Advertisement
E-Paper

দু’পক্ষের মতানৈক্যে খোঁড়া হল না কবর

গত বছর ১২ এপ্রিল গভীর রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তার অসুস্থতার খবর পান নাসরিনের বাবা দানিউল হক। তাঁদের দাবি, ওই রাতেই চিনিশপুরে পৌঁছে নাসরিনকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বারান্দায় মৃত অবস্থায় দেখেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০০:৩৪
কোথায় কবর দেওয়া হয়েছিল দেখাচ্ছে আতাউর। নিজস্ব চিত্র

কোথায় কবর দেওয়া হয়েছিল দেখাচ্ছে আতাউর। নিজস্ব চিত্র

আগেও আদালতের নির্দেশে কবর খুঁড়ে বধূর দেহ বের করার চেষ্টা হয়েছিল। তবে দেহ মেলেনি। সেই ঘটনার পরে সাত মাস ধরে ফেরার ছিল বধূ খুনে মূল অভিযুক্ত স্বামী। রবিবার তাঁকে নিয়ে ফের বধূর দেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ। তবে আসামী ও অভিযোগকারী দুই পক্ষের মতবিরোধে খোঁড়াই হল না কবর। ঘটনাটি কেতুগ্রামের চিনিশপুরের।

গত মঙ্গলবার রাতে চিনিশপুরে বাড়ি থেকেই সেনাকর্মী আতাউরকে গ্রেফতার করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, বছর ছয়েক আগে বীরভূমের লাভপুর থানার গঙ্গারামপুরের নাসরিন বানোর (২৬) সঙ্গে বিয়ে হয় আতাউরের। অভিযোগ, বিয়ের রাত থেকেই পণ চেয়ে নাসরিনের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন আতাউর ও তার পরিবারের লোক। গত বছর ১২ এপ্রিল গভীর রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তার অসুস্থতার খবর পান নাসরিনের বাবা দানিউল হক। তাঁদের দাবি, ওই রাতেই চিনিশপুরে পৌঁছে নাসরিনকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বারান্দায় মৃত অবস্থায় দেখেন তাঁরা। পরদিন দুপুরে ছাতানপার কবরস্থানে কবর দেওয়া হয় নাসরিনকে। এমনকি, বিষয়টি নিয়ে যাতে নাসরিনের পরিবার থানায় অভিযোগ করতে না পারেন সেই হুমকি দিয়ে চিনিশপুরের বাড়িতেই দানিউল, তাঁর স্ত্রী নূরশোভা বেগম ও ছোট মেয়ে শামিম বানুকে চার দিন আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ। থানাতেও অভিযোগ জমা নেওয়া হয়নি বলে তাঁদের দাবি। এরপরে ১৩ নভেম্বর কাটোয়া আদালতে অভিযোগ জানান মৃতের মা নূরশোভা। আতাউর, তার বাবা রবিউল আলম, মা শেফালি বেগম, তিন দাদা বৌদি ও বন্ধু শেখ হিল্লাল-সহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ২২ নভেম্বর এসিজেএমের নির্দেশ আসে মৃতার কবর খুঁড়ে দেহ উদ্ধারের।

সেই মতো ৬ ডিসেম্বর কেতুগ্রাম থানার পুলিশের সহায়তায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রট গৌতম মণ্ডল দেহ উদ্ধারে যান। ঘন্টা তিনেকের চেষ্টায় আতাউরের বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে ওই কবরস্থানে খোঁড়াখুড়িও করা হয়। কিন্তু দেহ মেলেনি। গৌতমবাবু জানান, সাড়ে চার মিটার লম্বা ও ১০ মিটার চওড়া গর্ত খুঁড়লেও দেহ পাওয়া যায়নি। এরপর থেকেই ফেরার ছিল আতাউর। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টেও যায় নাসরিনের পরিবার।

এ দিন ধৃতকে নিয়ে ওই কবরস্থানেই যান পুলিশ কর্মীরা। সঙ্গে ছিলেন এসডিপিও ত্রিদিব সরকার ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মণ্ডল অভিযোগকারীর তরফে আসেন মৃতার বোন, দিদি ও পিসি। আতাউর আধিকারিকদের জানায়, কবর দেওয়ার সময় সে হাজির থাকলেও এত দিনে নির্দিষ্ট স্থান ভুলে গিয়েছে। শেষমেশ এমন জায়গা দেখায় যেখানে গত ডিসেম্বরে মাটি খুঁড়লেও দেহের সন্ধান মেলেনি। মৃতার বোন শামিম বানুর কথায়, ‘‘আতাউর যে জায়গা চিহ্নিত করেছে সেটা ঠিক কি না তা নিয়ে সে নিজেই নিশ্চিত নয়। দিদির দেহ এত দিনে মাটির সাথে মিশে গিয়েছে। পরে ওই এলাকায় অন্য কবরও দেওয়া হয়েছে। কাজেই এখন যে দেহাংশ বেরোবে তা যে দিদিরই এমন নিশ্চয়তা কোথায়!’’ শেষে দুই পক্ষই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মুচলেকা দেন যে তাঁরা হাজির থাকলেও মতানৈক্যে মাটি খোঁড়াই হয়নি।

Grave Digging Disagreement
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy