রোজ ট্রেনে করেই কাটোয়া আসে জানকীলাল শিক্ষাসদনের ছাত্র নবগ্রামের অতনু পণ্ডিত। তার আগে সাইকেল নিয়ে রেললাইন পার করে নবগ্রাম-কাঁকুরহাটি স্টেশনে পৌঁছনো তার রুটিন। শুধু অতনুই নয়, ওই এলাকার সমস্ত মানুষকেই স্টেশনে পৌঁছতে গেলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় রেললাইন। কারণ, বারবার আবেদন, দুর্ঘটনার পরেও রেল ওভারব্রিজ হয়নি। অগত্যা লাইন পারাপারই নিয়ম সেখানে।
অজয় নদের এক দিকে কাঁকুরহাটি, আর এক পারে নবগ্রামকে জুড়েছে এই হল্ট স্টেশন। কাটোয়া-আজিমগঞ্জ শাখার দূরপাল্লার ও প্যাসেঞ্জার ট্রেন মিলিয়ে প্রতিদিন ১৮-২০টা ট্রেন যায় এখান দিয়ে। গত তিন মাস ধরে কাটোয়া-আহমেদপুর শাখায় দুটো নতুন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে নতুন পায়ে হাঁটা রেলসেতু তৈরির কাজ শুরু হলেও নবগ্রাম থেকে যাচ্ছে না পাওয়ার দলেই। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেলসেতুটি এমন ভাবে তৈরি হচ্ছে যাতে নবগ্রাম ও কাঁকুরহাটির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ থাকছে না। ফলে সেতু উপর দিয়ে গেলেও হেঁটেই রেললাইন পার হতে হবে তাঁদের। বাসিন্দারাই জানান, গত মার্চে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ওভারব্রিজটি আরও লম্বা করে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে নবগ্রাম যাওয়ার মূল রাস্তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তিন মাস কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নতুন টিকিট কাউন্টারটিও নবগ্রামের দিকের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রায় দেড়শও ফুট দূরে তৈরি হচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি। এলাকার বাসিন্দা প্রণব ঠাকুরর কথায়, ‘‘তিন নম্বর লাইন পেরিয়ে আমরা টিকিট কাটতে যাব কি করে? সবসময় স্টেশনে যেতে গেলেই লাইন পেরোতে হয়। হয় সাবওয়ে তৈরি করতে হবে নাহলে ওভারব্রিজ বাড়াতে হবে। নাহলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাব।’’ বাসিন্দাদের দাবি, রেলসেতুটি আয়তনে বাড়লে নবগ্রামের সঙ্গে তালারি, বারান্দা, সেনপাড়া, পুরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন।
পূর্ব রেল প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের বি-বি লুপের সভাপতি পুরবধি মুখোপাধ্যায় জানান, ওভারব্রিজ বাড়ালে আর লাইন পেরিয়ে স্টেশনে আসতে হবে না। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হলে ডিআরএম এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ কররা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলেও তাঁর দাবি। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।