Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Bardhaman Station

ট্রেন বন্ধে ক্ষতি ব্যবসার, বিপাকে চালক-হকারেরা

পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের অত্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের উপর দিয়ে যাওয়া বর্ধমান-কাটোয়া রোডের পুরনো রেলসেতু ভাঙার কাজ চলছে।

বর্ধমান স্টেশনে ভাঙা হচ্ছে ওভারব্রিজ।

বর্ধমান স্টেশনে ভাঙা হচ্ছে ওভারব্রিজ। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৭
Share: Save:

যে স্টেশনে মাঝ দুপুরেও ভিড়ে হাঁটার উপায় থাকে না, হকার, টোটোর গোলমালে চলা দায় হয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে কার্যত খাঁ খাঁ করছে সেই বর্ধমান স্টেশন। স্টেশনকে ঘিরে চলা অর্থনীতিও ধুঁকছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, গত এক মাস ধরে বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন বিভ্রাট চলছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শুরু থেকে বেশ কয়েক দিন ট্রেন চলাচল করেনি। যাত্রীর সংখ্যা কমায় তাঁদের রুজি, রোজগারে টান পড়েছে। এক ধাক্কায় প্রায় ৫০ শতাংশ বিকিকিনি কমে গিয়েছে, দাবি তাঁদের।

পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের অত্যন্ত এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের উপর দিয়ে যাওয়া বর্ধমান-কাটোয়া রোডের পুরনো রেলসেতু ভাঙার কাজ চলছে। তার জন্য কখনও ট্রেন বন্ধ থাকছে, কখনও অনিয়মিত ভাবে চলছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বর্ধমান স্টেশনের উপর দিয়ে কার্যত কোনও ট্রেন চলাচল করেনি। রাজধানী, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সঙ্গে আসানসোল, রামপুরহাট ও কাটোয়া রুটে কয়েকটি লোকাল ট্রেন চলেছে। আরও দু’সপ্তাহ ট্রেন অনিয়মিত থাকবে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, এ দিন হাওড়া-বর্ধমান লাইনের ১৭ জোড়া, কর্ড লাইনের ১৪ জোড়া ট্রেন বাতিল ছিল। বর্ধমান ও শিয়ালদহ থেকে এক জোড়া করে মেমু লোকাল ছাড়াও ৪১ জোড়া এক্সপ্রেস বাতিল ছিল। ফলে, বর্ধমান স্টেশনে হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রীরই দেখা মিলেছে। কেউ ট্রেনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করেছেন। কেউ ফিরে গিয়েছেন। রেলের দাবি, যাত্রীরা যাতে অসুবিধার মধ্যে না পড়েন সে জন্য বহু আগে থেকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সচেতন করা হয়েছে। মেন লাইনের শক্তিগড় আর কর্ড লাইনে মশাগ্রাম থেকে বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ভিড়ও হয়েছে সেই ট্রেনে।

পুরনো রেলসেতু দিয়ে প্রচুর মানুষ বর্ধমান স্টেশনে যাতায়াত করতেন। গত কয়েক বছর ধরে আট নম্বর প্ল্যাটফর্মের বাইরের রাস্তায় অনেক হকার বসেন। ৫০টির মতো টোটো নিয়ে স্ট্যান্ডও গড়ে উঠেছিল। এ দিন সেখানে হাতেগোনা কয়েকজন হকারকে দেখা যায়। টোটো ছিল চার-পাঁচটি। চালকদের দাবি, এক বেলাতেই ৫০০-৭০০ টাকা রোজগার হত। গত দু’সপ্তাহ ধরে দু’শো টাকাও রোজগার হচ্ছে না। হকার প্রকাশ সাউ, রাজু মালিকদের দাবি, ‘‘বাড়িতে চাল কিনে নিয়ে যাওয়ার মতো রোজগার হচ্ছে না।’’ আট নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বর্ধমান শহরের মূল অংশের যাওয়ার পথে ফুটব্রিজে পা রাখার জায়গা থাকে না। লোক সামলাতে ব্যস্ত সময়ে আরপিএফ থাকে। স্টলগুলিতেও ভাল বিকিকিনি হয়। ওই সব স্টলের মালিকদের দাবি, ‘‘যাত্রী না থাকলে বিক্রি হবে কী করে! খাবার নষ্ট হচ্ছে।’’

স্টেশনে বাইরেও সব সময়ে টোটো দাঁড়িয়ে থাকে। টোটো এড়িয়ে জিটি রোডে যাওয়ার কার্যত উপায় থাকে না। এখন অবশ্য সেই চত্বরও ফাঁকা। টোটো চালকদের দাবি, ‘‘ট্রেন চলছে না। যাত্রীও নেই। টোটো ভাড়া পর্যন্ত উঠছে না। সে জন্যই অনেকে টোটো নামাননি রাস্তায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Station Railway Overbridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE