E-Paper

চার বছরের মধ্যে আক্রান্ত সর্বাধিক

অক্টোবরে ডেঙ্গির মতিগতি দেখে চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ছাপিয়ে দেড় হাজারের গণ্ডি পেরোবে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:০৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মাঝে কিছু সময় রান ছিল না ডেঙ্গির ব্যাটে। এ বছর ঝোড়ো ইনিংস খেলছে সে। বছরের ৫১ তম সপ্তাহ শেষে, বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমানে ডেঙ্গির স্কোরবোর্ডের পাশে লেখা ১৮১৯।

তথ্য বলছে, এ বছর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি পূর্বস্থলী ১ ব্লকে (২৫৫)। তার পরেই রয়েছে পূর্বস্থলী ২ (২২৫)। তার পরেই রয়েছে কালনা ১ (১৯৬), বর্ধমান শহর (১৫৯) এবং কালনা ২ (১৩৫)।

গত বছর জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৮৬২ জন। ২০২১-এ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৯। তার আগের বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৫৩। এ বার ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ল কী কারণে? স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, এ বার পরীক্ষা বেশি হয়েছে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে রিপোর্টে।

অক্টোবরে ডেঙ্গির মতিগতি দেখে চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা ছিল, এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা সব রেকর্ড ছাপিয়ে দেড় হাজারের গণ্ডি পেরোবে। স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, শুধু গ্রামীণ এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬০২ জন। কালনা মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭৮। এই মহকুমায় মন্তেশ্বরের পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। এই ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭। রিপোর্ট বলছে, বর্ধমান উত্তর মহকুমায় ২৯৭ জন, বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমায় ২৫৮ জন, কাটোয়া মহকুমায় ১৬৯ জন ডেঙ্গি-আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে এখনও পর্যন্ত।

জেলার ছ’টি পুরসভায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২১৭ জন। তাঁদের মধ্যে বর্ধমান পুর এলাকায় ১৫৯ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছে। কালনা ও কাটোয়া শহরে আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ১৯ এবং ১৮ জন। মেমারি ও দাঁইহাটে আক্রান্ত হয়েছেন আট জন করে। গুসকরা শহরে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, অক্টোবরেই ৫১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। নভেম্বরে হয়েছেন ৪৬০ জন। চলতি মাসে ১০৩ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও উদ্বেগ কাটেনি। এই সময় বৃষ্টি হলে ফের ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। ডেঙ্গির প্রকোপ রয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় বৃষ্টির পরে জল জমলে মশার বংশ বিস্তার হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায়ের বক্তব্য, “এ সপ্তাহে এক ধাক্কায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। তবে আমরা চুপ করে বসে থাকছি না। ডেঙ্গি আটকানোর সব চেষ্টা জারি থাকছে।” পূর্বস্থলী ২-এর বিডিও-র সঙ্গে বিশ্বনাথ ও জনস্বাস্থ্য আধিকারিক তুহিন হাজরা বৈঠক করেছেন। ব্লকের বিভিন্ন বাজার ঘুরে জমে থাকা জল ও আবর্জনা সরানো হয়েছে। বাজারে জল জমিয়ে রাখা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman Dengue

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy