Advertisement
E-Paper

প্রসূতিকে রেফার, মার চিকিৎসককে

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত দুটো নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রামজীবনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন খাসপুরের বাসিন্দা বছর সাতাশের জান্নাতুন বিবি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রসব যন্ত্রণা ঠিকমতো না ওঠায় ও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করেন ওই চিকিৎসক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:৩২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রসূতির অবস্থা সঙ্কটজনক বুঝে অন্য হাসপাতালে রেফার করেছিলেন চিকিৎসক। অভিযোগ, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই প্রসব করানোর দাবিতে তাঁর উপর চড়াও হন রোগীর পরিবারের লোকেরা। এমনকী, তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেও দাবি ওই চিকিৎসকের। পরে শুক্রবার ওই ঘটনায় রোগীর তিন পরিজনের নামে অভিযোগ করেন কেতুগ্রামের রামজীবনপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মৃন্ময় পাল।

ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত দুটো নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে রামজীবনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হন খাসপুরের বাসিন্দা বছর সাতাশের জান্নাতুন বিবি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্রসব যন্ত্রণা ঠিকমতো না ওঠায় ও কিছু জটিলতা দেখা দেওয়ায় তাঁকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে রেফার করেন ওই চিকিৎসক। অভিযোগ, আচমকা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব করানোর দাবিতে চিকিৎসকের উপর চড়াও হন রোগীর স্বামী হাসিবুল আলি। তাঁর সঙ্গে জুটে যান আরও জনা পাঁচেক আত্মীয়। মারধর নিগ্রহ করা হয় ওই চিকিৎসককে। অভিযোগ, ওই রোগীর আত্মীয় তথা কান্দরা রাধাকান্ত কুন্ডু কলেজের ছাত্র সংসদের সম্পাদক বজরুল কাজি ওরফে বাবুকেও ডাকেন অন্য পরিজনেরা। তিনিও এসে ঝামেলা করেন।

বছর সাঁইত্রিশের মৃন্ময়বাবু বলেন, ‘‘বচসা থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। তারপর ওরা জোর করে আমায় মাতৃযানে তুলে কাটোয়া নিয়ে যেতে চায়। কেন তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে হুমকিও দেওয়া হয়।’’ কয়েক কিলোমিটার যেতেই ওই চিকিৎসক চিৎকার শুরু করেন। কেতুগ্রাম থানার কাছে ওই গাড়ি আটকে পুলিশ উদ্ধার করে ওই চিকিৎসককে। কেতুগ্রাম থানার দাবি, সূত্র থেকে আগেই খবর পেয়েছিলেন তারা। পরে ওই গাড়ি থেকে চিৎকারের আওয়াজ পেতে তা থামিয়ে চিকিৎসককে উদ্ধার করা হয়।

যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বজরুল বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসক আমাদের রোগীকে রাত থেকে দেখেননি। না দেখেই উনি রেফার করলেন কি করে?’’ চিকিৎসককে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা মেনে নিয়ে তাঁর যুক্তি, ‘‘যা খুশি তাই করবে, আর ওই চিকিৎসককে আমরা ছেড়ে দেব নাকি!’’

মৃন্ময়বাবু যদিও দাবি, ১২ ঘণ্টা পেরনোর পরেও প্রসব যন্ত্রণা ঠিকমতো না উঠলে তাঁকে ‘প্রোলং লেবার’ বলা হয়। রোগীর যা অবস্থা ছিল তাতে প্রসব করানো যেত না। প্রসব হলেও শিশুর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারত। পরিকাঠামো না থাকায় কাটোয়ায় রেফার করা হয় বলে তাঁর দাবি।

টিএমসিপি-র জেলা সহ-সভাপতি শেখ সুলেমান বলেন, ‘‘বিষয়টি তাঁর জানা নেই। ওই ছাত্র নেতা ডাক্তারকে নিগ্রহ, মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকলে সংগঠন পাশে থাকবে না।’’ আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয় বলেও তাঁর সতর্কবার্তা।

ঘটনার পরে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা। ব্লক স্বাস্থ্য অধিকর্তারও ক্ষোভ, কর্মরত চিকিৎককে যদি এ ভাবে হেনস্থা করা হয় তাহলে কি ভরসায় চিকিৎসা চলবে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কবিতা শাসমল।

কাটোয়া Katoa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy