকর্মীর মৃত্যুতে অভিযোগ তুলল শ্রমিক সংগঠনগুলি। শুক্রবার রাতে অন্ডালের রিয়েল জামবাদ কোলিয়ারিতে ওই কর্মীর মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ দেখায় নানা শ্রমিক সংগঠন। পরে খনি কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ খনির সামনে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন সারানোর কাজ করতে গিয়েছিলেন রামবদন দিলাবর (৪২)। খুঁটিতে ওঠার পরে হঠাৎই তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নীচে ছিটকে পড়েন। সহকর্মীরা সঙ্গে-সঙ্গে তাঁকে ইসিএলের ছোড়া রিজিওনাল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক জানান, রামবদনবাবুর মৃত্যু হয়েছে।
এর পরেই মৃতদেহ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়। তাতে যোগ দেন স্থানীয় বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বিক্ষোভে সামিল হয় সিটু এবং আইটিইউসি-র নেতা-কর্মীরাও। তাঁদের দাবি, মৃত কর্মীর নিকট আত্মীয়কে চাকরি, আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং বিষযটি তদন্ত করে গাফিলতিতে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। গভীর রাতে সংস্থার তরফে মৃতের স্ত্রীকে চাকরিতে নিয়োগ ও অন্য দাবিগুলি দ্রুত খতিয়ে দেখে ব্যবস্থার আশ্বাস দেওয়া হলে বিক্ষোভ থামে।
শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, বারবার একই রকম দুর্ঘটনা ঘটছে খনিগুলিতে। এর জন্য ইসিএলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দোষী বলে দাবি সংগঠনগুলির নেতাদের। কেকেএসসি-র কার্যকরী সভাপতি নরেন চক্রবর্তীর দাবি, বাঁকোলা কোলিয়ারিতে এক দশকে চার বার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কর্মীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সিটু নেতা মলয় বসুরায় আবার অভিযোগ করেন, মাস পাঁচেক আগে কেন্দা এরিয়ার লোয়ার কেন্দা কোলিয়ারির ছোড়া সাত-নয় নম্বর পিটে হাজিরাখাতায় সই করার পরে কাজ যোগ দিতে যাওয়ার সময়ে একটি খুটি থেকে ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে পা লেগে মৃত্যু হয়েছে এক শ্রমিকের। এই সব ঘটনা থেকেই কর্মীদের সুরক্ষার ব্যাপারে সংস্থার উদাসীনতা স্পষ্ট বলে তাঁদের দাবি। বারবার এমন ঘটলেও দোষীদের শাস্তি হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
যদিও খনি কর্তৃপক্ষ উদাসীনতার অভিযোগ মানতে চাননি। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘সব ক্ষেত্রেই তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy