অগ্নি নির্বাপণের পুরনো সিলিন্ডার।
রাজ্যের নানা প্রান্তের বিভিন্ন ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে হাল কিছুটা ফেরানো হয়েছে। কিন্তু অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে একেবারে আঁটোসাটে করা যায়নি, সে কথা জানেন কর্তারাও। দুর্গাপুর হাসপাতালের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা আরও ঢেলে সাজার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস।
শহরে আরও কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও গড়ে উঠেছে। তাই অন্য মহকুমা হাসপাতালের মতো রোগীর চাপ নেই দুর্গাপুরের হাসপাতালটির উপরে। বারান্দায় রোগী শুয়ে থাকার মতো ছবি এখানে দেখা যায় না। গত কয়েক বছরে পরিকাঠামোর উন্নতিও হয়েছে অনেকটা। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাও আগের তুলনায় ভাল হয়েছে। তবে বেশ কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে এখনও, যা থেকে বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আগে হাসপাতালের প্রধান ফটকে বালি ভর্তি বালতি রাখার রেওয়াজ ছিল। তা আগেই উঠে গিয়েছে। হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, অপারেশন থিয়েটারে নতুন অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার আছে। কিন্তু প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, ইন্ডোরে ঢোকার মুখে যে সিলিন্ডার রয়েছে তার সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে ২০১৩ সালে। বিভিন্ন ভবনে বড় আকারের স্যুইচ বোর্ড, যেখান থেকে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে সেখানে সিলিন্ডার রাখাই নিয়ম। কারণ, স্যুইচ বোর্ড থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু হাসপাতাল ঘুরে দেখা গিয়েছে, তা নেই। হাতের কাছে সিলিন্ডার থাকলে আগুন সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
এই হাল জেনারেটর ঘরে। নিজস্ব চিত্র।
তবে সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি হাসপাতালের ডিজেল জেনারেটর রাখার একটি ঘরে। সেখানে একটি পুরনো ৫০ কেভিএ জেনারেটর আছে। ঘরের মেঝেতে একটি মাত্র সিলিন্ডার আছে। কিন্তু তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি হাসপাতাল কর্মীদেরই একাংশের। আরও একটি সিলিন্ডার আছে। তবে তা এত পুরনো যে আদৌ আর কাজ করবে কি না সংশয় রয়েছে। কর্মীদের মতে, সেটি দেড় দশকেরও বেশি পুরনো। মাথার উপরে জেনারেটরের ডিজেল ট্যাঙ্ক। অথচ, তার পাশেই হিটার জ্বালিয়ে রান্না হয়। ফলে, যে কোনও সময় বড়সড় অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পাশে একটি ঘরে নতুন ৬৩ কেভিএ জেনারেটর রয়েছে। সে ঘরে একটিও সিলিন্ডার নজরে পড়েনি। সব মিলিয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের পরিস্থিতি বিপদের সম্ভাবনার ঊর্ধ্বে নয়।
রোগীদের পরিজনেরা দাবি করেন, যদি কখনও আগুন লাগে, বিশেষ করে গভীর রাতে, সেক্ষেত্রে হাতের কাছে উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকলে রোগী বা তাঁদের পরিজনেরাই প্রাথমিক ভাবে নেভানোর চেষ্টা করতে পারেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বেশ কিছু নতুন সিলিন্ডার লাগানো হয়েছে। সপ্তাহখানেক আগে এসেছে অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্য সরকারি তরফে নির্দেশিকা। সুপার দেবব্রতবাবু জানান, ইতিমধ্যে দমকল বিভাগকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা জানাতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy