Advertisement
০১ মে ২০২৪

‘গলদ’ পরিকল্পনায়, ফাঁকাই পড়ে ট্যাক্সিস্ট্যান্ড

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বতন জামুড়িয়া পুরসভা ২০ লক্ষ টাকায় এই স্ট্যান্ড নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে এমন অবস্থার জন্য বিভিন্ন গাড়ির চালক, মালিকেরা পরিকাঠামোগত অভাবকে দায়ী করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রথমে এই জায়গাটিকে বাস টার্মিনাস হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল

অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ট্যাক্সিস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র

অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ট্যাক্সিস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:২০
Share: Save:

বাজার এলাকাকে যানজট মুক্ত করতে ১৩ বছর আগে বাইপাস তৈরি করা হয়েছিল। তার পাশে গড়ে তোলা হয় ট্রাক টার্মিনাস। কিছু দিনের মধ্যেই তা পরিণত হয় ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে। কিন্তু সেই পরিবর্তনও কাজে আসেনি বলে। অবহেলায় পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে জামুড়িয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ড।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বতন জামুড়িয়া পুরসভা ২০ লক্ষ টাকায় এই স্ট্যান্ড নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে এমন অবস্থার জন্য বিভিন্ন গাড়ির চালক, মালিকেরা পরিকাঠামোগত অভাবকে দায়ী করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রথমে এই জায়গাটিকে বাস টার্মিনাস হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল। আসানসোল মিনিবাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায়ও বলেন, ‘‘বাস টার্মিনাস তৈরি হলেও সেখানে যাত্রীরা যেতে চান না। কারণ, জামুড়িয়া থানা মোড়ই শহরের প্রধান বাসস্ট্যান্ড। আর এই থানা মোড় থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া-আসা অনেক সহজ হয়। টার্মিনাসে নেমে সেখান থেকে যাত্রীদের ফের অন্য গাড়ি ধরে থানা মোড় আসতে হয়। যাত্রীরা বাইপাসের স্ট্যান্ডে যেতে না চাওয়ায় ওই স্ট্যান্ড ছুঁয়ে আবার থানা মোড় পর্যন্ত যেতে বাধ্য হয় চালকদের।’’ তিনি জানান, দু’দিকের এই হয়রানির জন্য বাইপাসের ধারে তৈরি হওয়া স্ট্যান্ডে বাস নিয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকেরা।

যদিও পূর্বতন জামুড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান তাপস কবি বলেন, ‘‘শহরকে যানজট মুক্ত করতে বাইপাসের ধারে ট্রাক টার্মিনাস তৈরি করা হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, শহরে কোনও ট্রাক ঢুকবে না। মাল ওঠানো-নামানো সব এখানেই করতে হবে।’’ কিন্তু পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে, এই অভিযোগে ট্রাক মালিকেরাও সেখানে যেতে চাননি। এর পরেই সেটিকে ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে পরিণত করা হয়। কিন্তু এই পরিকল্পনাও সাফল হয়নি।

বর্তমানে সেখানে শ’দেড়েক ট্যাক্সি দাঁড়ায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্ট্যান্ডে ঢোকার মূল গেটের একদিক ভেঙে গিয়েছে। যাত্রী ও চালকদের কথা মাথায় রেখে শৌচাগার তৈরি করা হলেও মাস খানেক পরেই তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই গাড়ির চালক ও কর্মীরা স্ট্যান্ড লাগোয়া জলাশয়ের ধারে শৌচকর্ম করেন। একটি ছোট প্রতীক্ষালয় আছে। সেখানে ১০ জনের বেশি বসতে পারেন না। ট্যাক্সি চালকেরা জানান, বৃষ্টি বা গরমের দিন গাড়ির ভিতরেই বসে থাকতে হয়। স্ট্যান্ডের সামনের দিকে থাকা ১০টি বাতি জ্বলে না। ফলে, সন্ধ্যা নামলেই সেখানে যাত্রীরা আর আসতে চান না। একজন নিরাপত্তারক্ষী আছে। কিন্তু তিনিও নিয়মিত আসেন না। তার জেরে অনেকে ট্যাক্সি সেখানে রাখেন না। বাড়ির সামনে গ্যারাজে রাখেন। স্ট্যান্ড চত্বরে পিচের আস্তরণ দেওয়া ছিল। সংস্কারের অভাবে তা উঠে গিয়েছে। ফলে, বর্ষায় গোটা চত্বর কাদা হয়ে যায়। ন্ডে দাঁড়াতে অসুবিধা হয় বলে জানিয়েছেন ট্যাক্সি চালকেরা।

নিত্যযাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই স্ট্যান্ডের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি। বার বার এ বিষয়ে আবেদন জানিয়েও সুফল মেলেনি। জামুড়িয়া বণিক সংগঠনের সম্পাদক অজয় খেতান জানান, বাস না যাওয়ায় ট্রাক টার্মিনাস চালু করা হয়। কিন্তু পরিকাঠামোগত অসুবিধার জন্য ট্রাক চালকেরাও সেখানে যান না। কয়েকটি ট্রাক গ্যারাজ হিসাবে সেটিকে ব্যবহার করে। এ বিষয়ে আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘শ্রীঘ্রই পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Taxi Stand Bypass
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE