কালনা রাজবাড়ি চত্বর। নিজস্ব চিত্র
নির্দশনের অভাব নেই। কিন্তু পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত পরিষেবার অভাব রয়েছে এখনও। কালনায় সদ্য শেষ হওয়া পর্যটন উৎসবে উঠে এসেছে এমন মতই। পর্যটকদের কেনাকাটা করার মতো সামগ্রী বা থাকার উপযুক্ত জায়গা তৈরির ব্যাপারে নজর দেওয়ার প্রস্তাবও উঠেছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক স্বপন দেবনাথ।
কালনা শহর ও লাগোয়া এলাকায় ১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, ভবাপাগলার মন্দির, মহাপ্রভু বাড়ি, দাঁতন কাঠিতলার মসজিদ-সহ বেশ কিছু প্রাচীন পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। শহরকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ভাবনা বহু বছরের। পর্যটক টানতে শীতকালে প্রতি বছর পর্যটন উৎসব শুরু হয়েছে। সম্প্রতি রাজবাড়ি মাঠে এই উৎসব হয়। মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, ‘‘পর্যটকদের থাকার জন্য এ শহরে একটি আবাসের প্রয়োজন রয়েছে। সে জন্য মহকুমাশাসককে লালজি মন্দিরের কাছে যে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর রয়েছে তা তাঁর কার্যালয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। সেক্ষেত্রে সরকারি কার্যালয়ের জায়গায় একটি উন্নত পর্যটক আবাস তৈরি করা যাবে।’’
মন্ত্রী জানান, বছর তিনেক আগে শহরের কয়েকটি মন্দিরে আধুনিক আলো লাগানো হয়েছিল। তবে পর্যটকদের নজর কাড়তে আরও বেশ কিছু মন্দিরে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এর ব্যবস্থা করতে হবে। শহরে পর্যটকেরা রাত্রিবাস করলে এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে। উৎসবে এসে শহরের শিল্পপতি সুশীল মিশ্র বলেন, ‘‘ছুটির দিনে কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা এলাকার বহু মানুষ ভাল বেড়ানোর জায়গা খোঁজেন। কালনায় তাঁরা এলে কাছাকাছি নবদ্বীপেও ঘুরে যেতে পারবেন। তবে সে জন্য শহরে ভাল থাকা-খাওয়ার পরিকাঠামো তৈরি করা জরুরি।’’ উৎসবে আসা স্থানীয় মানুষজনের দাবি, বছর তিনেক আগে ১০৮ শিবমন্দির ও রাজবাড়ি চত্বরে লাগানো অনেক আলো এখন খারাপ হয়ে গিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ লালজি মন্দিরে আলো লাগানোই হয়নি।
কালনার বাসিন্দা সুবিমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু মন্দিরের কারুকাজ দেখে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে চলে যান পর্যটকেরা। তাঁদের জন্য উপযুক্ত খাবারদাবার, কেনাকাটার জিনিস বা থাকার জায়গা— কিছুই নেই এ শহরে।’’ বাসিন্দাদের দাবি, এলাকার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প, মাখা সন্দেশ-সহ অনেক কিছুই পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা যায়। তবে সে ব্যাপারে প্রশাসনিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
তবে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পর্যটক টানতে নানা ভাবনা রয়েছে। পর্যটকদের জন্য কয়েকটি স্টল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দর্শনীয় স্থানগুলিতে যে সমস্ত আলো নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলি সারানোর পরিকল্পনা হয়েছে। মহকুমাশাসক (কালনা) নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘পর্যটন উৎসবে মন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy