Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Panchayat Head

জেলার মাথায় শ্যামাপ্রসন্ন, সহ-সভাধিপতি পদে গার্গী

সোমবার দুপুরে বর্ধমানের অ্যানেক্স হলে ওই দু’জনকে শপথবাক্য পাঠ করান জেলাশাসক তথা জেলা পরিষদের নির্বাহী আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা সিংলা।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাছাইয়ের পরে বর্ধমানের কার্জন গেটে সভা।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাছাইয়ের পরে বর্ধমানের কার্জন গেটে সভা। ছবি: উদিত সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৪২
Share: Save:

বেশ কিছু দিন আগে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস দলীয় আড্ডায় শ্যামাপ্রসন্ন লোহার কলকাতার যোগেশচন্দ্র ল’কলেজে এসএফআইয়ের বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করেছিলেন এবং সবচেয়ে বেশি ভোটে জিতেছিলেন সেই গল্প করেছিলেন। সেই শ্যামাপ্রসন্নকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি করল তৃণমূল। আর দেবু টুডুকে সরিয়ে দিয়ে সহ-সভাধিপতি হয়েছেন জেলা পরিষদের বর্ধমান ১ ব্লকের আসন থেকে টানা তিন বার জয়ী, প্রাক্তন জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ গার্গী নাহা।

জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বই জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি বেছেছেন।’’

সোমবার দুপুরে বর্ধমানের অ্যানেক্স হলে ওই দু’জনকে শপথবাক্য পাঠ করান জেলাশাসক তথা জেলা পরিষদের নির্বাহী আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা সিংলা। সভায় হাজির ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কাজল রায়। সভা শেষে শোভাযাত্রা করে নির্বাচিত সদস্যেরা কার্জন গেটের কাছে যান। সেখানে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

ওই অনুষ্ঠানে রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘মিলিত ভাবে জেলা পরিষদ চালাতে হবে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ অনেক পুরষ্কার পেয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জেলাকে এক নম্বরে নিয়ে যেতে হবে।’’ তবে অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি বিদায়ী সভাধিপতি তথা বিধায়ক শম্পা ধাড়াকে।

গত ৮ জুলাই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের পর থেকেই জেলা পরিষদ কার হাতে যাবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। বেশ কয়েক জনের নাম নিয়ে আলোচনা হয়। গত সপ্তাহে ঠিক হয়, শম্পা নন সভাধিপতি হবেন অন্য কেউ। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বিধায়কদের একটা অংশ তো বটেই প্রশাসনিক স্তরেও শম্পার বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে বলে ভোট কুশলী সংস্থা জানতে পারে। অভিজ্ঞ ও শিক্ষিত কাউকে সভাধিপতি করার সিদ্ধান্ত হয়। মঙ্গলকোটের শ্যামাপ্রসন্ন ও কাটোয়ার এক জনের নাম নিয়ে চর্চা হয়। বেশি সমর্থন পান শ্যামাপ্রসন্নই।

মঙ্গলকোটের পালিশগ্রামের বাসিন্দা শ্যামাপ্রসন্নর মা আশালতাদেবী বাম আমলে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। আইন নিয়ে পড়ার সময় ২০০৭ সালে যোগেশচন্দ্র ল'কলেজে টিএমসিপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শ্যামা। পরের পাঁচ বছর নির্বাচিত সদস্য হন। টিএমসিপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। এ ছাড়াও তফসিলি, জনজাতি, অনগ্রসর শ্রেণিদের জন্য দলের সংগঠনে তিনি পদ সামলাছেন। ২০১৮ সাল থেকে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষও ছিলেন। এ দিন শ্যামাপ্রসন্ন বলেন, ‘‘দল যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালন করার চেষ্টা করব।’’ এর আগে মঙ্গলকোট থেকে জিতে ১৯৯৫ সালে অবিভক্ত জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়েছিলেন সিপিএম নেতা, প্রয়াত নিখিলানন্দ সর।

তৃণমূলের একটা অংশের দাবি, সভাধিপতি পদের দায়িত্ব এক জন পুরুষ পাওয়ায়, ভারসাম্য রাখতে প্রাক্তন জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ গার্গীর চেয়ে উপযুক্ত কেউ ছিলেন না। টানা তিনবারের জেলা পরিষদ সদস্য, সমাজতত্ত্বে স্নাতকোত্তর, বিএড পাশ গার্গীকে দল ওই পদে বেছে নিয়েছে। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘দল অভিজ্ঞ ও শিক্ষিত মুখকেই জেলা পরিষদে আনতে চাইছে।’’

শ্যামাপ্রসন্ন সভাধিপতি হওয়ায় মঙ্গলকোটে খুশির হাওয়া। স্থানীয় শিক্ষক প্রসেনজিৎ গুপ্ত, ব্যবসায়ী অরিন্দম দত্তরা বলেন, ‘‘একজন নির্বিবাদী যুবককে জেলা পরিষদের দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। আশা করি, এলাকায় উন্নয়ন হবে। নিখিলানন্দবাবুর সঙ্গে তুলনাও চলে আসবে।’’ বিধায়ক (মঙ্গলকোট) অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বার মঙ্গলকোটকে সাজানোর পালা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East Bardhaman Aroop Biswas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE