Advertisement
০৭ মে ২০২৪
কাঁকসা-পানাগড়

সেতু বন্ধ, বিপাকে ধাবা-গ্যারাজ

প্রায় মাস দেড়েক ধরে বন্ধ বর্ধমান ও বীরভূমের সংযোগকারী অজয় সেতু। এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কও। এর জেরে যাত্রীরা তো বটেই বিপাকে পড়েছেন রাস্তার দু’ধারে থাকা ধাবা ও গ্যারাজের মালিক, কর্মীরা।

ঝাঁপ খোলেনি ধাবার। কাঁকসার চারের মাইলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

ঝাঁপ খোলেনি ধাবার। কাঁকসার চারের মাইলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

প্রায় মাস দেড়েক ধরে বন্ধ বর্ধমান ও বীরভূমের সংযোগকারী অজয় সেতু। এর ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কও। এর জেরে যাত্রীরা তো বটেই বিপাকে পড়েছেন রাস্তার দু’ধারে থাকা ধাবা ও গ্যারাজের মালিক, কর্মীরা।

দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সংযোগের অন্যতম ভরসা এই সড়ক। এই সড়কের উপরেই ইলামবাজারের কাছে অজয় নদের উপরে রয়েছে সেতুটি। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিনের সেতু হওয়ায় মাঝেসাঝেই সংস্কারের কাজ করতে হয়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসেও সেতুটি সংস্কারের জন্য বেশ কয়েক দিন যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের বেহাল সেতুটি। চলতি বছরের ৩ জুন থেকে ফের শুরু হয় সেতু সংস্কারের কাজ। বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। এর জেরে বীরভূমের সঙ্গে বর্ধমানের যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের মধ্যে ২৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গিয়েছে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিন্ জেলা থেকে গাড়ির আসাযাওয়া একেবারেই বন্ধ। দিনভর কয়েকটি বালির গাড়ি যাতায়াত করলেও তার সংখ্যা বেশ কম। অগত্যা পণ্যবাহী গাড়ি, যাত্রীবোঝাই বাস, সবই ভেদিয়া, পাণ্ডবেশ্বর হয়ে ঘুরপথে যাতায়াত করে।

সেতু বন্ধের ফলে শুধু যে যাত্রী বা পরিবহণ মালিকেরাই বিপাকে পড়েছেন এমন নয়। কাঁকসার দার্জিলিং মোড় থেকে অজয় সেতুর আগে পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে থাকা ছোটবড় নানা ধাবা, হোটেল মালিকেরাও পড়েছেন সমস্যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, ওই এলাকায় প্রায় ৫০টি হোটেল, ধাবা রয়েছে। রাস্তাটি সম্প্রসারণের পরে হোটেলের সংখ্যা বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। চাহিদার কথা মাথায় রেখে রাস্তার ধারেই তৈরি হয় কয়েকটি রেস্তোঁরাও।

সেতু বন্ধ থাকায় এই সব হোটেল, ধাবা ও রেস্তোঁরা মালিকেরা পড়েছেন বিপাকে। মালিকদের একাংশ জানান, গত মাস দেড়েক ধরে একেবারেই খদ্দের মিলছে না। কাঁকসার চারের মাইল এলাকার ধাবা মালিক অরুণ ঘোষ, বরুণ ঘোষদের বক্তব্য, ‘‘বড় বড় হোটেল বা ধাবাগুলিতে ১৫ থেকে ২০ জন করে কর্মী রয়েছেন। তাঁদের দিনমজুরি দেওয়াটাও এখন দায় হয়ে পড়েছে।’’ অবস্থা এমন যে, বেশির ভাগ হোটেলই বন্ধ করে দিতে হচ্ছে বলে জানান মালিকেরা।

হোটেলগুলির সামনেই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভিন্ রাজ্যের লরি, ট্রেলারগুলি। কয়েক দিন সেই সব গাড়িগুলির চালক, কর্মীরা হোটেল বা ধাবাতে এলেও এখন তাও বন্ধ। তামিলনাড়ু থেকে আসা ট্রাক চালক এস শ্রীকান্ত বলেন, ‘‘পকেটে টান পড়েছে। নিজেরাই রান্না করে খাচ্ছি।’’

সমস্যায় পড়েছেন গাড়ির গ্যারাজ মালিকেরাও। এগারো মাইল এলাকায় বেশ কয়েকটি গ্যারাজ রয়েছে। কিন্তু গাড়ির অভাবে সেগুলিও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। মহম্মদ আকবর নামে এক ঝালাই মিস্ত্রির আক্ষেপ, ‘‘দিনে একটাও গাড়ি আসছে না। চা খাওয়ার টাকাও উঠছে না প্রতি দিন।’’

প্রশাসন জানিয়েছে, ২০ জুলাই পর্যন্ত সেতুটি বন্ধ থাকবে। এখন সেই দিনের দিকেই তাকিয়েই অপেক্ষা ধাবা, গ্যারাজ মালিকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garage Dhaba Bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE